ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিয়ের কার্ডে টয়লেটের ছবি

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 বিয়ের কার্ডে টয়লেটের ছবি

ভারতের গ্রামে লোটা-পার্টির ভরসায় দিন কাটে যে নারীদের, তাদের ‘টয়লেট এক প্রেম কথা’ চলচ্চিত্র নতুন দিশা দেখিয়েছিল। এবার মুর্শিদাবাদের সামসাল বেগম বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি ছাপিয়ে মহিলাদের আত্মসম্মানবোধের সত্যিকারের বার্তা দিলেন। অক্ষয় কুমার-ভূমি পেড়নেকর অভিনীত ‘টয়লেট এক প্রেম কথা’ সিনেমাটিতে সদ্যবিবাহিতা শিক্ষিতা জয়া দলবেঁধে পাড়ার মেয়ে-বউদের সঙ্গে (লোটা-পার্টি) খোলা স্থানে প্রাতঃকৃত্য সারার লজ্জা থেকে মুক্তি পেতে শ্বশুরবাড়িই ছেড়ে দিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে চাপিয়ে রাখা জগদ্দল ভাবনাটা কেবল সিনেমাতেই নয়, উপড়েছে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন থেকেও। মুর্শিদাবাদের বড়ঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতি কার্যালয়ে ঢোকার মুখেই পলাশ ঘোষের নির্মল চায়ের দোকান। ফেস্টুনে বড় বড় করে লেখা, খোলা স্থানে মলত্যাগ করলে এই দোকানে চা পাওয়া যাবে না। চায়ের দোকান নির্মল করার উদ্দেশ্য কি জানতে চাওয়ায় তিনি বলছিলেন, পঞ্চায়েতকে নির্মল বানানোর জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছি। আমি তাই এভাবে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে অনেকে রাগারাগি করেছেন, অনেকে আবার নিজের ভুল বুঝতে পেরে শৌচালয়ও তৈরি করেছেন। বড়ঞ্চাতেই ‘নির্মল সেলুন’-এ ছড়া লেখা ফেস্টুন ঝুলিয়েছেন এককড়ি দাস, ‘চুল দাড়ি কাটব বারবার, যদি থাকে বাড়িতে শৌচাগার।’ তার কথায়, চুল দাড়ি কাটা যেমন সৌন্দর্যের ব্যাপার, তেমনি শৌচাগার থাকলেও পরিবেশ সুন্দর হবে, মেয়েদেরও ইজ্জত বাড়বে। এই বড়ঞ্চার একঘরিয়া গ্রামেই ৩০ আগস্ট নির্মল বিয়ে অনুষ্ঠিত হলো। এই বিয়ে ইতোমধ্যে সারা গ্রামে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পাস সামসাল বেগম নিতান্ত দারিদ্র্যের কারণেই কলেজে যেতে পারেননি। কিন্তু তিনি সচেতন নাগরিক হিসেবে বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি ছেপেছেন, সে জন্যই তার বিয়েতে প্রশাসনিক স্তরের অফিসারদের উপস্থিতিতে তার বিয়ে আক্ষরিক অর্থে ‘নির্মল শুভ বিবাহ’ হয়ে উঠেছে। ডয়েচে ভেলে অবলম্বনে
×