শেরপুরে বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ কৃষিসমৃদ্ধ অঞ্চল শেরপুরের সর্বত্র বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। পৌষের কনকনে শীত উপেক্ষা করে মাঠে মাঠে চলছে ক্ষেতে সেচ দেয়া, ক্ষেত চাষ, ক্ষেত তৈরি, বীজ উত্তোলন ও চারা রোপণের ধুম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বোরো চাষাবাদে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি বাম্পার ফলন হতে পারে, এমনটাই প্রত্যাশা এলাকার কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলা সদরসহ ৫টি উপজেলায় ৮৯ হাজার ৬৫৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৪৯২ মেট্রিক টন। এ জেলার কৃষকরা যাতে বোরো ফসল অনায়াসে ঘরে তুলতে পারেন সেজন্য সরকারীভাবে নেয়া হয়েছে পূর্ব প্রস্তুতি। সেই সঙ্গে তেল, বিদ্যুত, সার সঙ্কট যেন না হয় সে সম্পর্কেও রয়েছে নজরদারি। বোরো আবাদ ঘরে তুলতে ৩২ হাজার মেট্র্রিক টন সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন থাকায় সেগুলোও মজুদ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার স¦ার্থে বোরো ধানে রোগবালাই দমনের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষককে দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। কৃষকরা জানান, চাষাবাদে সনাতন পদ্ধতির চেয়ে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার লাভজনক। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে বোরো ধানের বীজতলাসহ বিভিন্ন চাষাবাদে শ্রম, সময় আর ব্যয় কম হয়। উৎপাদন হয় বেশি। এ জন্য আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে ঝুঁকে পড়ছেন তারা। এছাড়া তারা কোন কোন এলাকায় সারের চাহিদা মেটাতে কেঁচো দিয়ে ভার্মিং কম্পোস্ট সার তৈরির প্রদর্শনীসহ নানা বিষয়ে পরামর্শও পাচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা সদরসহ ৫টি উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে স্থানীয় কৃষক ক্ষেত তৈরি ও চারা রোপণে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে জেলা সদর ও নকলায় ওসব কাজে কেবল পুরুষ শ্রমিককে দেখা গেলেও ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় পুরুষদের সঙ্গে এক কাতারে কাজ করছেন আদিবাসী নারীও। কোন কোন ক্ষেত্রে তারা একর প্রতি চুক্তি নিয়েও কাজ করছেন। সীমান্তের বারোমারীর আদিবাসী নেত্রী বন্দনা চাম্বুগং জানান, চারা উত্তোলন ও রোপণের ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় কর্মক্ষমতা ও দক্ষতাও আদিবাসী নারী শ্রমিকদের কম নয়।