ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজ প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে ঐক্যফ্রন্ট সিপিবি ছাড়া সব দলই যাচ্ছে

প্রকাশিত: ১০:২৭, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

  আজ প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে ঐক্যফ্রন্ট সিপিবি  ছাড়া সব দলই যাচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর আজ শনিবার ফের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মুখোমুখি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈরিতা কিংবা বিভেদ নয়, ঐক্যের ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় দেশকে এগিয়ে নিতেই আজ বিভিন্ন দলকে চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়ের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ বিকেল সাড়ে তিনটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনের সবুজ লনে হবে এ চা-চক্র। তবে অতীতের নেতিবাচক রাজনীতির ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপক ভরাডুবি হওয়া রাজনৈতিক দল বিএনপি। ড. কামালদের নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তোলা বিএনপি ও তাদের জোট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে সাড়া না দিয়ে চিঠি দিয়ে চা-চক্রের না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট চা-চক্রের আমন্ত্রণ গ্রহণ না করলেও নির্বাচনের পূর্বে সংলাপে অংশ নেয়া ৭৫ রাজনৈতিক দলের বেশিরভাগই আজ গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বলে জানা গেছে। বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এমন নেতিবাচক সিদ্ধান্ত বিশ্লেষকরা ভাল চোখে দেখছেন না। এমনকি জোটের অনেক নেতাও বিষয়টিকে ভালভাবে নেয়নি। এ অংশের মতে, বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট পুনর্নির্বাচনসহ যেসব দাবিই করুক না কেন, প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে অংশ নিয়ে তা সেখানেই স্পষ্ট করে বলতে পারতেন নেতারা। এতে রাজনৈতিকভাবে খাদের কিনারে থাকা ঐক্যফ্রন্টের একটি ইস্যুও অন্তত হাতে পাওয়ার সুযোগ থাকত। তখন তারা বলতে পারতেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচন ঐক্যফ্রন্ট যে মেনে নেননি, তা প্রধানমন্ত্রীকে তারা জানিয়ে দিয়েছেন। এ ইস্যুতে তখন হতাশাগ্রস্ত ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের জানিয়ে কিছুটা হলেও তাদের উজ্জীবিত রাখতে পারতেন। প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্র প্রত্যাখ্যানের পর সরকার যদি এখন হার্ডলাইনে অবস্থান নেয়, তবে দেশের কোথাও আগামীতে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের মাথা তুলে দাঁড়ানোই কঠিন হবে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শুক্রবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে চা-চক্রের আয়োজন করেছেন, সেখানে যোগ দিয়ে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টসহ অন্য দলের নেতারা সরকারপ্রধানের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করতে পারতেন। প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রের আহ্বান বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট বর্জন করলে এটি তাদের অতীত নেতিবাচক রাজনৈতিক ধারারই বহির্প্রকাশ। তারা যে ইতিবাচক রাজনীতি নয়, নেতিবাচক রাজনীতিতেই বিশ্বাসী তা আবারও প্রমাণ হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আজ শনিবার বিকেলে এই চা-চক্রের আয়োজন করেছেন। সেখানে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এই চা-চক্রের মূল উদ্দেশ্যে হলো দেশকে এগিয়ে নিতে কীভাবে সবাই মিলে একযোগে আরও কাজ করা যায়- সেসব বিষয় নিয়ে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা। এ ছাড়া দেশে যে নির্বাচনী পরবর্তী শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক যে রাজনৈতিক পরিবেশ বিরাজ করছে, সরকার একক নয় সবাইকে নিয়েই দেশকে গড়ে তুলতে চান- সেটির একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে আসা। এমন ইতিবাচক রাজনৈতিক অবস্থান থেকেই আওয়ামী লীগের প্রথম দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় নির্বাচনপূর্ব যে ৭৫ দলের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে ছিলেন, তাদের সবাইকে গণভবনে পুনরায় চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেশ পরিচালনায় সহযোগিতা চাওয়ার মনোভাব ব্যক্ত করেন। এমন মনোভাবের পরই গত ২৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ ওই ৭৫টি দলকেই গণভবনে চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং হাতেগোনা কয়েকটি ছোট বাম দল মিলিয়ে গড়ে ওঠা বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা ছাড়া বাকি সব দলই আজ গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্র ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আদর্শিক রাজনৈতিক দল ১৪ দল ভুক্ত সব দল, প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারাসহ যুক্তফ্রন্ট, জাতীয় পার্টি (জেপি), ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় জোট-বিএনএ, এস এম আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএ)সহ ইতোপূর্বে সংলাপে অংশ নেয়া বিভিন্ন ইসলামিক ও বাম দল ও জোটের নেতারা আজ গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে যোগ দিচ্ছেন। নির্বাচন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর এই শুভেচ্ছা বিনিময়ের খবর প্রকাশ হওয়ার পর প্রথম দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনসহ অন্যরা ইতিবাচক সাড়া দেন। কিন্তু বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইতিবাচক পদক্ষেপকে দুর্বলতা ভেবে একাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়ের ক্ষেত্রে বেশকিছু অসাংবিধানিক শর্তারোপ করে। কিন্তু পরদিনই আনুষ্ঠানিকভাব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এসব দাবি সরাসরি নাকচ করে দেয়। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্পষ্ট করেই জানান, প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপ নয়, চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এখানে নির্বাচন কিংবা অন্য কোন অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক বিষয়ে আলোচনার ন্যূনতম সুযোগ নেয়। দু’পক্ষের এমন পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের মধ্যেই গত ২৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে সংলাপে অংশ নেয়া ৭৫টি দলের নেতাদের কাছে শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানান। নির্বাচনের আগে সংলাপে অংশ নেয়া ৭৫টি রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতারা এই চিঠি পান। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, বিকল্প ধারাসহ যুক্তফ্রন্ট, বিএনএ এবং বিএনএফ ছাড়াও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সব সদস্য এবং বাম গণতান্ত্রিক জোটভুক্ত আটটি দলের ১৬ নেতাকে চা-চক্রে অংশ নিতে পৃথকভাবে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর চিঠিতে বলা হয়েছিল- ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি আগামী ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টায় গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রে আপনাকে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন।’ রেকর্ড সংখ্যক টানা তৃতীয়বার মিলিয়ে সর্বমোট চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া শেখ হাসিনা এবার সরকার গঠন করার দিন থেকেই সবাইকে নিয়ে দেশকে আরও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান, তা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন। আমন্ত্রণপত্র পাঠানোর আগের দিন ২৫ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণেও জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদাত্ত আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে এখন আমাদের প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের ঐক্যের যোগসূত্র হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা, গণতান্ত্রিক মূল্যেবোধ, সাম্য ও ন্যায়বিচার এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতি। এমনকি নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের বিশাল বিজয়োৎসবের সমাবেশেও প্রধানমন্ত্রী বারবার ঐক্যের কথা বলেছেন। সেখান থেকে তিনি বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ী সংসদ সদস্যদের শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সংখ্যায় যতই কম হোক, আমরা সবাইকে সমান চোখে দেখব। সবার মূল্যবান পরামর্শ ও সমালোচনা গ্রহণ করেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। বিজয়ের পর আমরা সরকার গঠন করেছি। সরকারের দৃষ্টিতে দলমত নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিক সমান। আমরা সবার জন্য কাজ করব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এমন উদারতা ও ইতিবাচক রাজনৈতিক পদক্ষেপকে গ্রহণ না করে বরং অতীতের নেতিবাচক রাজনীতির ধারা থেকে বের বিএনপি বের হতে পারেনি বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগসহ মহাজোটের নেতারা। প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্র প্রত্যাখ্যান করে শুক্রবার সকালে গণভবনে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে চিঠি নিয়ে যান জোটের তিন প্রতিনিধি। আনুষ্ঠানিক দাওয়াতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রের আমন্ত্রণ অন্যতম এজেন্ডাই হিসেবে আলোচিত হয়েছে। কমিটি এই চা চক্রে অংশ না নেয়ার ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে’। চিঠিতে তারা জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। অন্যদিকে বাম জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ শাহ আলম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণের চিঠি পাওয়ার পরদিনই তারা জোটের বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, চা-চক্রে যাবেন না তাঁরা। বিএনপি তথা যুক্তফ্রন্টের এমন সিদ্ধান্তের কঠোর সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং দেশকে সবদিক দিক থেকে এগিয়ে নিতেই প্রধানমন্ত্রী চান সব দলকে কাছে নিয়ে ও সবার সহযোগিতা নিয়েই এগিয়ে যেতে। বিএনপি-জামায়াতের মতো প্রতিহিংসা রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিশ্বাস করেন না, সবার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের এমন সিদ্ধান্ত জানিয়ে আবারও তা তিনি প্রমাণ করেছেন। তাই সংঘাত-সংঘর্ষের রাজনীতির পথ পরিহার বিএনপিসহ সবার উচিত প্রধানমন্ত্রীর এমন উদার উদ্যোগে সাড়া দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া। শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান হলেও সেখানে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের অনেক কথায় প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে পারবেন। ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিম স্পষ্ট করে জানান, ১৪ দলের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে অংশ নেবেন। বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে। দেশের মানুষ জ্বালাও-পোড়াও-অগ্নিসন্ত্রাসের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করে উন্নয়ন-সমৃদ্ধি ও সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-মাদকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রধান নেত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রেখে নৌকার পক্ষে গণরায় দিয়েছে। সারাবিশ্ব এ নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই এ নির্বাচন নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।
×