ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশন কাপ, ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বসুন্ধরা কিংসের প্রতিপক্ষ শেখ রাসেল, বসুন্ধরা, কিংস ৫-১ টিম বিজেএমসি

বিশ্বকাপ তারকা কলিনড্রেসের হ্যাটট্রিকে শেষ চারে বসুন্ধরা কিংস

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১২ নভেম্বর ২০১৮

  বিশ্বকাপ তারকা কলিনড্রেসের হ্যাটট্রিকে শেষ চারে বসুন্ধরা কিংস

জাহিদুল আলম জয় ॥ রাশিয়া বিশ্বকাপে কোস্টারিকার হয়ে মাঠ মাতানো তারকা ড্যানিয়েল কলিনড্রেসের দুর্দান্ত পারফর্মেন্সে ভর করে ফেডারেশন কাপ ফুটবলে শেষ দল হিসেবে সেমিফাইনালের টিকেট পেয়েছে বসুন্ধরা কিংস। রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালে টিম বিজেএমসিকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন পরাশক্তিরা। বসুন্ধরার হয়ে চোখ ধাঁধানো হ্যাটট্রিক করেন কলিনড্রেস। অপর দুই গোল করেন দুই বদলি ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ ও মতিন মিয়া। বিজেএমসির একমাত্র গোলদাতা নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার স্যামসন ইলিয়াসু। ফাইনালের টিকেট পাওয়ার মিশনে সেমিফাইনালে বসুন্ধরার প্রতিপক্ষ শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। রাসেল ১-০ ব্যবধানে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়ে সেরা চারে উঠে এসেছে। শেখ রাসেল ও বসুন্ধরার মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচটি হবে ২২ নবেম্বর। এর আগে ২১ নবেম্বর প্রথম সেমিতে লড়বে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ম্যাচের শুরু থেকেই বিজেএমসির দুর্গে আক্রমণের ঢেউ বইয়ে দিতে থাকে নবাগত বসুন্ধরা। ফলস্বরূপ দ্বিতীয় মিনিটেই আসে কাক্সিক্ষত গোল। ডি বক্সের ভেতরে বাঁপ্রান্ত দিয়ে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ক্রস বিজেএমসির ডিফেন্ডার ঠিকমতো ফেরাতে ব্যর্থ হন। বল চলে যায় ড্যানিয়েল কলিনড্রেসের পায়ে। ঠা-া মাথায় তার নেয়া শট আশ্রয় নেয় বিজেএমসির জালে (১-০)। বল জালে প্রবেশের মুহূর্তে বিজেএমসির এক খেলোয়াড় ফেরাতে গেলেও পারেননি। নবম মিনিটে আবারও কলিনড্রেসের জাদু। বিজেএমসির ডিফেন্ডারের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়ে গোল করেন কোস্টারিকান এ ফরোয়ার্ড। প্রায় মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বল বিজেএমসির ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্লেসিং শটে জালে জড়ান কলিনড্রেস (২-০)। ১৫ মিনিটেই হ্যাটট্রিক পূরণ করেন কোস্টারিকার হয়ে বিশ্বকাপ খেলা তারকা কলিনড্রেস। সংঘবদ্ধ আক্রমণে মাসুক মিয়া জনি আলতো হেড করে সামনে বল বাড়ান। বিজেএমসির দু’জন ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে দৃষ্টিনন্দন প্লেসিং শটে লক্ষ্যবেদ করেন অধিনায়ক কলিনড্রেস (৩-০)। ১৫ মিনিটেই তিন গোলে এগিয়ে থাকা বসুন্ধরা প্রথমার্ধের বাকি সময়েও বলের দখল রেখে খেলে। বেশ কয়েকটি সুযোগও সৃষ্টি হয়। কিন্তু গোলরক্ষক আবুল কাশেম মিলনের দৃঢ়তায় আর ব্যবধান বাড়াতে পারেনি অস্কার উইলিয়ানের শিষ্যরা। বিরতির পরও একতরফা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন কলিনড্রেস, জনি, ইমন মাহমুদরা। কিন্তু কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না। অবশেষে ৭০ মিনিটে চার নম্বর গোলের দেখা পায় বসুন্ধরা। সংঘবদ্ধ আক্রমণে বামপ্রান্ত দিয়ে ক্ষিপ্রগতিতে বিজেএমসির অর্ধে ঢুকে গোলমুখে ক্রস দেন মিডফিল্ডার মোহাম্মদ ইব্রাহিম। চলতি বলে বিজেএমসির দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান থেকে পা ছুয়ে দৃষ্টিনন্দন গোল করেন বদলি হিসেবে মাঠে নামা ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ (৪-০)। দুই মিনিট পর প্রথমবারের মতো ম্যাচে গোল করার ভাল সুযোগ সৃষ্টি করে বিজেএমসি। কিন্তু তাদের সেই প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেন বসুন্ধরা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। ৭৫ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন সবুজ। মাহবুবুর রহমান সুফিলের বাড়ানো ক্রসে ডি বক্সে বল পান সবুজ। কিন্তু বুক দিয়ে নামিয়ে শট নিতে বিলম্ব করায় ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া হয় বসুন্ধরার। ৭৯ মিনিটে অসাধারণ বোঝাপড়ার ফসল হিসেব পঞ্চম গোল আদায় করে নেয় বসুন্ধরা। মাঝমাঠ থেকে কলিনড্রেস ও ইমন মাহমুদ বল দেয়ানেয়া করে বামপ্রান্তে দেন ইব্রাহিমকে। এরপর দুরন্ত গতিতে এগিয়ে ডি বক্সে মাপা ক্রস দেন এই মিডফিল্ডার। তা থেকে চোখ ধাঁধানো হেডে বিজেএমসির জাল কাঁপান আরেক বদলি ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া (৫-০)। ৮৬ মিনিটে পেনাল্টি পায় বিজেএমসি। পরের মিনিটে সফল স্পট কিকে দলের হয়ে সান্ত¡নার একমাত্র গোল করেন বিজেএমসির নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার ও অধিনায়ক স্যামসন ইলিয়াসু (৫-১)।
×