ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

- প্রদীপ কুমার রায়, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) থেকে

রায়পুর

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২০ জানুয়ারি ২০১৮

রায়পুর

পান চিবানু রসে টুক টুক লাল দুটি দাঁতই দেখা যাচ্ছিল রায়পুর উপজেলার ২নং চরবংশী গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল জলিলের। পানের রস বেয়ে বেয়ে পড়ছিল নিচে। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। দুহাত দিয়ে ছেলের গা মুছে দিচ্ছিলেন। তাঁর কষ্ট করে শ্বাস নেয়া ধীরে ধীরে সহজ হয়ে যায়। ছেলের সৌদি যাওয়ার ভিসা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে চেক করে নিশ্চিত হয়েছেন তিনি। তাই তাঁর এত উচ্ছ্বাস। ১৫ জানুয়ারি রায়পুর উপজেলার ২নং উতাতর চরবংশী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের বিভিন্ন সেবা প্রান্তিক মানুষ কীভাবে পাচ্ছে তা দেখতে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র। সেবাগ্রহীতা চরবংশী গ্রামের ফিরোজ বলেন, আমি ওমান প্রবাসী ১৪ জানুয়ারি কুয়েত এয়ার ওয়েজের টিকেট ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে রিকনর্ফাম করেছি। আগে ঢাকায় ছাড়া এ কাজ কোন ভাবেই সম্পন্ন করা সম্ভব ছিল না। পল্লী বিদ্যুতের মিটারের জন্য আবেদনকারী রুহুল আমিনের পুত্র রাশেদ খলিফা বলেন, আমরা হয়রানি ঘুষ দুটো থেকেই বেঁচে গেছি। উপজেলা সদরে আবেদনে আগে দালাল ধরতে হতো। আমরা খুশি। রায়পুর উপঝেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি মেঘনা তীরবর্তী চরাঞ্চল। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব প্রান্তিক মানুষ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সেবা নিয়ে এখন যাবতীয় কাজ করছে। উপজেলা সদরে এখন আর তাদের আসতে হয় না। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১১ নবেম্বর প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয় থেকে এবং নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী (ইউএনডিপি)’র প্রশাসক মিস হেলেন ক্লার্ক ভোলা জেলার চর কুকরিমুকরি ইউনিয়ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদে একটি করে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) একযোগে উদ্বোধন করেন। ইউডিসির মূল লক্ষ্য হলো, ইউনিয়ন পরিষদকে একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা, যাতে এই সব প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালের মধ্যে একটি তথ্য ও জ্ঞানভিত্তিক দেশ প্রতিষ্ঠায় যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারে। পাশাপাশি এই সব কেন্দ্র সরকারী-বেসরকারী তথ্য ও সেবাসমূহ জনগণের কাছাকাছি নিয়ে যেতে, প্রযুক্তি বিভেদ দূর করতে ও সকল নাগরিককে তথ্যপ্রবাহ আধুনিক ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করতে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখতে পারে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্র জানায়, চরবংশী ইউনিয়নসহ উপজেলার ১০টি থেকে এখন ১০৬ ধরনের সেবা পাচ্ছে গ্রামের মানুষ।
×