ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্য মেলা কেন্দ্র নির্মাণে সময় বাড়ল ২ বছর

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১১ জুলাই ২০১৮

পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্য মেলা কেন্দ্র নির্মাণে সময় বাড়ল ২ বছর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমেলার জন্য রাজধানীতে একটি স্থায়ী কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল ২০০৯ সালে। এজন্য প্রথমে ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প নেয়া হয়। কিন্তু তেজগাঁওয়ে জমি স্বল্পতার কারণেই সেটি হয়নি। এরপর পূর্বাচলে ৭৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কেন্দ্র নির্মাণে নেয়া হয় নতুন প্রকল্প। কিন্তু প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত ৩ বছরের মেয়াদকাল পার হলেও এক-চতুর্থাংশ কাজও শেষ হয়নি। ফলে নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় আবারও বাড়ছে। এবার প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা প্রাক্কলন করে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির সংশোধনী অনুমোদন পেয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় আরও পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৯২০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সভাশেষে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্র নির্মাণ বর্তমান সরকারের অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতি। কিন্তু বর্তমান সরকারের এ মেয়াদে সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না। কারণ সরকারের হিসাব অনুযায়ী গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত বাণিজ্য মেলা কেন্দ্রটির ভৌত অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নামে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়, ইতোমধ্যে কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য বিভিন্ন অবকাঠামো চীনে তৈরি করা হচ্ছে। সেখান থেকে নিয়ে এসে এখানে স্থাপন করা হবে। ফলে নির্ধারিত সময়ের আগেই এটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, চীন সরকারের অনুদান সহায়তায় বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৪৭৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে, প্রকল্প সাহায্য হিসেবে চীন সরকারের অনুদান ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) নিজস্ব তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ২০২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। এখন দুই বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। সারা দেশে পুরাতন খাদ্য গুদাম ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদির মেরামত এবং নতুন অবকাঠামো নির্মাণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিতিমন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আমাদের ৩১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা খরচ হবে। যার পুরোটাই সরকারী অর্থায়নে হবে। তিনি বলেন, আমরা খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে হবে। আর এর জন্য আমাদের বিতরণ ও মজুদ করার ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। প্রকল্পের আওতায় দেশজুড়ে ৫৫০টি গুদাম ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদির মেরামত করা হবে। নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, তেজগাঁওয়ের সরকারী খাদ্যগুদামের অবকাঠামোও উন্নয়ন করতে হবে। এ সময় প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, তেজগাঁওয়ে একটি সরকারী খাদ্যগুদাম আছে। সেটি দেখে প্রধানমন্ত্রী অবাক হয়েছেন, খাদ্য গুদাম ময়লা, ভাঙ্গা, পানিপড়ে। এটি দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে- নোয়াখালীর মাইজদী-রাজগঞ্জ-ছয়ানী-বসুরহাট-চন্দ্রগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ককে যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, এর বাস্তবায়ন খরচ ধরা হয়েছে ২৫২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য লিংক প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। ৩৭টি জেলায় সার্কিট হাউসের উর্ধমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ১৭০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যেটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
×