ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়ন কনসার্ট ভোলায়

গান ও নাচের ভাষায় অগ্রগতির কথা, বর্ণাঢ্য উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

গান ও নাচের ভাষায় অগ্রগতির কথা, বর্ণাঢ্য উৎসব

হাসিব রহমান ॥ হাজার হাজার মানুষ। বিশাল জনসমুদ্র। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উৎসব অনুষ্ঠান। তবে আর সব উৎসব অনুষ্ঠান থেকে একটু আলাদা। ভোলা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা বলা হলো। উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হলো। না, ঠিক বক্তৃতার ভাষায় নয়। গানের সুরে এবং নাচের ছন্দে দারুণ জমজমাট উৎসব। সেই উৎসব মঞ্চ থেকে বলা হলো বাংলাদেশের ক্রম উন্নতির কথা। উন্নয়ন কনসার্ট নামে সোমবার এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। ‘অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ স্লোগানে উৎসবের আয়োজন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। ব্যতিক্রমী উৎসব উপভোগ করেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে দারুণ আনন্দঘন হয়ে ওঠেছিল পরিবেশ। বিকেলে শুরু হওয়া অনুষ্ঠান চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি ঢাকা থেকে আসা জনপ্রিয় শিল্পীরা অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সরকারের দুইজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে আরও রং ছড়ায় মঞ্চ। তারও আগে শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মাঠটি চমৎকার করে সাজিয়ে নেয়া হয়েছিল। দুপুরের পর থেকে আশপাশের এলাকা থেকে মানুষজন আসতে শুরু করেন। নানা শ্রেণী পেশার মানুষ উপভোগ করেন উৎসব। মাঠে শুধু নয়, আশপাশের ভবন ও রাস্তাঘাটে উৎসব আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উন্নয়ন কনসার্ট। এরপর ভোলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা আঞ্চলিক গান, কবিতা, নৃত্য পরিবেশন করেন। কণ্ঠ শিল্পী মনজুর আহমেদ, স্বাতী করনজাই, উত্তম, ঘোষ, রেহানা ফেরদৌস, আহীন আফসার, আখি পাল, আসমা আক্তার সাথী, খাদিজা আক্তার স্বপ্না, মৃদুলদে, শ্যামলি, মিতু, প্রাপিক, প্রত্যাশা, উলফা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। আবৃত্তি করেন সামস উল আলম মিঠু, রেহানা ফেরদৌস, গালিব ইবনে ফেরদৌস, নেয়ামউল্যাহ, আসমা আক্তার, স্বপ্না, শ্যামলী, আবিদ, প্রাপ্তি প্রমুখ। ভোলা শিশু একাডেমির শিশু শিল্পীরা অনুষ্ঠানে নাচ পরিবেশন করে। সন্ধ্যায় মঞ্চে আসেন ঢাকার শিল্পীরা। অনিমা মুক্তি গমেজ বেশ কয়েকটি গান গেয়ে শোনান। বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে শুরু করেন তিনি। পরে আরও কয়েকটি দেশাত্মবোধক গান করেন। তবে শ্রোতারা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন মমতাজের জন্য। জনপ্রিয় লোক গানের শিল্পী মঞ্চে ওঠেন সবার পরে। তার গাওয়া ‘পাঙ্খা পাঙ্খা’ ‘বুকটা ফাইট্যা যায়’ ইত্যাদি গানের সঙ্গে কণ্ঠ মেলান ভক্তরা। অনুষ্ঠানে আরও ছিল লেজার শো। আতশবাজির আলোয় ঝলমল করে ওঠে রাতের আকাশ। ছিল ছোট্ট পরিসর আলোচনাও। অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাওয়া। এই দেশের অগ্রগতি কেউ রুখতে পারবে না। তিনি বলেন, দেশ গঠনের মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। উন্নয়ন থামিয়ে দেয়া হয়। পিতার অপূর্ণ স্বপ্ন এখন পূরণ করছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। জননেত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। ভোলার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি জনগণের কাছে জানতে চান, তারা সন্তুষ্ট কি না? সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার হাত তুলে হ্যা সূচক উত্তর দেয় জনতা। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমরা এর আগে ৬ থেকে ৭টি জেলায় উন্নয়ন কনসার্ট করেছি। সেই ধারাবাহিকতায় ভোলায় এসেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের সংগ্রাম করছেন। সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। এই অগ্রযাত্রা থামানো যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। ক্রমে ৬৪ জেলায় এ ধরনের আয়োজন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
×