স্টাফ রিপোর্টার ॥ শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফকে ছেড়ে দেয়া হলেও খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সৈনিক খালেদা জিয়া আজ কারাগারে, আর দাপটে রয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এদিকে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দুপুরে কাওরান বাজার এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে পোশাক বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকার তার ইচ্ছাপূরণের জন্য বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে।
রিজভী অভিযোগ করেন, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোঃ খাদেমুল ইসলাম খাদেমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল হাজারীবাগ থানা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুল আজিজের বাসভবনে গিয়ে তার বড় ভাই এবং বাসার সদস্যদের বলে এসেছে যে, তিন দিনের মধ্যে আবদুল আজিজ থানায় সাক্ষাত করতে না এলে তাকে মেরে ফেলা হবে এবং বুলডোজার দিয়ে তার বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা হবে। পাশাপাশি আবদুল আজিজ যেন অবিলম্বে আওয়ামী লীগে যোগদান করে, সেটির জন্যও হুমকি দেয়া হয়।
রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন যে আটকে রাখা হয়েছে, এটা একমাত্র সরকার প্রধানের কথামতোই হচ্ছে। আর কারও কোন হাত নেই এখানে। তিনি চান খালেদা জিয়াকে যতদিন পারা যায়, কষ্ট দেবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালত যা করছে, শেখ হাসিনার কথামতো ও নির্দেশেই করছে।
রিজভী বলেন, বুধবার ইফতারের পরপরই চট্টগ্রামে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদের চৌধুরীর গুডস হিল পৈত্রিক নিবাসে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী আক্রমণ চালায়। সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ব্যাপকভাবে গাড়ি ভেঙ্গে চুরমার করা ছাড়াও বাড়ির দরজা-জানালা ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এই হামলায় ২০টি ব্যক্তিগত গাড়ি ও নিরাপত্তা প্রহরীদের বাসাসহ মূল ভবনেও ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও তারা সেখানে দর্শকের ভূমিকা পালন করে। এ সময় বাসার চারদিকের সিসি ক্যামেরাও ভেঙ্গে ফেলে সন্ত্রাসীরা।
বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারাই আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করবে তাদের সাইজ করা হবে এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের কাজ। তিনি বলেন, অপরাধীকে প্রশ্রয় দিয়ে সরকার সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে বেআইনী পন্থায়। পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে দলীয় অপরাধীদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জীবন ও সহায়-সম্পদসহ সবকিছু বিপন্ন করার। তাই ক্ষমতার শীর্ষ ব্যক্তিদের আসকারা পেয়ে এলাকায় এলাকায় মাফিয়া ডন এ পরিণত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
সরকার তার ইচ্ছাপূরণের জন্য বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছেÑ নজরুল ॥ সরকার তার ইচ্ছাপূরণের জন্য বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, জামিনযোগ্য মামলায়ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে কাওরান বাজার এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে পোশাক বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ যেহেতু ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাই তিনি শুধু মুক্তি পেয়েছেন। তিনি বিদেশে চিকিৎসার সুযোগও পাবেন। আর খালেদা জিয়া, যিনি এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী তার জামিনের আবেদন শুনানি খালি আজ না কাল, কাল না পরশু করে তাকে যত বেশিদিন পারা যায় জেলখানায় রাখা হচ্ছে। তিনি যেন এতই অসুস্থ হন যাতে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের সবচেয়ে দুর্ভাগ্য যে সরকার তার ইচ্ছাপূরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে আমাদের দেশের বিচার বিভাগকে। সরকারের মূল লক্ষ্য খালেদা জিয়াকে ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা। তাই নানা কৌশলে তার জামিন আটকে দেয়া হচ্ছে, অন্যদিকে দলীয় বিবেচনায় ছেড়ে দেয়া হচ্ছে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: