ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে ইকামা ফি

সৌদিতে ১২ কাজে বাংলাদেশী কর্মী বাদ

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ৯ মার্চ ২০১৮

 সৌদিতে ১২ কাজে বাংলাদেশী কর্মী বাদ

ফিরোজ মান্না ॥ অবশেষে ১২ ধরনের কাজ থেকে বাংলাদেশী কর্মীদের সরিয়ে দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে চলতি মাস থেকে ইকামা ফি দ্বিগুণ করা হয়েছে। এখন প্রতিমাসেই বেতন থেকে অর্ধেকের বেশি টাকা ইকামা ফি বাবদ কেটে নেয়া হবে। সৌদি সরকার কর্মীদের ওপর নতুন নিয়ম চালু করে এ বছরের শুরুতে। এ অবস্থায় কর্মীরা সৌদিতে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। বর্তমানে বহু কর্মী দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করলেও কোন লাভ হয়নি। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, রাজস্ব বাড়ানোর জন্যই তারা এমন ব্যবস্থা নিয়েছে। সূত্র জানায়, সৌদি আরবে প্রবাসী কর্মীদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশটিতে প্রবাসী কর্মীদের ১২ ধরনের কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সৌদি সরকার। সম্প্রতি সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয় এই নিষেধজ্ঞা জারি করেছে। এ ঘোষণার পর কর্মীদের মধ্যে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। সৌদি নাগরিকদের কাজের ক্ষেত্র তৈরি করতেই প্রবাসী কর্মীদের ১২ ধরনের কাজ থেকে বিরত রাখা হচ্ছে। এ ঘোষণায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশী কর্মীরা। ইতোমধ্যে সৌদিতে ব্যবসা বাণিজ্য থেকে বাংলাদেশীদের অনেক সংকুচিত করে দিয়েছে। বাংলাদেশি কর্মীরা মনে করছেন, তাদের অনেকেই কাজ হারিয়েছে। বর্তমানে হাজার হাজার কর্মী ১২ ধরনের কাজের বাইরে নতুন করে কাজ খুঁজছেন। দেশটিতে ১২ ধরনের কাজের বাইরে যেসব কাজ রয়েছে তা ‘ওয়াটজব’। ওয়াটজবে দক্ষ কর্মীরা যেতে চাইছে না। তারা অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছে। তারা যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ না পেলে তাদের দেশে ফেরা ছাড়া আর কিছু করার নেই। বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলেছে, সৌদি আরব গত কয়েক বছর ধরেই তাদের বাজেট ঘাটতিতে চলছে। বিদেশী কর্মীদের কয়েক ধরনের কাজ থেকে সরিয়ে তাদের নাগরিকদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। বেকার সমস্যা দূর করার জন্যই তারা মূলত এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এতে বাংলাদেশের শ্রম বাজারে কোন প্রভাব পড়বে না। কারণ দেশটিতে নানা ধরনের কাজ রয়েছে। ওই সব কাজে বাংলাদেশ থেকে তাদের বিপুলসংখ্যক কর্মী প্রতি বছরই নিতে হবে। সূত্র মতে, নারী-পুরুষ, শিশুদের রেডিমেড সব কাপড়ের দোকান, ক্রোকারিজ সামগ্রীর দোকান, গাড়ির শোরুম, গাড়ির পার্টসের দোকান, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির দোকান, হাসপাতাল, যন্ত্রপাতির দোকান, চকোলেট বা মিষ্টির দোকান, গৃহ নির্মাণ সামগ্রীর দোকান, চশমার দোকান, ঘড়ির দোকান, কার্পেট পাপোষ ও ফার্নিচারের দোকানে লাখ লাখ বাংলাদেশী কর্মরত রয়েছেন। এসব পেশায় বাংলাদেশীদের চাকরির সীমাব্ধতা তৈরি করা হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য অভিবাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দেশের মানুষই দেশের সম্পদ। তারা বিশ্বের ১৬৫ দেশে শ্রম ঘাম দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশে পাঠাচ্ছেন কর্মীরা। তাদের টাকায় দেশের অর্থনীতি প্রতিনিয়ত সুসংহত হচ্ছে।
×