ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীনগরে পরিত্যক্ত ভবনে চলছে পাঠদান

প্রকাশিত: ১২:০০, ৩০ এপ্রিল ২০১৯

শ্রীনগরে পরিত্যক্ত ভবনে চলছে পাঠদান

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শ্রীনগরে একটি বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এতে করে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কক্ষে আতঙ্কে থেকে পাঠদান গ্রহণ করছেন। উপজেলার সদারামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ৬ বছর আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনেই চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়নের ১৯নং সদারামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ৩টি কক্ষই পরিত্যক্ত ঘোষণা করে লাল রংয়ের ফিতা টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়েছে। শ্রেণী কক্ষের দেয়াল ও ছাদের ভিমগুলো থেকে পলেস্তরা খসে গিয়ে রড বেরিয়ে এসেছে। শিক্ষার্থীদের মাথার ওপরেই রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ পলেস্তরা। যেকোন সময় তা ধসে পরে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও ভবনের ফ্লোরের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে আরও ভয়ঙ্কর অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ভবনটি। প্রবল বৃষ্টির মধ্যে ভবনটি যেকোন সময়ে ধসে পরতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৩১৯ জন, বর্তমান শিক্ষক ৬ জন ও ২টি পদে শিক্ষক শূন্য রয়েছে। এ সময় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানান, শ্রেণী কক্ষে পাঠদানের সময় আতঙ্কে থাকি। কখন যে ভবনের ছাদ ভেঙ্গে পরে। বৃষ্টির দিনে ভয়ে বাধ্য হয়েই অনেকে স্কুলে আসিনা। সহকারী শিক্ষক সুভাগ্য চন্দ্র ম-ল বলেন, এ পর্যন্ত একাধিকবার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লিখিত আবেদনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এতে করে ভবনটি কয়েক বছর পূর্বে পরিত্যক্ত ঘোষণাও করা হয়েছে। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সয়েল টেস্ট করা হয়েছিল বলে তিনি জানান। সদারামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ মাসুদ পারভেজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা দেয়ার পরে একাধিকবার উপজেলা শিক্ষা অফিস ও ইউএনও অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে শিক্ষা অফিসারকে উপস্থিত পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জরাজীর্ণ ভবনটির বিষয়ে ডিসি স্যারের সঙ্গে আলোচনা করব। আপাতত অস্থায়ীভাবে পাঠদানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নতুন ভবন নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। শেরপুর নিজস্ব সংবাদদাতা শেরপুর থেকে জানান, ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী পশ্চিম বাকাকুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। কর্তৃপক্ষ বিষয়টির প্রতি নজর না দেয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়েও ভীতিকর অবস্থায় ক্লাস করছে। এতে যে কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই বিদ্যালয়টির ভবন নির্মিত হয় ১৯৯৪ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের আওতায়। কিন্তু নিম্নমানের কাজের কারণে ভবনটির বিভিন্ন অংশে বেশ আগেই দেখা দিয়েছে ফাটল। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুয়ে পানি পড়ে শিক্ষার্থীদের বই-পুস্তক, কাপড়-চোপড় ভিজে যায়। এছাড়া মাঝে-মধ্যেই ছাদের প্লাস্টার ভেঙ্গে পড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর। এতে ভীতিকর অবস্থায় বিদ্যালয়ের ১৪০ শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে ক্লাস করলেও সুষ্ঠু পাঠদান কার্য ব্যাহত হচ্ছে। এরপরও বিদ্যালয়ে রয়েছে আসবাবপত্র সঙ্কট, বাউন্ডারি ওয়ালসহ নানা সমস্যা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হওয়ার পরও কোন নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি। বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাসিম মিয়া, আঞ্জুয়ারা, সজিব মিয়াসহ অন্যরা জানায়, বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় ভীতির মাঝেই তাদেরকে ক্লাস করতে হচ্ছে।
×