ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে বটতলার দুই নাটকের প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৮:২১, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

 বরিশালে বটতলার দুই নাটকের প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার অন্যতম জনপ্রিয় নাট্য সংগঠন বটতলা বরিশালে দুটি নাটকের মঞ্চায়ন করেছে। চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বরিশাল জেলা শাখার আয়োজনে স্থানীয় শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ মিলনায়তনে দুটি নাটকের মঞ্চায়ন হয়। এরমধ্যে গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার বটতলার নন্দিত প্রযোজনা ‘ক্রাচের কর্নেল’ এবং গত ২৭ এপ্রিল শনিবার দলের ‘খনা’ নাটকের মঞ্চায়ন হয়। শাহাদুজ্জামানের উপন্যাস থেকে ‘ক্রাচের কর্নেল’ নাট্যরূপ দিয়েছেন সৌম্য সরকার ও সামিনা লুৎফা নিত্রা। নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার। ‘ক্রাচের কর্নেল’ বটতলার নবম প্রযোজনা। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ইমরান খান মুন্না, কাজী রোকসানা রুমা, সামিনা লুৎফা নিত্রা, তৌফিক হাসান ভুঁইয়া, পঙ্কজ মজুমদার, ইভান রিয়াজ, ম. সাঈদ, মনজুরুল ইসলাম রনি, গোলাম মাহবুব মাসুম, নাফিউল ইসলাম। নাটকের নেপথ্যে সহকারী নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনা ইমরান খান মুন্না, পোশাক পরিকল্পনা হুমায়রা আক্তার, কোরিওগ্রাফি সামিনা লুৎফা নিত্রা, আলোক পরিকল্পনা খালিদ মাহমুদ সেজান, আলোক প্রক্ষেপণ এটিএম মহিবুল্লাহ, দ্রব্যসামগ্রী পরিকল্পনা ম. সাঈদ, আবহসঙ্গীত পিন্টু ঘোষ, আবহসঙ্গীত নিয়ন্ত্রণ শাগুফতা সারি, পোস্টার ডিজাইন জাহেদুল হক রনি, প্রযোজনা তত্ত্বাবধান তৌফিক হাসান ভুঁইয়া, মঞ্চ ব্যবস্থাপক মনজুরুল ইসলাম রনি, রূপসজ্জা আব্দুল কাদের। অন্যদিকে বটতলার ‘খনা’ নাটকটি রচনা করেছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা। নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে নিয়মিত অভিনয় করেন সামিনা লুৎফা নিত্রা, ইমরান খান মুন্না, কাজী রোকসানা রুমা, ইভান রিয়াজ, তৌফিক হাসান, শেউতি শাগুফতা, মিজানুর রহমান, সুমিত তেওয়ারি রানা, ম. সাঈদ, পঙ্কজ মজুমদার, হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, হুমায়ূন আজম রেওয়াজ, নাফিউল ইসলাম, হাফিজা আক্তার ঝুমা। ‘খনা’ নাটকে সুর ও সঙ্গীতে আছেন শারমিন ইতি, হুমায়ূন আজম রেওয়াজ, শেউতি শাগুফতা, লোচন পলাশ, ‘খনা’ নাটকের নেপথ্যে মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনা আবু আউদ আশরাফী, সুর ও সঙ্গীত পরিকল্পনায় ব্রাত্য আমিন, শারমিন ইতি ও জিয়াউল আবেদীন রাখাল, পোশাক পরিকল্পনা তাহমিনা সুলতানা মৌ ও তৌফিক হাসান ভুঁইয়া, কোরিওগ্রাফি মোহাম্মদ রাফি ও নাসির উদ্দিন নাদিম, প্রপস্ হুমায়রা আখতার, পোস্টার তৌহিন হাসান। ‘খনা’ কাহিনীতে দেখা যায় এক বিদুষী ‘খনা’ যার অন্য নাম লীলাবতী। তার গল্পটা অনেক পুরনো, কিংবদন্তির ঘেরাটোপে বন্দী। তবু যেটুকুর তল খুঁজে পাওয়া যায় তাতে বোধ হয় যে তিনি এক বিদুষী জ্যোতিষী, স্বামী মিহিরও একই বৃত্তিধারী। শ্বশুর যশস্বী জ্যোতিষী বরাহ মিহির। পুত্রজায়ার যশ, খ্যাতি ও বিদ্যার প্রভাব দর্শনে বরাহের হীনমন্যতা ও ঈর্ষা। শ্বশুরের নির্দেশে লীলাবতীর জিহ্বা কর্তন ও তার ‘খনা’ হয়ে ওঠার গল্প পেরিয়েছে প্রজন্মের সীমানা। খনার বচনের মাঝে টিকে থাকা শত বছরের আগের জল, মাটি, ফসল আর মানুষের গন্ধ মাখা জ্ঞান আর সত্যটুকু কি সত্যি লীলাবতীর? নাকি এ সত্য-তথ্য সবই এ ভূ-খণ্ডের বৃষ্টি, পলি, আর জল হাওয়ার সঙ্গে মিশে থাকা যুগান্তরের সামষ্টিক জ্ঞানের সঙ্কলন? লীলাবতী শুধুই কি একজন নারী বলে তার পরিণতি নির্মম, নাকি তিনি নারী হয়ে মিশেছিলেন চাষাভুষোর সনে, সেই তার কাল? পুরুষতন্ত্র না শ্রেণী কাঠামো, নাকি উভয় দাঁড়ায় লীলাবতীর বিপ্রতীপে? মিহির বা প্রাকৃত লোকালয় কারোর পরোয়া না করা জীবন ত্যাগী নেশার ঘোর তাকে নিয়ে যায় দিগন্তের ওপার। খনার সত্য শুধু থেকে যায় কৃষকের মুখে। তবু প্রশ্ন থাকে, খনার সত্যই কি একক সত্য? নাকি আজকে নির্ভুল যা কাল তা হতে পারে অসত্য? শুধু সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর যে মৃত্যুনেশা তার সে নেশা কি এক রোখা জেদ? খনা নিজেই নিজেকে সম্মুখীন প্রশ্ন করেন।
×