ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিয়াল কিলার রসু খাঁসহ ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৭ মার্চ ২০১৮

সিরিয়াল কিলার রসু খাঁসহ ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর, ৬ মার্চ ॥ চাঁদপুরে পারভীন আক্তার হত্যা মামলায় দেশব্যাপী আলোচিত সিরিয়াল কিলার রসু খাঁ (৪৫), জহিরুল ইসলাম (৩৫) ও মোঃ ইউনুছ (৩৮) কে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (৬ মার্চ) দুপুর ১২টায় চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) আবদুল মান্নান এ রায় দেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত রসু খাঁ চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের মদনা গ্রামের মুন খাঁ ওরফে আবু খার ছেলে, জহিরুল পার্শ্ববর্তী ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের সৈয়াল বাড়ির মোঃ মোস্তাফার ও ইউনুস একই গ্রামের মৃত মিসির আলীর ছেলে। হত্যার শিকার পারভীন আক্তার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের পালতালুক গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী। তার পিতার নাম মৃত কাজল খান। মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২০ জুলাই রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে রসু খাঁ ও অপর আসামিরা ফরিদগঞ্জ উপজেলার মধ্য হাঁসা গ্রামের নির্জন মাঠে পারভীন আক্তার নামে নারীকে ধর্ষণ করে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনার পরদিন স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা পারভীনের বাম স্তনে ও দুই পায়ের উরুতে ২০টি সিগারেটের ছ্যাঁকার দাগ ছিল। পারভীন অজ্ঞাতনামা হওয়ার কারণে ২১ জুলাই ২০০৯ তৎকালীন সময়ের ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মীর কাশেম আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরণে আরও জানা যায়, সদর উপজেলার মদনা গ্রামের ছিঁচকে চোর রসু খাঁ ভালবাসায় পরাস্ত হয়ে এক সময় সিরিয়াল কিলারে পরিণত হয়। ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর ফরিদগঞ্জ উপজেলার গাজীপুর বাজার উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন মসজিদের ফ্যান চুরির ঘটনায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর এক এক করে তার লোমহর্ষক হত্যাকা-ের চিত্র বেরিয়ে আসে। নিজের মুখে স্বীকার করে ১১ নারী হত্যার কথা। পরে তাকে এবং সহযোগী দুইজনকে পারভীন হত্যা মামলায় আসামি করা হয়। আটকের আড়াই মাস পূর্বে পারভীনকে হত্যা করা হয়। টার্গেট ছিল ১০১টি হত্যাকা- ঘটানোর। রসু যাদের হত্যা করেছে তারা সবাই ছিল গার্মেন্টস কর্মী। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোশফিকুর রহমান ঘটনা তদন্ত শেষে একই সালের ১৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট হাবিবুল ইসলাম তালুকদার জানান, মামলাটি দীর্ঘ ৯ বছর চলমান থাকা অবস্থায় আদালত ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন এবং আসামিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করায় নারী ও মিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর (৯) এর ৩ ধারা এবং দ-বিধি ৩০২/৩৪ ধারায় এই রায় প্রদান করেন। রসু খাঁর বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়াও আদালতে আরও ৭টি মামলা রয়েছে।
×