ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টি কাদা উপেক্ষা করে ভোটারদের খোঁজে ছুটছেন প্রার্থীরা

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২০ জুন ২০১৮

  বৃষ্টি কাদা উপেক্ষা করে ভোটারদের খোঁজে ছুটছেন প্রার্থীরা

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, গাজীপুর ও নুরুল ইসলাম, টঙ্গী ॥ আর মাত্র ৬ দিন পর আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) এবারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে বিজয়ী হতে প্রার্থীরা ক্রমেই মরিয়া হয়ে উঠছেন। মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়। এতে নগরীর বিভিন্নস্থানে জলাবদ্ধতা ও কাদার সৃষ্টি হয়। প্রার্থীরা রোদ বৃষ্টি ও কাদা উপেক্ষা করে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের খোঁজে হন্যে হয়ে ছুটে যাচ্ছেন শহরের অলিগলিসহ বিভিন্ন মহল্লায়, বাজারে ও বাড়িতে। তারা এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রার্থীরা প্রতিদিনই ভোটারদের খোঁজে নগরীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তের বিভিন্ন এলাকায় ছুটছেন। বসে নেই বন্ধু বান্ধবসহ স্বজনরাও। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে তারা পুরো নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন প্রধান রাজনৈতিকদল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের বেশ কয়েক কেন্দ্রীয় নেতা। তারা ভোটারদের কাছে গিয়ে দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে মোট ৭ প্রার্থী থাকলেও মূল লড়াই হবে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মনোনীত দুই প্রার্থীর মধ্যে। এ দুই মেয়র প্রার্থীর মধ্যে একজন ১৪ দলীয় জোট সমর্থিত আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরজন ২০ দলীয় জোট সমর্থিত বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। নির্বাচনে তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে উভয় প্রার্থীই মরিয়া হয়ে গণসংযোগ ও প্রচারের মাধ্যমে নির্বাচনী মাঠকে সরগরম করে তুলেছেন। দু’জনই সর্বশক্তি নিয়োগ করে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নাগরিক সেবা ও উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। সবার দৃষ্টিই এখন এ দুই মেয়র প্রার্থীর দিকে। রাজনৈতিক ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব মহলেই জোর আলোচনা চলছে এ দুজন প্রার্থীকে ঘিরে। নির্বাচনে এ দুই প্রার্থীর মধ্য থেকে একজন বিজয়ের মালা গলায় পরবেন বলে স্থানীয়দের অভিমত। মেয়র প্রার্থীদের গণসংযোগÑ আওয়ামী লীগ ॥ ১৪ দলীয় জোট সমর্থিত আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী (নৌকা) জাহাঙ্গীর আলম মঙ্গলবার সকালে সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর এলাকা হতে নির্বাচনী প্রচারের কাজ শুরু করেন। গণসংযোগ শুরুর প্রাক্কালে তিনি স্থানীয় সাবেক ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এর আগে তিনি নিজ বাসায় দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণ করেন এবং খোঁজ খবর নেন। এদিন তিনি সিটি কর্পোরেশনের ১ নম্বর হতে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। গণসংযোগকালে প্রিয় প্রার্থীকে কাছে পেয়ে স্থানীয়রা ভিড় জমায় এবং কুশলাদি বিনিময় করেন। এসময় তিনি স্কয়ার গেট, লতিফপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ, তুরাগ ঈদগাহ মাঠ, হাতিমারা ঈদগাহ মাঠ, কালের ভিটা, মেঘলাল, সুরাবাড়ি ধানসিঁড়ি স্কুল মাঠ, নছার মার্কেট, মিতালী ক্লাব, নাদের স্কুল এলাকা, আমবাগ পূর্বপাড়া, মন্ত্রী মার্কেট, আনোয়ার মোল্লার বাড়ির পাশে, কাশিমপুর জেল খানা রোড, কেয়া স্পিনিং মিল এলাকা, নোয়াব আলী মার্কেটসহ অন্তত ১৫টি স্থানে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য রাখেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম পথসভায় বলেন, আমি গাজীপুর সিটিকে পরিকল্পিত ও আধুনিক নগরী হিসেবে গড়তে চাই। কাউকে বাদ দিয়ে নয়, স্থানীয় কাউন্সিলর ও ভোটারদের মূল্যায়িত করে তাদের মতামত নিয়ে এ উন্নয়ন করা হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। ভোটারদের উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে, তারা ২৬ জুন তারিখে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করে আমায় সে সুযোগ দেবেন। আমি সবার কাছে সহযোগিতা ও ভোট প্রার্থনা করি। দুপুরে তিনি ২ নম্বর ওয়ার্ডের লোহা আলীর মাজারে জোহরের নামাজ আদায় করেন। তিনি কাশিমপুর সুরাবাড়ি ধানসিঁড়ি স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত অপর একটি পথসভায় বলেন, কাশিমপুর এলাকায় এখনও তেমন উন্নয়ন হয়নি, রাস্তাঘাট হয়নি। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক বিজয়ী হলে এখানকার সার্বিক উন্নয়নের জন্য এলাকার মুরব্বিদের নিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান করা হবে এবং সেই মোতাবেক তা বাস্তবায়ন করা হবে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সব নেতৃবৃন্দ এবং কর্মীদের ঘরে ঘরে গিয়ে নৌকা প্রতীকের জন্য ভোটারদের কাছে ভোট চাওয়ার আহ্বান জানান। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আগামী ২৬ জুন নৌকা প্রতীকের বিজয় হবে- ইনশাআল্লাহ। গণসংযোগকালে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানসহ মোঃ রেজাউল করিম ম-ল, আশরাফুল আলম আসকর, মোঃ আনোয়ার হোসেন, মোঃ আক্কাছ আলী, মোঃ শরবেশ আলী, আঃ রহমান মাস্টার, মোঃ খলিলুর রহমান, মোঃ রেজাউল করিম রাসেল, এ্যাড. মাহবুবুর রহমান, মোঃ জামাল উদ্দিন, শামসুল আলম গায়েন, সোহরাব উদ্দিন সরকার, মোঃ সায়মন সরকার, মোঃ মিজানুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এবং নির্বাহী সদস্য এসএম কামাল ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। জেলা শহরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় ইকবাল হোসেন সবুজের বাসায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নেতৃবৃন্দ আগামী নির্বাচনগুলোকে সামনে রেখে সকলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে বলে আমরা আশা করি। বিএনপি ॥ ২০ দলীয় জোটের বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার (ধানের শীষ) মঙ্গলবার মহানগরের গাছা এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচার ও গণসংযোগ শুরু করেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও মিডিয়া সেলের প্রধান ডাঃ মাজহারুল আলম জানান, ধানের শীষের প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার মঙ্গলবার নগরীর গাছা (পূর্ব) অঞ্চলের ৩২, ৩৩, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইশড্ডা, জাঝর, এ্যারাবিয়ান গার্মেন্ট, বটতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় এবং বিকেলে নগরীর টঙ্গী (পূর্ব) এলাকার টিন্ডটি, শিলমুন, মরকুনসহ সংলগ্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করছেন। এ সময় অন্যদের মাঝে জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, সিনিয়র সহসভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার, জেলা হেফাজতে ইসলামীর যুগ্ম সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিন, মোশরাফ হোসেন খান, সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, মনিরুজ্জামান লাবলু, ফারুক হোসেন খান, ইঞ্জিনিয়ার ইদ্রিস খান, জাহাঙ্গীর হাজারী, মোশারফ হোসেন ভূঁইয়াসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা হাসান সরকারের সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নেন। এর আগে সকালে হাসান উদ্দিন সরকারের বাসভবনে টঙ্গীর ১৫টি ওয়ার্ডের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সব সদস্য ও এজেন্টদের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বিএনপির বেশ কয়েক কেন্দ্রীয় নেতা ধানের শীষের পক্ষে ৫৭টি ওয়ার্ডে কর্মী সমর্থদের নিয়ে পৃথক পৃথক গণসংযোগ করেন। মঙ্গলবার বিকেলে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাড়িনাল এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এসময় তার সঙ্গে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলন, শামা ওবায়েদ, এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, রফিক শিকদার, মীর হালিমুজ্জামান ননী, সোহরাব উদ্দিন, ভিপি জয়নালসহ প্রমুখ কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া কাউলতিয়া এলাকায় গণসংযোগ করেন বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে এ্যাডভোকেট রফিক শিকদার, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে শামা ওবায়েদ, ১ নম্বর ওয়ার্ডে গৌতম চক্রবর্তী, ২ নম্বর ওয়ার্ডে আবুল কালাম আজাদসহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। গণসংযোগকালে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, খুলনা ও গাজীপুর এক নয়। গাজীপুরের বীর জনতা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে বার বার ইতিহাস রচনা করেছেন। আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও মেয়র পদে গাজীপুরবাসী ধানের শীষকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে ইতিহাস রচনা করবেন। নির্বাচনে খুলনার মতো গাজীপুরে কারচুপি করা হলে ক্ষমতাসীনদের শিকড়ে নাড়া লাগবে। গাজীপুর জেলা বিএনপি কার্যালয় প্রাঙ্গণে ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে হাড়িনালে গণসংযোগ ও পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শ্যামা ওবায়েদ, বিএনপি কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, বিএনপি কেন্দ্রীয় সদস্য ডাঃ মাজহারুল আলম, এ্যাড. রফিক শিকদার, গাজীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি মীর হালিমুজ্জামান ননী, কাপাসিয়ার থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াৎ হোসেন সেলিম, কুতুব উদ্দিন চেয়ারম্যান প্রমুখ। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ॥ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মুহাম্মদ নাসির উদ্দীনের (হাত পাখা) সমর্থনে দলের নায়েবে আমির চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহা. ফয়জুল করীমসহ সংগঠনের নেতারা শনিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে আবারও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ॥ এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের আবারও অভিযোগ করেছেন হাসান উদ্দিন সরকার। মঙ্গলবার তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগে বলেন, আমি এ যাবত নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করে আসছি। অপরদিকে গাজীপুর সিটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ও তার সমর্থকেরা একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট করছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র পদপ্রার্থী বিধি বহির্ভূতভাবে রঙ্গিন ছবিযুক্ত ফোর কালার বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার, সাইনবোর্ড মহাসড়কের দুই পাশসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্থাপন করেছেন। যা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি ॥ গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ তারিফুজ্জামান জানান, আগামী ২১ ও ২২ জুন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের প্রায় ৯ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং ২৪ জুন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫০৩ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ৪২৫টি ভোটকেন্দ্রে ৪২৫ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা (এর ৫ শতাংশ রিজার্ভ), ২ হাজার ৭৬১টি ভোট কক্ষের জন্য ২ হাজার ৭৬১ সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা (এর ৫ শতাংশ রিজার্ভ), প্রতিটি ভোট কক্ষে দুজন করে মোট ৫ হাজার ৫২২ পোলিং অফিসারসহ (এর ৫ শতাংশ রিজার্ভ) প্রায় ৯ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এসব প্রশিক্ষণ চলবে। জেলা শহরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট হাইস্কুল, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হাইস্কুল, প্রগতি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ব্রি), জয়দেবপুর সরকারী গার্লস হাইস্কুল ও রানী বিলাসমনি সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামের হলরুমে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়াও ৬ জুন গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগে যেসব কাজ শেষ হয়েছিল স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর তার অধিকাংশ কার্যক্রম পুনরায় করতে হচ্ছে। যেমন ভোটকেন্দ্র ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠান প্রধানদের চিঠি প্রদান, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনায় আচরণবিধি প্রতিপালনের চিঠি প্রদান, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগপত্র পুনরায় তৈরিকরণ ইত্যাদি। এতে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শ্রম ও ব্যয় বেড়ে গেছে। এদিকে নির্বাচনের সার্বিক ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সব কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব বুধবার গাজীপুরে যাচ্ছেন। তারা এ দিন সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলবেন। পরে তারা দুপুরে শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে প্রতিদ্বন্দ্বী সকল মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হবেন। গাজীপুরের নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট (এনডিসি) কুদরত-ই-খুদা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ তারিফুজ্জামান জানান, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ছয় কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার জন্য নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রগুলো হলোÑ চাপুলিয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (ভোটার ২৪৮০), চাপুলিয়া মফিজউদ্দিন খান উচ্চ বিদ্যালয় (ভোটার ২৫৫২), পশ্চিম জয়দেবপুরের মারিয়ালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (ভোটার ২৫৬২), মারিয়ালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-২ (ভোটার ২৮২৭), রানী বিলাসমনি সরকারী বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (ভোটার-১৯২৭) এবং রানী বিলাসমনি সরকারী বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র-২ (ভোটার-২০৭৭)। এ কেন্দ্রগুলো চূড়ান্ত হওয়ার পর ওই এলাকার ভোটারদের নিয়ে ইভিএমে ভোটগ্রহণের মহড়া দেয়া হবে। এছাড়া গাজীপুর সরকারী মহিলা কলেজ কেন্দ্র, কানাইয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকার বসির উদ্দিন উদয়ন একাডেমি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
×