ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনী প্রচারে তিন সিটি

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৪ জুলাই ২০১৮

নির্বাচনী প্রচারে তিন সিটি

বরিশাল খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচারের শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছেন। পাশাপাশি বেশকিছু ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। শুরু থেকেই অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে কখনও তদন্ত আবার কখনও তাৎক্ষণিক সত্যতা পেয়ে প্রার্থীর কাছে ব্যাখা চেয়ে নোটিস জারি করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। সোমবার পর্যন্ত বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রসহ চার কাউন্সিলর প্রার্থীকে নোটিস করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের তৎপরতায় দুই মেয়রসহ একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় অর্ধ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বরিশাল সিটি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোঃ হেলাল উদ্দিন খান বলেন, আমরা প্রচারে শুরু থেকেই প্রার্থীদের বিরুদ্ধে লিখিত নানান অভিযোগ পেয়েছি। যার মধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনের মতো বিষয়গুলোই বেশি। ওইসব অভিযোগগুলোর মধ্যে কোনটি প্রার্থী নিজে আবার অনেকে প্রার্থীর পক্ষ হয়েও দিয়েছেন। তবে অভিযোগগুলো তদন্তে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারী কিংবা অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আবার কিছু ছিল খুবই ছোটখাটো বিষয়। এর মধ্যে যেগুলোর প্রমাণ পাওয়া গেছে সেগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নৌকার প্রচারে গাজীপুরের নবনির্বাচিত মেয়র ॥ বরিশাল সিটি নির্বাচনে নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে গণসংযোগ করেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম। নগরীর সদর রোড, ফলপট্টি ও পোর্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগকালে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে এবং বরিশাল নগরীকে উন্নত ও আধুনিক এক তিলোত্তমা নগরীতে রূপান্তরিত করতে নৌকায় ভোট প্রার্থনা করেন। প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধোঁকাবাজি করতে চাই না ॥ নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ জনকণ্ঠকে বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বরিশালের উন্নয়নে জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। বরিশালের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। প্রতিপক্ষ বিএনপির প্রার্থী যে অভিযোগ করেছে তার কোন ভিত্তি নেই। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকব ॥ সিটি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ মার্কার মেয়র প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপি সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বলেন, সরকার যতই গ্রেফতার আতঙ্ক সৃষ্টি করুক না কেন আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকব। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে জনগণ ॥ নির্বাচনী মাঠ বেশ চাঙ্গা রেখে নগর চষে বেড়াচ্ছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। নগরীর হাটখোলা এলাকায় গণসংযোগকালে তিনি (তাপস) সাংবাদিকদের বলেন, জনগণ যতক্ষণ আমার সঙ্গে আছেন, ততক্ষণ আমি নির্বাচনী মাঠে তাদের নিয়ে লড়াই করে যাব। নির্বাচনী পরিবেশ যতই উত্তপ্ত হোক না কেন সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে জনগণ। প্রার্থী পরিচিতি সভা ॥ ‘সিটি কর্পোরেশন ব্যবস্থাপনায় চাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা’ স্লোগান সামনে রেখে টিআইবির সহযোগিতায় সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) আয়োজনে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে ‘প্রার্থী পরিচিতি ও স্বচ্ছ-জবাবদিহিমূলক সিটি কর্পোরেশন গঠনে অঙ্গীকার বিষয়ক মতবিনিময় সভা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৯ বিচার বিভাগীয় হাকিম নিয়োগ ॥ সিটি কর্পোরশন নির্বাচনে অপরাধ বিচারার্থে আমলে নেয়া এবং তা সংক্ষিপ্ত বিচারের জন্য নয়জন বিচার বিভাগীয় (জুডিসিয়াল) হাকিম নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, ভোটগ্রহণের পূর্বের দিন (২৯ জুলাই) থেকে ভোটের দিন ও পরের দুদিনসহ মোট চারদিন অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচারের জন্য বিচার বিভাগীয় হাকিমদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি থাকছে ১৫ প্লাটুন বিজিবি ॥ সহকারী রিটার্রিং অফিসার হেলাল উদ্দিন খান জানান, নির্বাচনের আগে ২৮ জুলাই থেকে নির্বাচনের দিন ৩০ জুলাই এবং পরদিন ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩০টি ওয়ার্ডে ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে ৩০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে কাজ করবে। ভোটগ্রহণের আগেরদিন থেকে পরের দুদিন পর্যন্ত ৯ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী এলাকায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এছাড়া র‌্যাব-৮ এর ৩০ টিম, ১৫ প্লাটুন বিজিবি সদস্যদের ৩০ টিম, পুলিশের ৩০ টহল টিম, ১০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে কাজ করবে। রাজশাহী মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ শেষ মুহূর্তের প্রচারে জমে উঠেছে রাজশাহী সিটি নির্বাচন। সকাল থেকে বিরামহীন ভাবে চলছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী লটনের প্রচার। আর শেষ সময়ে এসে ভোটের প্রচারে যুক্ত হয়েছে নানা অপপ্রচার। বিশেষ করে রাসিক নির্বাচনে লিটনের বিরুদ্ধে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন ভোটের মাঠে। অপপ্রচারকেই এখন হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন বুলবুল। লিটন নির্বাচিত হলে রাজশাহী নগরীর বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে এমন প্রচার চালানো হচ্ছে। এছাড়া এই অপপ্রচার চালানোর জন্য জামায়াতের নারী কর্মীদের কৌশলে মাঠে নামানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এই নারী কর্মীরা দলবেঁধে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিটনের বিরুদ্ধে নানা ধরনের উস্কানি ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। বুলবুলের প্রচারে নানা অপ্রপচার ছড়িয়ে দেয়া হলেও সাজানো মাঠে লিটন সমানে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার। উন্নয়নে রাজশাহী নগরীর চিত্র পাল্টে দেয়ার অঙ্গীকার দিচ্ছেন লিটন। আওয়ামী লীগ মনোনীত, মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘বিএনপির তথাকথিত জনপ্রিয়তায় ভীত হওয়ার আমাদের কোন কারণ নাই। কারণ জাতীয়ভাবেই তাদের কোন জনপ্রিয়তা নেই। তাদের নেতাকর্মীরা কে কোথায় চলে গেছেন, তার কোন ঠিক নাই। তারা ক্ষমতায় থেকে সুবিধাবাদী দল, আন্দোলনের কোন দল নয়। সে কারণে তারা রাজশাহীতে ব্যর্থ মেয়রের পেছনে কাতারবদ্ধ হতে পারেনি। তাদের মধ্যে প্রচুর বিভাজন, তাদের কাজের মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে গ-গোল করে, বোমাবাজি করে। সেটা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়ে গেছে। তাই নৌকার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে লাভ নেই। রাজশাহীর মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন খুলনার মেয়র খালেক ॥ গত এক সপ্তাহ ধরে রাজশাহী নগরীতে অবস্থান করে নৌকার পক্ষে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। হাতে নৌকার লিফলেট নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটের মাঠে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন তিনি। কখনও একা, কখনও দলবদ্ধ হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন নগরীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। ক্লান্তিহীন এ মেয়রের প্রচারে থাকছে রাসিকের নির্বাচনে লিটনকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট দেয়ার আহ্বান। নগরীর ওলিগলি থেকে শুরু করে বাজার, বিপণীবিতান ও বিভিন্ন দফতরে ঘুরে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। বুলবুলের প্রচারে নেমে লিটনের অপপ্রচারে মিনু ॥ বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল হলেও প্রচারের অগ্রভাগে থাকছেন মিজানুর রহমান মিনু। তিনি বুলবুলের হয়ে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। সর্বশেষ সোমবার ভোটের প্রচারে নেমে সরাসরি লিটনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেন মিনু। তিনি অপপ্রচার চালিয়ে বলেন, দীর্ঘদিনের বসতী নদীর ধার এলাকা উচ্ছেদ করে সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী পার্ক তৈরি করবেন। লিটন নির্বাচিত হলে বস্তি-ভিটা থেকে মানুষকে উচ্ছেদ করবে। এ সময় তিনি বলেন, সরকারদলীয় প্রার্থীর পার্ক তৈরি করার স্বপ্ন কোনদিন পূরণ হতে দেয়া যাবে না। জীবন দিয়ে হলেও নদীর ধার এলাকার বস্তি রক্ষা করা হবে। সকালে নগরীর ২৪নং ওয়ার্ডে ধানের শীষের গণসংযোগের সময় এসব অপপ্রচার চালান মিনু। তিনি বলেন, রাজশাহীতে সবকিছু করেছে বিএনপি। এখন রাজশাহীকে মেগাসিটি করা এবং বদলনোর কিছুই নাই। একই এলাকায় প্রচারকালে বুলবুল বলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এবং তাদের নেতাকর্মীরা হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী ধ্বংসের রাজনীতিতে মেতে উঠেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার করছে। আজ্ঞাবহ এই নির্বাচন কমিশন সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ইসলামী আন্দোলন প্রার্থীর ইশতেহার ঘোষণা ॥ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি তার ৩২ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে জীবন দিয়ে হলেও ইশতেহার বাস্তবায়ন করবেন। ‘হাতপাখা’ প্রতীকের প্রার্থী শফিকুল ইসলামের ইশতেহারে দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন গড়ার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল তার বক্তব্যে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়। তিনি এই দুর্নীতি বন্ধ করে সে টাকায় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে চান। আমূল পরিবর্তন আনতে চান নগর ভবনে। সিলেট সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ নির্বাচনী প্রচারের ছোঁয়া লাগেনি এমন জায়গা নগরীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার চলছে সমান তালে প্রতিটি ওয়ার্ডে। এমনকি যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত বাতিল নিবন্ধিত দল জামায়াতের মহানগর নেতা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের প্রচারও চলছে নগরীর আনাচে-কানাচে। প্রার্থী স্বতন্ত্র হলেও তার পক্ষে মাঠে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির কর্মীরা। তারা বিনা বাধায় নগরীতে অবাধে প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারের নামে ছাত্রশিবির কর্মীরা নগরীতে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে বিএনপি দলীয় প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী আবারও পুলিশের বিরুদ্ধে আইন ভেঙ্গে দলের নেতা কর্মীদের হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে তিনি পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন। মাঠে প্রচারে রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন কামরান, বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীসহ অপর ৪ প্রার্থী। নিজের জয়গান গেয়ে চলছেন সবাই। দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রচারে প্রচারে উত্তাল হয়ে উঠেছে নগরী। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি মিথ্যাচারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। তারা মিথ্যাচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। শয়তান যেমন মানুষকে বিভ্রান্ত করে, বিএনপি নেতাকর্মীরাও একইভাবে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করে। এদের কবল থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, সিলেটে নৌকা মার্কার জয় নিশ্চিত করতে যুবলীগ নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কারণ নৌকা আওয়ামী লীগের প্রতীক, নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক। তিনি সোমবার দুপুরে সিলেট নগরীর দরোগাগেটের শহীদ সুলেমান হলে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগ আয়োজিত ভোটকেন্দ্র কমিটিকে নিয়ে কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সিলেট মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আলম খান মুক্তির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুনূর রশীদ। কামরান বলেন, নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে সিলেটের যুবলীগ কর্মীরা শুরু থেকেই মাঠে দিনরাত পরিশ্রম করছেন। তিনি বলেন, যেখানেই যাচ্ছি দেখছি নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নৌকা মার্কার সমর্থনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে নগরীর আম্বরখানার একটি হোটেলের হলরুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সদস্য ও শাবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য আবদুর রশিদ খান রাশেদ ও সাবেক ছাত্রনেতা ফয়েজ উল্লাহ-এর যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শাবিপ্রবির ভিসি প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সিলেট ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনসহ সিলেটের ওসমানীনগরবাসী সিসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের সমর্থনে মতবিনিময় সভা ও দিনব্যাপী গণসংযোগ করা হয়েছে। গণসংযোগ শেষে রবিবার রাতে নৌকা মার্কার সমর্থনে নগরীর হোটেল গার্ডেন ইনের হলরুমে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। সভায় ওসমানীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। মেয়র প্রার্থী কামরানের সমর্থনে বাংলাদেশ জাতীয় যুব উন্নয়ন পরিষদ সিলেটের উদ্যোগে এক সভা সোমবার বিকেল ৩টায় জিন্দাবাজারের একটি রেস্টুরেন্টের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ডাঃ এম. এ. রকিবের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন- পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খোয়াজ আহমদ খান, সাধারণ সম্পাদক মনোরঞ্জন তালুকদার, সহ-সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন, হাকীম ছাদুল্লাহ বাচ্চু, মোঃ বেলালউদ্দিন প্রমুখ। সভায় বক্তারা মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য সিলেট নগরবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। সভায় বাংলাদেশ জাতীয় উন্নয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মদিনা মার্কেট, বাগবাড়ী, সুবিদবাজার এলাকায় পরে নেতৃবৃন্দ কামরানের সমর্থনে গণসংযোগ করেন। আরিফুল হক চৌধুরী ॥ বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকারের নির্দেশনা ছাড়াই পুলিশ বাহিনীর অতি উৎসাহিত কিছু সদস্য নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীদের হয়রানি করছে পুলিশ। তাদের বাসাবাড়িতে তল্লাশির নামে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এ সময় তিনি প্রশ্ন তোলেন, সরকার তো বলে নাই নির্বাচনের আগে এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে। তাহলে কার স্বার্থ পূরণে পুলিশ এমন হয়রানি করছে? তিনি নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে ঢাকায় গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে প্রতিবাদ জানাব। অবস্থা এমন চলতে থাকলে আমাদের বাধ্য করা হবে রাজপথে নামতে। সোমবার দুপুরে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সিলেট নগরীর শাহী ঈদগার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আরিফুল হক চৌধুরী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, প্রতিবারই সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে যে প্রার্থী জয় লাভ করেন তার দলই সরকার গঠন করে। এ পুণ্যভূমি সিলেটে কোন প্রহসনের নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। নির্বাচন কমিশন আজ্ঞাবহ হয়ে প্রহসনের নির্বাচন করলে এর প্রভাব আগামী সংসদ নির্বাচনে পড়বে। গণমাধ্যমের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, অতীতের মতো আপনাদের সহযোগিতা চাই। আজ থেকে ফলাফল প্রকাশের আগ পর্যন্ত আপনাদের সহযোগিতা আগের মতো চাই। আরিফ বলেন, ‘প্রয়োজনে ঢাকায় গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে নালিশ দেব।’ ‘গত রাতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাঈদ আহমদ ও আমার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রুহেল রাজ্জাককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের বাসায় গিয়ে হয়রানি করছে পুলিশ।’ ধানের শীষের সমর্থনে নগরীর বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ অব্যাহত রয়েছে। এসব গণসংযোগে বিএনপির মহানগর, জেলার নেতৃবৃন্দ ছাড়াও অংশ নিচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দও প্রচার চালাচ্ছেন ধানের শীষের পক্ষে। সোমবার সকালে নগরীর সোবহানীঘাটের কাঁচাবাজারে অংশ নেন আরিফুল হক চৌধুরী। এছাড়া দুপুরে নগরীর জালালাবাদ ও পশ্চিম পীরমহল্লা এবং বাদ জোহর নগরীর সুবিদবাজারের বনকলাপাড়া, কলাপাড়া এবং লন্ডনী রোডে আরিফুল হক চৌধুরী গণসংযোগ করেন। গণসংযোগকালে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আমার প্রতি আপামর জনতার ভালবাসা দেখে আমি অভিভূত। আমাকে আবারও ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে আপনাদের সেবার মাধ্যমে নগরীর যাবতীয় সমস্যা সমাধান করে একটি সুন্দর ও আধুনিক নগরী উপহার দেব। গণসংযোগকালে তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি করে বলেন, আপনারা যারা অতি উৎসাহী হয়ে নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করার পাঁয়তারা করছেন তারা নিজেরা খাল কেটে কুমির আনছেন। এই সিলেটে কেউ অন্যায় করে পার পায় না। তাকে অবশ্যই শান্তি পেতে হয়।
×