ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ম্যাজিস্ট্রেট স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশ স্ত্রীর নানা অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ২৩ মে ২০১৮

ম্যাজিস্ট্রেট স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশ স্ত্রীর নানা অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ পুলিশের এক নারী কনস্টেবল তার স্বামী সহকারী কমিশনার খন্দকার রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, যৌতুক দাবিসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোর কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে যশোরের অভয়নগর উপজেলার ধুলগ্রামের বাসিন্দা পুলিশ কনস্টেবল পারুল আক্তার লিখিতভাবে এসব অভিযোগ উত্থাপন করেন। তবে স্বামী রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত সহকারী কমিশনার (ম্যাজিস্ট্রেট) খন্দকার রবিউল ইসলাম তার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘পারুল মানসিকভাবে অসুস্থ। গত ২২ এপ্রিল তাকে তালাক দিয়েছি। আমি চাই, সে তার খোরপোষ বাবদ যে টাকা হয়, তা গ্রহণ করুক।’ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পারুল অভিযোগ করেন, তার স্বামী রবিউল একই উপজেলার নাউলি এলাকার বাসিন্দা। কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় থেকে তার সঙ্গে সর্ম্পর্ক। ২০১০ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করেন। সেই সময় থেকে প্রতিমাসে তিনি পড়াশুনা বাবদ পাঁচ হাজার করে টাকা দিতেন রবিউলকে। ২০১৩ সালের ২৪ নবেম্বর তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে তাকে দুই লাখ টাকা দেন দাবি করে পারুল বলেন, সেই সময় তারা ঢাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। বিয়ের প্রায় এক বছর পর রবিউল (১০ আগস্ট ২০১৪, ৩৩তম বিসিএস) চাকরিতে যোগ দেন। পারুল বলেন, ‘জাতিসংঘ মিশনে এক বছর থাকার পর সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে সেই সময় দশ লাখ টাকা দিই রবিউলকে। সেই সময় স্বামীর কর্মস্থল পটুয়াখালীতে থাকতাম। এক সময় রবিউল জোর করে আমাকে পুলিশে চাকরি থেকে ইস্তফা দেয়ান।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, চলতি বছরে ২৯ মার্চ তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা জোর করে তাকে ওষুধ খাইয়ে তার গর্ভপাত ঘটান। স্বামীকে ‘যৌতুকলোভী, সন্তান হত্যাকারী, নারী নির্যাতনকারী’ আখ্যা দিয়ে তার শাস্তি ও ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন পারুল। এ দিকে, পারুলের অভিযোগ বিষয়ে জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হয় খন্দকার রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পারুলের সঙ্গে আমার বনিবনা হতো না। সে আমাকে শারীরিক ও মানসিক দুইভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমি তাদের অনেক সহায়তা করেছি। সে প্রচ- সন্দেহবাতিকগ্রস্ত মেয়ে। পটুয়াখালী থাকাকালে (ইউএনওর দায়িত্বে) স্কুলের প্রশ্নপত্র বের করার জন্যে বাড়ির বাইরেও যেতে দেয়নি পারুল। সে আমাকে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়। সেই সময় সেখানকার জেলা প্রশাসকসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা বিষয়টি অবহিত ছিলেন।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘তার কারণে আমার সত্তরোর্ধ বাবা-মা কষ্টে ছিলেন। আমি তাকে পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রও কিনে দিয়েছি।’ রবিউল যৌতুক দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার এক ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, আরেকজন মেডিক্যালে পড়ে। বড় বোন ও ভগ্নিপতি ইংল্যান্ডে থাকেন। তারাই আমাদের পড়াশুনার বিষয়টি দেখতেন।’
×