ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্রিজ বিকল ॥ শেবাচিমে মরদেহ সংরক্ষণ বন্ধ

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ফ্রিজ বিকল ॥ শেবাচিমে মরদেহ সংরক্ষণ বন্ধ

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ বিভাগের ছয়টি জেলার সরকারী হাসপাতালের মধ্যে একমাত্র বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে রয়েছে মরদেহ সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা। কিন্তু সেই ব্যবস্থাতেও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়ায় ফ্রিজিং ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। প্রায় আড়াই মাস ধরে ব্যাহত হচ্ছে মরদেহ সংরক্ষণ কার্যক্রম। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর পূর্বে হাসপাতালে পৃথক দুটি মরচুয়ারী কুলার বা মরদেহ সংরক্ষণের ফ্রিজ আনা হয়েছিল। যার প্রত্যেকটিতে ছয়টি করে মোট ১২টি মরদেহ সংরক্ষণ করা যায়। ‘স্টার লিংক’ নামক কোম্পানির সরবরাহকরা ফ্রিজ দুটি চালুর এক বছরের মধ্যেই নানান ত্রুটি দেখা দেয়। যান্ত্রিক ত্রুটির মধ্যেই জোড়াতালি দিয়ে মরদেহ সংরক্ষণ কার্যক্রম চালানো হতো। প্রায় আড়াই বছর আগে বিকল হয়ে পড়ে ছয় কক্ষ বিশিষ্ট একটি ফ্রিজ। তখন তেমন কোন বেগ পেতে হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। অপর ফ্রিজটি দিয়েই মরদেহ সংরক্ষণ কার্যক্রম চলতো। কিন্তু গত আড়াই মাস ধরে সেটিও বিকল। ফলে মরদেহ সংরক্ষণ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ ভুক্তভোগী পরিবারদের। বর্তমানে কোন মরদেহ স্বজনরা সংরক্ষণ করতে চাইলে তা রাখতে পারছেন না। আবার একইভাবে অজ্ঞাত পরিচয়ের মরদেহ সংরক্ষণে বেগ পেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম আজাদ বলেন, একটি ফ্রিজ আড়াই বছর ধরে নষ্ট। অপরটি সচল থাকলেও তিন মাস আগে একটি মরদেহ ফ্রিজে রাখে তাদের স্বজনরা। এর দুইদিন পরে গিয়ে দেখতে পাই মরদেহটিতে পচন ধরেছে। তখন বুঝতে পারা যায় যে, সচল থাকা ফ্রিজটিও বিকল হয়ে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে জানানো হয়। সূত্র মতে, কয়েকদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়া অজ্ঞাতপরিচয়ের ব্যক্তির মরদেহ ফ্রিজের অভাবে বাইরে রাখতে হয়েছে। যার পরিচয় মিলতে মিলতে মরদেহটি ফুলে ফেপে উঠে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরে। হাসপাতালের স্টোর কিপার সাইফুল ইসলাম জানান, আড়াই বছর আগে বিকল হওয়া ফ্রিজটি গত অর্থবছরেই সচল হওয়ার কথাছিল। কিন্তু অর্থ ব্যয়ের অনুমতি পেতে এক অর্থবছর ছাড়িয়ে অন্য অর্থবছর চলে আসে। তাই পূর্বের অর্থবছরে আসা বরাদ্দ ফেরত পাঠাতে হয়েছে। যে কারণে পরবর্তীতে ওই ফ্রিজটি আর সচল করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, যে ফ্রিজটি সচল ছিল সেটিও গত আড়াই মাস ধরে বিকল। ফ্রিজ সরবরাহকারী স্টার লিংক কোম্পানিকে চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তারা এসে বিকল থাকা দুটি হিমাগার সার্ভে করে গেছেন। হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন জানান, দুটি ফ্রিজই সচল করার চেষ্টা চলছে। আপতত ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সার্ভে করে আড়াই লাখ টাকার একটি চাহিদাপত্র দিয়ে গেছেন। সে অনুযায়ী কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।
×