ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে তারকারা যা বললেন

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৭ এপ্রিল ২০১৮

চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে তারকারা যা বললেন

‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’ প্রদানের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয় বৃহস্পতিবার। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে গৌরবোজ্জ্বল ও অসাধারণ অবদানের স্কীকৃতিস্বরূপ এটিই একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ পুরস্কার। যারা এবার এ পুরস্কারের কৃতিত্ব অর্জন করেছেন তাদের কয়েকজনের অনুভূতি নিয়ে আয়োজনটি করেছেন -গৌতম পান্ডে আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন যুগ্মভাবে অভিনয়শিল্পী আকবর হোসেন পাঠান ও ফরিদা আক্তার। চিত্রনায়ক ফারুক : আকবর হোসেন পাঠান, যিনি ফারুক নামেই সমধিক পরিচিত। ‘মিয়াভাই’ খ্যাত ফারুক যেমন চলচ্চিত্রের পর্দায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন কয়েক দশক, তেমনি তার নেতৃত্বে বারবার নানা সমস্যার মোকাবেলা করেছে এদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি। সর্বশেষ চলচ্চিত্র পরিবার গঠনের পর তারও হাল ধরেন তিনি। আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন এটা জেনে তিনি বলেন, এখনও কিছু বলার সময় হয়নি। আমাদের দেশপ্রেম, চলচ্চিত্র প্রেমসহ সব আদর্শেই মন্দা লেগে গেছে। এ পুরস্কার আমার আরও আগে পাওয়া উচিত ছিল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের উপর নির্ভর করে একটা জীবনতো চলচ্চিত্রের পেছনেই কাটিয়ে দিলাম। তার হাত ধরেই তো এসেছিল চলচ্চিত্র শিল্প। তার এনে দেয়া শিল্পকে বাঁচাতে সেই যে ঝাঁপ দিয়েছিলাম, আজও সাঁতার কেটে চলেছি। সেই মূল্যায়নটা কে করেছে শুনি? আমি মনে করি যেদিন প্রধানমন্ত্রী কাউকে এই সম্মাননা দেবেন সেদিন সেই মানুষটা হবেন একজন রাজার মতো। তার আনন্দ হবে রাজ্য জয়ের। তিনি হবেন অন্য সবার চেয়ে আলাদা, অধিক সম্মানের। এ পুরস্কারটি অনেক সম্মানের। তবে এটুকু বলতে পারি, আমরা সম্মান দিতে জানি। এরচেয়ে এখন আর কিছু বেশি বলতে চাই না। চিত্রনায়িকা ববিতা : ফরিদা আক্তার, যিনি ববিতা নামেই পরিচিত। আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন বহুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই নায়িকা। এ সম্মাননাকে সেরা অর্জন হিসেবে বিবেচনা করে ববিতা বলেন, চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য এর আগেও পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু এবার যে পুরস্কারটি দেয়া হচ্ছে সেটা আমার পুরো অভিনয় জীবনের জন্য। আগের সব পুরস্কার পাওয়ায় ছিল অনেক আনন্দের কিন্তু সারা জীবনের কাজের জন্য রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়া আরও বেশি সুখের। এই খবরটি শুনে মনে হচ্ছে চলচ্চিত্রের জন্য কিছু একটা করতে পেরেছি। দর্শকের অনেক ভালবাসা পেয়েছি। রাষ্ট্রীয় সম্মান পেয়ে অনেক ভাল লাগছে। তার মানে এই নয় আমি এখানেই থেমে যাব। আমি মনে করি আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে আমাকে। সেই সুযোগ আমার কাছে আছে। ভাল কাজের করা সুযোগ আসলে অবশ্যই করব। যাদের অনুপ্রেরণা ও সাহচর্যে আমি চলচ্চিত্রাঙ্গনে অবদান রাখতে পেরেছি তাদের সবাইকে আমার শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানাই। সর্বোপরি অভিনয়ের বাইরেও যিনি আমাকে পরিবারের একজন মানুষ হিসেবেই সহযোগিতা করেছেন তিনি হচ্ছেন আমাদের নায়ক রাজ রাজ্জাক। বিশ্ববরেণ্য অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের প্রতি আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ, কারণ তার ‘অশনি সংকেত’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমার পরিচিতি গড়ে উঠে। আমার একমাত্র সন্তান অনিকই এখন আমার পৃথিবী, আমার বেঁচে থাকার প্রেরণা। অবশ্যই এদেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ তাদের ভালবাসা, উৎসাহে আমি আমার নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গেছি। হয়েছি আজকের পরিপূর্ণ ববিতা। অভিনেতা ও নির্মাতা তৌকীর আহমেদ : তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিটি সেরা ছবি হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছে এবার। এছাড়া শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে ছবিটির জন্য পুরস্কার পাচ্ছেন তৌকীর আহমেদ। পুরস্কার প্রাপ্তিতে তিনি বেশ উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, যে কোন পুরস্কার প্রাপ্তি সব সময়ই আনন্দের বিষয়। ছবিটি দর্শকের অনেক ভালবাসা পেয়েছে মুক্তির পরে। এবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেল তিন বিভাগে। এটা আমার ছবির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। অনেক অনেক ভাল লাগছে সুখবরটি জেনে। তিনি বলেন, এর আগে বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছে ছবিটি। তবে আমার দেশের সেরা রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের অনুভূতিটাই অন্যরকম। তবে আরও আগে পুরস্কারটি পাওয়া উচিত ছিল। অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী : ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য এবার সেরা অভিনেতার পুরস্কার পাচ্ছেন চঞ্চল চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমার এই পুরস্কারটি দর্শকদেরই পাওনা। তারা কষ্ট করে হলে এসে সিনেমা দেখেছেন। সিনেমাকে ভালবেসে ও আমাদের ভালবাসে দেশের সিনেমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তারাই। মন্দার বাজারে তারা আমার ছবিটিকে বেছে নিয়েছেন ভাল লাগার ছবি হিসেবে। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। তিনি আরও বললেন, আমি এর আগেও ‘মনপুরা’ ছবির জন্য এই পুরস্কার পেয়েছি। এবার ‘আয়নাবাজি’ আমাকে এই সম্মান এনে দিল। ‘আয়নাবাজি’র নির্মাতা অমিতাভ রেজাসহ ছবিটির পুরো টিম ও আমার প্রিয় দর্শকের কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সবচেয়ে বড় ভাল লাগার ব্যাপারটি হলো আমাদের চলচ্চিত্র এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় আয়োজনে চলচ্চিত্রের উপর সবচেয়ে বড় সম্মান এই পুরস্কার। অনেক ভাল লাগছে এটা পেয়ে। এই খুশি প্রকাশ করার ভাষা আমারা জানা নেই।
×