ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেটেও অগ্রাধিকার পাচ্ছে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাত

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১ জুন ২০১৮

বাজেটেও অগ্রাধিকার পাচ্ছে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত কয়েক বছরের মতো আসছে বাজেটেও অগ্রাধিকার তালিকায় থাকছে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাত। বৃহৎ বিদ্যুত প্রকল্পের জন্য বিশেষ বরাদ্দের পাশাপাশি জ্বালানি সঙ্কট কাটাতে থাকছে নানা পরিকল্পনা। তবে প্রকল্প বরাদ্দ ও বাস্তবায়নে জ্বালানি খাত অবহেলিত থাকছে উল্লেখ করে এডিপি বাস্তবায়নে দুই খাতে সামঞ্জস্য রাখার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন আর বিদ্যমান জ্বালানি সঙ্কট কাটানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে নির্বাচনের বছরের বাজেটেও গুরুত্ব পাচ্ছে বিদ্যুত-জ্বালানি খাত। আসছে বাজেটে এ খাতের সম্ভাব্য বরাদ্দ ২৬ হাজার ২২৫ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। যদিও বিদ্যুত ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় বরাদ্দ চেয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ ঘোষিত বাজেটে সম্ভাব্য বরাদ্দ বিদ্যুত খাতে ১৮ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা থেকে ২২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা, জ্বালানি খাত ২ হাজার ২২৪ কোটি টাকা থেকে ৩ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা। মোট ২১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা ২৬ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। আসছে বাজেটে রামপাল, মাতারবাড়ি ও পায়রার মতো বৃহৎ বিদ্যুত প্রকল্পের জন্য থাকছে বিশেষ বরাদ্দ। সিস্টেম লস একক অঙ্কে নামিয়ে আনতে গুরুত্ব পাবে সঞ্চালন ও বিতরণ খাতের উন্নয়ন। জ্বালানি সঙ্কট কাটাতে থাকছে গ্যাস অনুসন্ধানের দিক নির্দেশনা। গভীর সমুদ্র থেকে কম খরচে দ্রুত জ্বালানি তেল খালাস করতে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং পাইপলাইন, ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে পাইপলাইন স্থাপনের রূপরেখাও থাকবে আসছে বাজেটে। জ্বালানি, খনিজ এবং বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত অব্যাহত রাখা। যদি দুই বছরে পারি তাহলে সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এখান প্রচুর কাজ। প্রচুর অর্থ ব্যয়। আমি বলব এটা ব্যয় নয় বরং বিনিয়োগ।’ তিনি আরও জানান, ‘ভোলার গ্যাস আসতে আরও দেড় বছর লাগবে। এজন্য আমরা পরিকল্পনা করছি বরিশালে বিদ্যুত কেন্দ্র করা যায় কি না।’ চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বিদ্যুত খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী বা এডিপি বাস্তবায়নের হার প্রায় ৮০ শতাংশ হলেও বরাদ্দের অর্ধেক অর্থও খরচ করতে পারেনি জ্বালানি বিভাগ। তাই বিদ্যুত খাতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি খাতের এডিপি বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। চলতি অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়ন জুলাই ২০১৭ থেকে এপ্রিল ২০১৮ পর্যন্ত বিদ্যুত খাতে ৭৯.৫১ শতাংশ, জ্বালানি খাতে ৪৭.২১ শতাংশ। ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘বিদ্যুত উৎপাদন করার জন্য যদি জ্বালানির সংস্থান না করা যায় তাহলে কোন লাভ নেই।’ তিনি দাবি করেন, জ্বালানি বিভাগ ও বিদ্যুত বিভাগ সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যভাবে কাজ করছে।’ এছাড়া বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ আরও বাড়ানো উচিত বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত আর টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তার লক্ষ্য পূরণে বাজেট বাস্তবায়নে যেমন দক্ষতা ও গতিশীলতা প্রয়োজন, একই সঙ্গে এ খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপরও জোর দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। সেক্ষেত্রে প্রকল্প বরাদ্দে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিতের কোন বিকল্প নেই।
×