ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৭ দফা না মানলে দুর্বার আন্দোলন ॥ মওদুদ

খালেদার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চলবেই ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ২৭ অক্টোবর ২০১৮

 খালেদার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চলবেই ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলন চলবেই বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুবদলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। অপর এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ৭ দফা দাবি না মেনে তফসিল ঘোষণা করলে দুর্বার আন্দোলন শুরু হবে। ফখরুল বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে ও খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে এলেও তাতে সাড়া নেই ক্ষমতাসীনদের। তাই সরকারকে দাবি পূরণে বাধ্য করার লক্ষ্যে ড. কামাল হোসেন, আসম রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন করা হয়েছে। ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। তাই অন্যান্য দল যাতে নির্বাচনে না আসে সেই ব্যবস্থা করছে তারা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটা নির্বাচন করে তারা ক্ষমতায় যেতে চায়। এজন্য দেশের গণতন্ত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখার পরও খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়া হয়েছে এবং বিরোধী দলের অন্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, সংস্কারপন্থী নেতাদের দলে ফিরিয়ে সক্রিয় করা হচ্ছে। দেশের বর্র্তমান পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। সেই সঙ্গে যারা দলের বাইরে ছিল, নিষ্ক্রিয় ছিল তাদের সকলকে সক্রিয় করা হয়েছে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। তাদের লক্ষ্যই হচ্ছে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা। সে দিকেই তারা চলছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বলেছি, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ। সরকার যা চাইছে, তারা তাই করছে। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, তা আমরা বার বার বলেছি। এটা শুধু বিশ্বাসের কথা নয়, এটাই বাস্তবতা। সুতরাং বর্তমান নির্বচন কমিশন কখনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না। এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোরজাতুল করিম বাদরু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ। ৭ দফা না মেনে তফসিল ঘোষণা করলে দুর্বার আন্দোলন-মওদুদ ॥ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে ৭ দফা দাবি দেয়া হয়েছে তা না মেনে তফসিল ঘোষণা করলে দেশে দুর্বার আন্দোলন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে খালেদা জিয়াসহ বিএনপির কারাবন্দী নেতাদের মুক্তির দাবিতে ‘জাতীয়তাবাদী ফোরাম’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মওদুদ অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে যারা বড় বড় কথা বলেন তারা সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিবাজ এবং তাদের নিউইয়র্কের বাড়ির ছবি আমার কাছে আছে। আজকে আওয়ামী লীগ হয়ে গেছে ধনী বানানোর কারখানা। তারা ধনীকে আরও ধনী করার একটা যন্ত্র তৈরি করেছে, সেটা হলো দুর্নীতি। এই দুর্নীতির মাধ্যমে আজকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে চলে গেছে। তারা নিউইয়র্ক, ফ্লোরিডা, কানাডা ও মালয়েশিয়ায় বাড়ি করেছেন। এসব সম্পদ রক্ষা করার জন্যই তাদের ক্ষমতায় থাকতে হবে। সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, এই আইনের ৩২ ধারা মতে সরকারের বিরুদ্ধে কোন সংবাদ প্রকাশ করলে তার ১৪ বছর সাজা আর ২৫ লাখ টাকা জরিমানা হবে। যারা ধর্ষণ করে তাদের জন্যও এত বড় সাজা নেই। ৪৭ ধারায় পুলিশকে সীমাহীন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এতে কোন মামলা ছাড়া যে কাউকে যে কোন সময় গ্রেফতার করতে পারবে পুলিশ। এ আইনের কারণে সংবাদপত্রের কোন স্বাধীনতা থাকবে না। মওদুদ বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে চেষ্টা করছে যাতে বিএনপি নির্বাচনে না আসে। তারা এককভাবে ২০১৪ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে। এ জন্য হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে নিচ্ছে তারা। আমরা বলছি, এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না। দেশের মানুষ আর একদলীয় নির্বাচন হতে দেবে না। তিনি বলেন, ঐক্য ছাড়া এ সরকারকে অপসারণ করা সম্ভব নয় বলেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। এই ঐক্যের মাধ্যমেই বর্তমান সরকারের ধ্বংস হবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আক্তারুজ্জামান বাচ্চুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমতউল্লাহ, রফিক সিকদার প্রমুখ।
×