ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২৫ বছর বটগাছ তলায় ক্ষৌরকর্ম করেন রহিম

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

 ২৫ বছর বটগাছ তলায় ক্ষৌরকর্ম করেন রহিম

হাট-বাজার রাস্তার পাশে বা গাছতলায় বসে ক্ষৌরকর্ম করত নরসুন্দর বা নাপিতরা। এই নাপিতদের অনেক এলাকায় শীলও বলা হয়। আধুনিক সেলুনের ভিড়ে তেমন একটা দেখা মেলে না এদের। গাছতলা থেকে অর্থের অভাবে সেলুনের ব্যবস্থা করতে পারেনি অনেকেই। তার পরও বহু বছরের পুরনো পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন। এদের মধ্যে একজন হলো আব্দুর রহিম (৫০)। বাড়ি নান্দাইল উপজেলার চন্ডিপাশা মহল্লায়। রহিমের স্ত্রী, চার পুত্র, দুই কন্যাসহ আটজনের সংসার। নান্দাইল নতুন বাজার এলাকায় শতবর্ষী একটি বট গাছের নিচে বসেন তিনি। সেখানেই তিনি চুল দাড়ি কামানোর প্রথাকে আঁকড়ে ধরে রুটি-রুজির সন্ধানে ব্যস্ত সময় পার করেন। এখান থেকে চুল-দাড়ি কামিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে চলে সংসার। চ-ীপাশার নতুন বাজার এলাকায় সেই বটগাছের নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। এ সময় আব্দুর রহিম বলেন, অর্থের অভাবে আমি সেলুন দিতে পারিনি। তাই আজও বটগাছের নিচে বসে আপন মনে চুল-দাড়ি কামাই। শিশু এবং বয়স্ক লোকজনেই তার কাছে চুল দাড়ি কামাতে আসেন। যুব সম্প্রদায়ের কেউ পিড়ি বা ইটে বসে চুল দাড়ি কামাতে সঙ্কোচ বোধ করে। এ জন্য তারা সেলুনে চলে যায়। যারা টাকার ভয় করে সেই মানুষগুলো চুল-দাড়ি কামানোর জন্য তার কাছে আসে। আলাপচারিতায় আব্দুর রহিম আরও বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই ক্ষুর, কেচি নিয়ে বাবার হাত ধরে এ পেশায় নেমে পড়েছি। গত ২৫ বছর ধরে এই বটগাছের নিচে চুল-দাড়ি কাটি। আমার পিতা আছর আলী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নান্দাইল মোরগ মহল এলাকায় এই কাজই করে গেছেন। তাই পিতার পেশাকে সম্মান দেখাতে আমিও শেষ জীবনটা এভাবেই কাটাতে চাই। চুল কাটতে আসা পৌরসভার দশালিয়া মহল্লার মজিবুর মিয়া (৫৫) বলেন, রহিমের পিঁড়ায় বসে চুল-দাড়ি কামাই দীর্ঘদিন ধরে। আর এ জন্য সেলুনে যাওয়া হয় না। চন্ডীপাশা এলাকার ওয়াদুদ মিয়া (৫০) বলেন, ছোটবেলা থেকে হাট-বাজারে ইটে বসে চুল কামিয়েছি। আগে রহিমের বাবার কাছে চুল-দাড়ি কামাইতাম আর এখন রহিমের এখানে আসি। তাছাড়া সেলুনে অল্প বয়স্ক যুবকদের জন্য যাওয়া যায় না। -মজিবুর রহমান ফয়সাল নান্দাইল, ময়মনসিংহ থেকে
×