ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৫২ গ্রেফতার, যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা ॥ সরকারের পক্ষে গণমিছিল

স্বতঃস্ফূর্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইরান

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

স্বতঃস্ফূর্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইরান

ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বেশ কয়েকটি শহরে শনিবার তৃতীয়দিনের মত সরকারবিরোধী ৫২ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কেরমানশাহ, রাশত, ইস্পাহান ও কোমা শহরের বিক্ষোভে হাজার হাজার লোক যোগ দিয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে সরকারবিরোধী ৫২ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তেহরানকে বলেন, বিশ্ব ইরান সরকারের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করছে। -খবর এএফপি, বিবিসি ও ইন্টারনেটের। টুইটারে ট্রাম্প বলেন, ইরান বিদেশে সন্ত্রাস দমনের নাম করে প্রতিবেশী দেশগুলোর আঞ্চলিক অখ-তা তছনছ করে দিচ্ছে। ইরানের সরকারকে নিজেদের দুর্নীতি প্রকাশ করে জনগণের সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানান উচিত। সারাবিশ্ব ইরানের রাজনীতি দেখছে। বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতারে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা ইরানের জনগণের মৌলিক অধিকার এবং দুর্নীতি বন্ধে সমর্থন দিতে সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ২০০৯ সালে বিতর্কিত নির্বাচনের পর হওয়া বিক্ষোভের পর এবারের বিক্ষোভকেই জন অসন্তোষের সবচেয়ে গুরুতর ও ব্যাপক অভিব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করছেন পর্যবেক্ষকরা। বিক্ষোভের শুরুর দিকে অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও দুর্নীতি আন্দোলনকারীদের মনোযোগের কেন্দ্রে থাকলেও পরে তা রাজনৈতিক দিকে মোড় নেয়। দেশজুড়ে বিক্ষোভের জন্য আন্দোলনকারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেও ব্যবহার করছেন। অন্যদিকে অবৈধ সমাবেশের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। ইরানের এ রকম স্বতঃস্ফূর্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভ বেশ বিরল। ইরানের বিপ্লবী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এরকম বিক্ষোভ যাতে না হতে পারে সেজন্য বেশ সতর্ক থাকে। সরকার এজন্য প্রতি বিপ্লবী ও বিদেশী এজেন্টদের দায়ী করেছে। এক জরিপে দেখা যাচ্ছে, গত দশ বছরে গড়ে একজন ইরানির আয় প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। ইরানে শনিবার সরকারের সমর্থনে বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ মিছিল করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে দুই দিনের বিক্ষোভের পর শনিবার সরকার সমর্থকরা তাদের শক্তি প্রদর্শন করল। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখা গেছে, কালো কাপড় পরা সরকারের বিপুলসংখ্যক সমর্থক রাজধানী তেহরান, দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী মাশাদ ও আরও কয়েকটি শহরে জমায়েত হয়েছে। ‘প্রজাবিদ্রোহ’ সমাপ্তির বার্ষিকী উপলক্ষে তারা এই মিছিল বের করে। ২০০৯ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পর ওটাই ছিল সবচেয়ে বড় ধরনের অস্থিরতা। কাকতালীয়ভাবে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পরপরই পূর্বনির্ধারিত সরকারপন্থীদের এই মিছিলটি হলো। বৃহস্পতিবার মাশহাদ থেকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল দেশটির বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে।
×