ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাটিবিহীন চারা উৎপাদন

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৩০ জুন ২০১৮

মাটিবিহীন চারা  উৎপাদন

কোকো ডাস্ট এবং প্লাস্টিক ট্রেতে মাটি ছাড়াই উন্নত সবজির চারা উৎপাদন করে কৃষিতে নবজাগরণ ঘটিয়েছেন কৃষক ওসমান গনি। তাকে দেখে অনেকেই এখন এ পদ্ধতিতে ঝুঁকে পড়েছেন। সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের বালাপাড়া গ্রামের ওসমান গনি। তিনি একজন পেশাজীবী কৃষক। কৃষির উৎপাদন নিয়েই তার সমস্ত হিসাব। কারণ পরিবারের যাবতীয় ব্যয় সংকুলান হয় তার কৃষিতে। কিভাবে অল্প ব্যয়ে অধিক ফসল উৎপাদন করা যায় এ নিয়েই ভাবতেন সবসময়। এক সময় সেই পদ্ধতিও তিনি পেয়ে যান। প্রযুক্তি সহায়তায় লাভবানের উদ্দেশ্যে নানা পরিকল্পনা প্রয়োগ করেন কৃিষতে। এর মধ্যে সফল হয়েছেন। অনেক সময় মাটিতে চারা লাগিয়ে আবহাওয়াসহ নানাবিধ কারণে চারা উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাত। তবে স্থানীয় কৃষিভিক্তিক এনজিও ও কৃষি অফিসের পরামর্শে আজ সে সফল। ওসমান গনি জানান, ২০১৭ সালে সেলফ-হেলপ এ্যান্ড রিহেবিলিটেশন প্রোগ্রামের (শার্প) কৃষি সেবা কেন্দ্র ও সবুজ নার্সারি বাস্তবায়নে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহযোগিতায় ১০ শতক জমিতে সবজি নার্সারি গড়ে তোলেন। আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ১০ শতক জমির ওপর গ্রীন হাউসের আদলে তৈরি করেন নেট হাউস। এতে প্লাস্টিক ট্রেতে কোকো ডাস্ট ব্যবহার করে কেঁচো সারের সমন্বয়ে মাটি ছাড়াই সবজি চারা উৎপাদন করেন। এটা উন্নত প্রযুক্তি। এতে চারা পুরো শিকড় পেঁচিয়ে শিকড়ের কোন ক্ষতি হয় না। এ চারা জমিতে লাগানোর পর-পরই খাদ্য গ্রহণ শুরু করে। তার এই আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি নেট হাউসের চারপাশে নেট দিয়ে রাখা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত আলোবাতাস প্রবেশ নিশ্চিতসহ ক্ষতিকারক পোকামাকড় প্রবেশের কোন সম্ভাবনা সেই ওসমান গনির গ্রীন হাউসে। কারণ পলিথিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে হাউসের চাল। যে কারণে তাপ নিয়ন্ত্রণসহ ঝড়-বৃষ্টি থেকেও চারাগুলো নিরাপদে রয়েছে। এভাবেই বেগুন, মরিচ, টমেটো, কফি, চালকুমড়া, লাউ, করলা, পেঁপে, ঢেঁড়স, খিরা ইত্যাদি সবজি। ফুলের মধ্যে রয়েছে- গোলাপ, গাঁদা, অর্কিড, আন্ধরিয়াম, চন্দ্র মল্লিকাসহ নানান সবজি চাষাবাদ করা যায় এবং উৎপাদন ব্যয় অনেক কম বলে জানান এ কৃষক। এ বিষয়ে শার্পের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর (কৃষি) মোঃ করিম উদ্দিন বলেন, মাটিবিহীন চারা উৎপাদনে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। উন্নত প্রযুক্তির কৃষি পণ্য উৎপাদন ও বাজার সংযোগের সমন্বিত সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে কৃষকদের ফসল বিক্রি ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এর জন্য এলাকাভিত্তিক সেবা কেন্দ্র গড়া হয়েছে। আর বাজারজাত করার জন্য কৃষক ও পাইকাররা তাদের উন্নত সবজি ও চারা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারছেন। -এম আর মহসিন, সৈয়দপুর থেকে
×