ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি এখন সবচেয়ে বড় শক্তি ॥ শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭

আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি এখন সবচেয়ে বড় শক্তি ॥ শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা/ মোহনগঞ্জ, ২৯ ডিসেম্বর ॥ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি বলেছেন, আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি হচ্ছে আজকের যুগের সবচেয়ে বড় শক্তি। এ জন্য আমাদের ছেলে-মেয়েদের বিশ্বমানের জ্ঞান, প্রযুক্তি ও দক্ষতা দিয়ে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রচলিত ও গতানুগতিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে তা অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই আমরা শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে চাচ্ছি। আমরা এখন পরিবর্তনের পথেই হাঁটছি। জাতিসংঘ ঘোষিত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় বলা হয়েছিল ২০১৫ সালের মধ্যে সব শিশুকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে হবে। আমরা ২০১২ সালের মধ্যেই ৯৯ শতাংশ ছেলে-মেয়ের ভর্তি নিশ্চিত করতে পেরেছি। দুই কোটি ৬০ লাখ ছেলে-মেয়েকে উপবৃত্তি দিচ্ছি। বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক তুলে দিতে পারছি। শুক্রবার বেলা ১১টায় জেলার মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। পুনর্মিলনী উদ্যাপন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক এবং প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ (অতিরিক্ত সচিব) সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, স্থানীয় এমপি রেবেকা মমিন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার জিএম সালেহ উদ্দিন, রেঞ্জ ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি, জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী, মোহনগঞ্জ পৌরসভার মেয়র লতিফুর রহমান রতন, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আখম শফিকুল হক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদ ইকবাল, কামাল পাশা চৌধুরী, প্রলয় কুমার জেয়ারদার, ইউএনও মেহেদী মাহমুুদ আকন্দ, পুনর্মিলনী উদ্যাপন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব সাকাওয়াৎ হোসেন তালুকদার প্রমুখ। শিক্ষামন্ত্রী মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি নির্মাণসহ বিদ্যালয়টি সার্বিক উন্নয়নে ১৪ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের সাতজন সাবেক প্রধান শিক্ষককে সম্মাননা দেয়া হয়। সন্ধ্যায় সাবিনা ইয়াসমিন ও সুবীর নন্দীসহ নতুন প্রজন্মের কণ্ঠশিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান। নেচে গেয়ে মাতালেন ভারতেশ্বরী হোমসের প্রাক্তন ছাত্রীরা নিজস্ব সংবদদাতা মির্জাপুর থেকে জানান, ভারতেশ্বরী হোমসে প্রাক্তন ছাত্রীরা এক মিলন মেলায় মেতে উঠেছিল। প্রাক্তন ছাত্রীদের পুনর্মিলনী উপলক্ষে শুক্রবার হোমস ক্যাম্পাসে তারা মেতে উঠে। ভারতেশ্বরী হোমস ওল্ড স্টুডেন্ট সোসাইটি এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শিক্ষা জীবনের প্রিয় প্রতিষ্ঠান ভারতেশ্বরী হোমসে এসে ছাত্রীরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন এবং বাল্য জীবনের নানা স্মৃতির পাতা নতুন করে সামনে আনেন। এ সময় অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। শুক্রবার সকালে শীতের কুয়াশা উপেক্ষা করে প্রাক্তন ছাত্রীরা হোমস ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেন। ক্যাম্পাসে পুরনো সহপাঠী ও বান্ধবীদের পেয়ে তারা উল্লসিত হয়ে উঠেন। পৌনে ১১টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন ভারতেশ্বরী হোমসের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গলের পরিচালক প্রতিভা মুৎসুদ্দি। ভারতেশ্বরী হোমসের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার পুত্রবধূ শ্রীমতী সাহা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। প্রথম পর্বে পুনর্মিলনী মঞ্চে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তৃতা করেন প্রতিভা মুৎসুদ্দি, শ্রীমতী সাহা, ভারতেশ্বরী হোমসের প্রিন্সিপাল প্রতিভা হালদার এবং ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রী ও সিনিয়র শিক্ষক মিস উলফাতুন্নেছা। পরে প্রাক্তন ছাত্রীরা হোমস এবং কুমুদিনী ক্যাম্পাসে একটি বিশাল র‌্যালি বের করে। এসএসসি ১৯৮৫ ব্যাচের ছাত্রী রেখা ঘোষ সন্তানসহ সুদূর কানাডা থেকে এসেছেন তার প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগদান করতে। তিনি বলেন, পুরনো দিনের সেই মধুময় স্মৃতি নতুন করে সামনে এসেছে। একইভাবে আমেরিকা থেকে এসেছেন ১৯৮৪ ব্যাচের ছাত্রী ইন্দিরা ঘোষ। ১৯৮৬ ব্যাচের ঢাকার প্রাক্তন ছাত্রী কাজী শামীমা হক ও আমরীন আরা বেগম বলেন, ভারতেশ্বরী হোমস আমাদের জীবনের একটি অংশ। এখানে আসলে ছোট বেলার স্মৃতি আয়নার মত সামনে ভেসে উঠে। দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ১৯৩৮ সালে নারী শিক্ষা প্রসারের জন্য ৭/৮ জন ছাত্রী নিয়ে তার নিজ বাড়ি মির্জাপুর গ্রামে ভারতেশ্বরী হোমস প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৪৫ সালে কুমুদিনী হাসপাতাল সংলগ্ন সুবিশাল ভবন নির্মাণ করে নতুন উদ্যমে চালু করেন নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
×