ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিকে পাসের হার, জিপিএ ৫-খুদেদের ঈর্ষণীয় সাফল্য

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রাথমিকে পাসের হার, জিপিএ ৫-খুদেদের ঈর্ষণীয় সাফল্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পাসের হার ও সর্বোচ্চ স্কোর জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধিসহ পরীক্ষার সব সূচকেই এবার সাফল্য দেখিয়েছে পঞ্চম শ্রেণীর খুদে শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষায় এবার পাস করেছে ৯৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর ইবতেদায়িতে এ হার ৯৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। দুই পরীক্ষা মিলিয়ে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। দুই পরীক্ষায় এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৪৬১ জন। শিশুদের এ শিক্ষা সমাপনীতে অংশগ্রহণ ও পাসের হারে ছেলেদের পেছানে ফেলে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে মেয়ে শিশুরা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার সোমবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন। বেলা একটায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এবারের ফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। ফল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইট অথবা http://dpe.teletalk. com.bd তে পাওয়া যাচ্ছে। যে কোন মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ফল জানা যাচ্ছে। Google Play Store থেকে PRIMARY TERMINAL RESULT Apps ডাউনলোড করে (Apps) মাধ্যমেও ফল জানা যায়। বিভাগ ও জেলার ফল ॥ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় মোট ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে ছাত্র ১২ লাখ ১১ হাজার ৬০০ এবং ছাত্রী ১৪ লাখ ৪১ হাজার ২৯৬। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৯০৪ জন সব বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। উত্তীর্ণদের মধ্যে ১১ লাখ ৮১ হাজার ১৯ জন ছাত্র এবং ১৪ লাখ ৭ হাজার ৮৮৫ ছাত্রী। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৩। যার মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৬১ হাজার ৪১১ জন এবং ছাত্রী ২ লাখ ৬ হাজার ৭৮২। এ পরীক্ষায় ছাত্রদের পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাসের হার ৯৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ। অর্থাৎ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে। গড় পাসের হারের দিক থেকেও মেয়েরা এগিয়ে আছে। পাসের হার বিবেচনায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ৭ বিভাগের মধ্যে ঢাকা বিভাগ শীর্ষে রয়েছে। এ বিভাগের পাসের হার ৯৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। ৬৪ জেলার মধ্যে জয়পুরহাট জেলা প্রথম স্থানে রয়েছে। এ জেলার পাসের হার ৯৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ৫১০ উপজেলা/ থানার মধ্যে ১৬টি উপজেলায় শতভাগ (১০০ ভাগ) পাস করেছে। সারাদেশে ইংরেজি ভার্ষনে ১২ হাজার ২২৬ জন ডিআরভুক্ত হয়ে ১১ হাজার ৮৫০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে ১১ হাজার ৮০৪ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। শতভাগ পাস ১৬ উপজেলায় ॥ প্রাথমিক সমাপনীতে দেশের ৫১০টি উপজেলার মধ্যে ১৬টি উপজেলার শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। ফলাফল অনুযায়ী, মুন্সীগঞ্জ সদর ও সিরাজদিখান, নওগাঁর বদলগাছি, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর ও কালাই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও নবীনগর, রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি, পিরোজপুর সদর ও জিয়ানগর, খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি, মাগুরার শালিখা, কুষ্টিয়ার খোকশা, পুটয়াখালীর দশমিনা, বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা থেকেও শতভাগ পাস করেছে। ৩১২ প্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল ॥ প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় এবার ৯৬ হাজার ৪৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে, কেউ পাস করতে পারেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩১২টি। প্রাথমিককে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত করা চ্যালেঞ্জিং ॥ প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীত করাটা চ্যালেঞ্জিং বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। তিনি বলেন, এর কারণ আমরা এক জায়গায় আছি। সেখান থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। আমাদের অবকাঠামোগত সমস্যাও রয়েছে। তবে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষানীতি ঘোষণা করেছেন। সংসদে সেটা পাস হয়েছে। এটা নিয়ে কাজ অনেক হয়েছে। ২০১৮ সালেই এটা বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল। সেটা এখনও বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তবে নিশ্চয়ই ২০১৯ সালে শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন সূর্য উদয় হবে এবং আমাদের সরকার এটা বাস্তবায়ন করবে। সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন গণশিক্ষামন্ত্রী।
×