ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লোডশেডিংয়ে শিল্পে বছরে ১০০ কোটি ডলারের ক্ষতি

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

লোডশেডিংয়ে শিল্পে বছরে ১০০ কোটি ডলারের ক্ষতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রাথমিক এনার্জির উৎসে পৌঁছানো ক্রমেই দুরূহ হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে দ্রুত প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত ফুরিয়ে যাওয়া এবং স্থানীয় কয়লা উত্তোলনে কোন রকম উদ্যোগ না নেয়া। ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ আমদানিকৃত জ্বালানির ওপর ৯২ শতাংশ নির্ভরশীল হবে। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) ত্রৈমাসিক বুলেটিনের (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০১৭) সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রবিবার আইসিসিবি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের জ্বালানি পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করা হয়। বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উত্তরের জেলাগুলোর পাঁচটি কয়লা খনিতে তিন বিলিয়ন টন উন্নত মানের কয়লা মজুত থাকা সত্ত্বেও সরকার কয়লা আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এবং জ্বালানি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা কম ঝুঁকি ও খরচ বিবেচনায় ‘ওপেন-পিট’ মাইনিংয়ের জন্য সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু এ পদ্ধতির বিরোধিতাকারীদের তীব্র আপত্তির মুখে কেউ এ ব্যাপারে অগ্রসর হচ্ছে না। উল্লেখ্য, ২০৪১ সালের মধ্যে ২২ হাজার মেগাওয়াট আমদানিকৃত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ চলমান আছে। কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে প্রতিবছর ৬৬ মিলিয়ন টন কয়লার প্রয়োজন হবে। সরকার মোটরগাড়িতে বাৎসরিক ৪০ মিলিয়ন টন ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লা ট্রান্সফার টার্মিনাল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া রূপপুরে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট নিউক্লিয়ার বিদ্যুত কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ৩০ নবেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে বিদ্যুত উৎপাদন কার্যকর এবং সাশ্রয়ী করতে আমদানিকৃত কয়লার পরিবর্তে স্থানীয় উচ্চমান কয়লা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে তহবিল সংকোচনের প্রতিশ্রুতি থাকলেও চীন, ভারত, জাপান, ফিলিপিন্স ও ভিয়েতনামসহ অন্যান্য এশিয়ান দেশগুলো তাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য ক্রমশ কয়লার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশ্ব কয়লা এ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে বর্তমানে চীন, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের ৭১ শতাংশ নতুন উদ্ভাবিত কয়লা পোড়াচ্ছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে লোডশেডিং ব্যবস্থাপনা ব্যর্থতার জন্য শিল্প উৎপাদন এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকা- মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, লোডশেডিংয়ের ফলে শিল্প খাতে প্রতি বছর ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হচ্ছে। একই কারণে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ০.৫ শতাংশ কম হচ্ছে। এছাড়া মোট বিদ্যুত উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশ সঞ্চালন এবং বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটির জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার বাৎসরিক মূল্য ২৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান। উপযুক্ত অবকাঠামো এবং কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষভাবে বিদ্যুত সরবরাহের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।
×