ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হওয়ার পথে ভারত

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ৫ জানুয়ারি ২০১৯

    বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ  হওয়ার পথে ভারত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠতে যাচ্ছে ভারত। কিন্তু এ পথ খুব একটা মসৃণ নয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম লিখেছে, আসন্ন নির্বাচনের প্রভাব, মুদ্রার মানে অস্থিতিশীলতা ও সরকারী ব্যয় বৃদ্ধির মতো ঘটনায় চাপে আছে ভারত। অন্যদিকে মোদি সরকার যদি দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে তাহলে তা সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। খবর এনডিটিভির। নমুরা হোল্ডিংস নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান মন্তব্য করেছে, ২০১৯ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার ২.৮৫ শতাংশে নেমে আসবে, ২০১৮ সালে যা ৩.২ শতাংশ ছিল। এর পেছেনে রয়েছে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরো জোনের শ্লথ প্রবৃদ্ধি প্রভাব। এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় ভারতের রফতানি, শিল্প ও বিনিয়োগ খাতে প্রবৃদ্ধির গতি মন্থর হয়ে পড়বে। ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তৃতীয় প্রান্তিকে ছিল ৮ শতাংশেরও বেশি যা চতুর্থ প্রান্তিকে হয়েছে ৭.১ শতাংশ। আসন্ন লোকসভা নির্বাচন ইতোমধ্যেই অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভোটের আগে জনমতকে পক্ষে টানতে বরাদ্দ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বিশেষ করে কৃষকদের সহায়তার জন্য। ব্যয় বৃদ্ধির এই প্রবণতা দেখা গেছে গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির হতাশাজনক ফলের পর। তিন রাজ্যে বিজেপির কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নেয়া কংগ্রেস কৃষকদের ঋণ মওকুফে অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে। এখন মোদি সরকার কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি কিছু পণ্যে কর কমিয়ে দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। অবসরভাতার ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের কথাও ঘোষণাও দেয়া হয়েছে। এসব ছাড়া, নির্দিষ্ট মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে শস্য কেনা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্প অর্থায়নের মতো কাজ করতে হচ্ছে সরকারকে। তাছাড়া আগামী নির্বাচনে মোদি পরাজিত হলে, তা নীতি পরিবর্তনের ঝুঁকি তৈরি করবে। ফলে এখন থেকেই সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ইস্যুতে সরব হয়েছেন ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা। সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের একাংশ খরচ করতে চায়, যা নিয়ে দেখা দিয়েছিল মতবিরোধ। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর ভিরাল আচার্য বলেছেন, ‘যেসব সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনভাবে কাজ করার পক্ষে অবদান রাখে, সেসব সরকার কম সুদে ঋণ পাওয়া, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে টানতে পারা ও দীর্ঘদিন টিকে থাকার মতো সুবিধা উপভোগ করে।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সংঘাতে গেলে সরকারের কী অবস্থা হয় তা বোঝাতে তিনি ২০১০ সালে আর্জেন্টিনার সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে দেখা দেয়া মতদ্বৈততা ও সেই সূত্রে আর্জেন্টিনার আর্থিক খাতের বিপর্যয়ের তথ্য উল্লেখ করেছিলেন।
×