ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ইতোমধ্যে তহবিলে এক কোটি ৩০ লাখ ডলার সংগৃহীত

যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে লড়তে নতুন উদ্যোগ ‘টাইমস আপ’

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ৩ জানুয়ারি ২০১৮

যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে লড়তে নতুন উদ্যোগ ‘টাইমস আপ’

চলচ্চিত্র শিল্প ও অন্যান্য কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে তিন শ’র বেশি অভিনেত্রী, লেখক ও পরিচালক সম্মিলিতভাবে এক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। খবর-বিবিসি গৃহীত এই উদ্যোগের নাম দেয়া হয়েছে ‘টাইম’স আপ’-(এখনই সময়)। নিউইয়র্ক টাইমসে পূর্ণ পৃষ্ঠার এক বিজ্ঞাপনী প্রচার কার্যক্রমে টাইমস আপ’-এর কথা ঘোষণা করা হয়। হলিউড ভিত্তিক এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে, সর্বত্র নারীদের বিনোদনমূলক কর্মকা-ে ব্যবহার করার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ পড়ে তোলাই হবে এর লক্ষ্য। বিখ্যাত চলচ্চিত্র প্রযোজক হার্ভে ওয়েনটিন বিরুদ্ধে নামীদামী চলচ্চিত্র অভিনেত্রীদের যৌন হয়রানিমূলক অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্মক্ষেত্রে যৌন নিগৃহ প্রতিরোধে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গৃহীত হয়। এ সংক্রান্ত প্রকাশিত এক ওয়েবসাইটে নির্যাতিতাদের প্রতি “সংহতি পত্রে” টাইমস আপ থেকে বলা হয়, এখন থেকে নারীদের চরম অবমাননা ও দুর্দশা থেকে উঠে দাঁড়ানোর গল্প শোনার অধ্যায় শেষ করে একচ্ছত্র যৌনাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। টাইমস আপের এই বিজ্ঞপ্তিতে যে সব নারী আত্মরক্ষার্থে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আগ্রহী তাদের উদ্দেশে বলা হয়, এ ধরনের হয়রানি চলতেই থাকবে যদি না অপরাধী চাকরিদাতা বা নিয়োগকর্তা কোন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সম্মুখীন হয়। নারী নিগৃহবিরোধী এই প্রকল্প নাটানি পোর্টম্যান রিজ উইদারগপুন, কেট ব্লেনচেট, ইভা নংগোরিয়া ও এমা স্টোনসহ শত শত অভিনেত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় ইতোমধ্যেই এক কোটি ৩০ লাখ ডলার তহবিল সংগ্রহ করে ফেলেছে। শুরুতে তহবিল গঠনের মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল দেড় কোটি ডলার সংগ্রহ করা। এতে নিগৃহিতাদের সাহায্য করার জন্য সকলের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ ও ঐকান্তিক ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়। সংগৃহীত এই অর্থ কর্মক্ষেত্রে নিগৃহীত নারী-পুরুষ সকলের জন্যই ব্যয়িত হবে। প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয়বহুল আইনী সহায়তাদানে এই অর্থ বেশ কাজে লাগবে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। এই প্রকল্পের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে, রেস্টুরেন্ট ও পানশালার ওয়েট্রেস, বাড়ি বা সংস্থার কেয়ারটেকার, কৃষি বা কারখানা শ্রমিকের মতো কর্মজীবী যারা পরিস্থিতির চাপে পড়ে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হয় না তাদের পাশে দাঁড়ানো। লিঙ্গ বৈষম্য দূর ও ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার বিরুদ্ধে লড়াই চালানোও টাইমস্ আপ প্রকল্পের লক্ষ্য। তবে নারীর ক্ষমতায়ন ও বেতন কাঠামোয় সমতা আনার দিকে সংস্থাটি বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। গত ডিসেম্বরে ‘সাইলেন্স ব্রেকার’ অর্থাৎ একদিনের নীরবতা ভেঙ্গে যেসব নারী-পুরুষ যৌন নির্যাতন ও হয়রানির কথা প্রকাশ করেছেন তাদের নিয়ে টাইম ম্যাগাজিন ২০১৭ সালের ‘পার্সন অব দ্য ইয়ার’ নামে এক প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। এছাড়াও গত বছরে যৌন নির্যাতিতা ও হয়রানির শিকার নারী পুরুষ তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা ‘মি ট’ হ্যাশট্যাগে প্রকাশ করার ফলে বিশ্বব্যাপী এর প্রতিরোধে জনমত সৃষ্টি হয়। গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই হ্যাশট্যাগ টুইটার ও ফেসবুকে ষাট লাখের চেয়ে বেশিবার ব্যবহৃহ হয়। এছাড়াও অভিনেত্রী এলিসা মিলানো টুইটার বার্তায় যৌন নিগৃহের শিকার সবাইকে এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশের আহ্বান জানালে ‘টাইমস আপ’ প্রকল্পে গতি সঞ্চার হয়।
×