ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উর্ধতনের নির্দেশে শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করুন ॥ পিজিআরকে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৬ জুলাই ২০১৮

উর্ধতনের নির্দেশে শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করুন ॥ পিজিআরকে প্রধানমন্ত্রী

বিডিনিউজ ॥ উর্ধতনদের নির্দেশ মেনে সুশৃঙ্খলভাবে চলতে পিজিআর সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে এ নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উর্ধতন যারা কর্মকর্তা তাদের অধীনস্তদের সুযোগ-সুবিধাও দেখতে হবে। আবার অধীনস্ত যারা, তারাও তাদের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মেনে শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করবে, সেটাই আমি আশা করি। ‘কারণ, এটা যেহেতু সুশৃঙ্খল বাহিনী। কাজেই এর কমান্ড ঠিক থাকতে হবে এবং সবকিছু সুশৃঙ্খলভাবে চলতে হবে। তাহলেই যে কোন লক্ষ্য আমরা অর্জন করতে পারব।’ দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পিজিআর সদস্যদের কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘চিরদিন আপনাদের কথা মনে থাকবে। রোদ, ঝড়-বৃষ্টি মাথায় করে যে দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেছেন, সেটা আমার সবসময় মনে থাকবে।’ আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচনে সরকার গঠন করতে না পারলেও পিজিআর সদস্যদের জন্য ‘দোয়া সবসময়ই থাকবে’ বলে জানান শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালে ও ২০১৪ সালে নির্বাচনে জিতে সরকার গঠনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বলতে গেলে এটা সাড়ে নয় বছর। অত্যন্ত কাছে থেকে আপনাদের সঙ্গে একইসঙ্গে কাজ করেছি। ‘২০১৪ সালে নির্বাচন করে সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবারে এটা হচ্ছে আমাদের শেষ বছর। ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। যদি বাংলাদেশ জনগণ ভোট দেয়, আল্লাহর ইচ্ছা থাকে, হয়ত আবার সরকার গঠন করব। আর যদি না হয়, সরকার গঠন করব না।’ এ সময় নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নাম উল্লেখ না করে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করতে ‘ষড়যন্ত্রের’ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ একটা সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে। একটা চ্যালেঞ্জ এসেছিল আমার ওপর। দোষারোপ করতে চেয়েছিল পদ্মা সেতুর দুর্নীতির কথা বলে। ‘দুর্ভাগ্য আমাদের দেশেরই বেশ স্বনামধন্য মানুষ, সামান্য একটা ব্যাংকের এমডির পদ বয়সের কারণে হারিয়ে সে প্রতিশোধ নিয়েছিল পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করে দিতে।’ এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারণ দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি। এসেছি দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে। সেটা প্রমাণ হয়েছে, কোন দুর্নীতি এখানে হয়নি। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেটা করতে পেরেছি। এখন পদ্মা সেতু দৃশ্যমান। শেখ হাসিনা তার সরকারের সময় পিজিআর সদস্যদের আবাসনসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির কথা উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধুর সময় ১৯৭৫ সালের ৫ জুলাই এই রেজিমেন্ট গঠন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে পিজিআর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর হারুন স্বাগত বক্তৃতা দেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী পিজিআর সদর দফতরে পৌঁছলে রেজিমেন্টের কোয়ার্টার গার্ডে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং পিজিআর কমান্ডার তাকে অভ্যর্থনা জানান। প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসারদের সঙ্গে সাক্ষাত ও কুশলবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে একটি সুসজ্জিত গার্ড রেজিমেন্ট প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী রেজিমেন্টে কর্মরত অবস্থায় নিহত, শহীদদের স্বজনদের উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন এবং অনুদান হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ মাহফুজুর রহমান, প্রতিরক্ষা সচিব আখতার হোসেন ভূইয়া, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×