ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাজারভর্তি শীতের সবজি পেঁয়াজ মুরগিসহ সব কিছুর দাম নিম্নমুখী

প্রকাশিত: ০৭:৩২, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

বাজারভর্তি শীতের সবজি পেঁয়াজ মুরগিসহ সব কিছুর দাম নিম্নমুখী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শীতের টাটকা সবজিতে ভরপুর রাজধানীর কাঁচাবাজার। দামেও স্বস্তি বিরাজ করছে। ধীরে ধীরে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। যদিও গত সপ্তাহের মতো চাল, চিনি, আটা, ডিম এবং ভোজ্যতেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমতির দিকে। কিছুটা সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে ইলিশ মাছ। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বাজারে সরবরাহ বাড়ছে মুড়িকাটা পেঁয়াজের। এছাড়া আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ পরিস্থিতি ইতিবাচক। প্রতিকেজি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় পেঁয়াজ। দেশী পুরান পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনও অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি সাময়িক। এখন এই পণ্যের মৌসুম শুরু হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। তিনি বলেন, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন, আমদানি ও চাহিদা সংক্রান্ত যেসব তথ্য দেয়া হয় তা সঠিক নয়। এবার বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেই পেঁয়াজের উৎপাদন কমেছে। তাই দুই দেশেই এই পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে এখন পেঁয়াজের মৌসুম। ইতোমধ্যে ভারতের কিছু এলাকায় দাম কমতে শুরু করছে। দ্রুতই বাংলাদেশেও পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কাওরানবাজারে ছুটির দিনে বাজার করতে এসেছিলেন পূর্ব রাজাবাজারের বাসিন্দা ইয়াছিন আলী। কিছুটা সস্তায় পাওয়ার আশায় তিনি প্রায়ই পাইকারি বাজারখ্যাত এখানে বাজার করেন। সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য সস্তায় পাওয়ায় খুশি তিনি। তবে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও এই মূল্যও অতিরিক্ত বলে জানালেন তিনি। তিনি বলেন, পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকায় আসা উচিত। গত বছর এর চেয়েও কম মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। অথচ এবার মৌসুমে পেঁয়াজ ১১০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। মুড়িকাটা ও আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় পুরান পেঁয়াজের ঝাঁঝ কমছে। তা না হলে পেঁয়াজ এতদিন নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর সব বাজারে শীতের টাটকা শাকসবজি পাওয়া যাচ্ছে। দাম কম হওয়ায় ক্রেতার স্বস্তি এখন সবজি বাজারে। দু’একটি বাদে প্রায় সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে ২০-৪০ টাকার মধ্যে। কাপ্তানবাজারের সবজি বিক্রেতা খলিল জানান, রাজধানীতে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এ কারণে পাইকারি বাজারে দাম কমে গেছে। ফলে খুচরা পর্যায়েও সস্তায় বিক্রি হচ্ছে সবজি। তিনি বলেন, আগামী তিন মাস পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত কম দামে সবজি পাওয়া যাবে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, মুলা সব ধরনের সবজির দাম কমে এসেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও হাঁসের দাম বেড়েছে। প্রতিজোড়া দেশী হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়। শীত বাড়ায় রাজহাঁসের সরবরাহ বেড়েছে বাজারে। চাহিদা বাড়ায় দামও কিছুটা বেড়েছে বলে জানালেন বিক্রেতা। বাজারে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের উৎসব শুরু হওয়ায় মাংসের দাম আপাতত কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিক্রেতা। নারিন্দা কাঁচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা বোরহান জানান, এখন কিছুটা কমে পাওয়া গেলেও শীঘ্রই মুরগির দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চারদিকে বিয়ে, শাদি, পিকনিকসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। এ কারণে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে এখন মুরগি বেশি বেশি বিক্রি হচ্ছে। কয়েক মাস ধরে ফার্মের মুরগির ডিম কিছুটা কমে পাওয়া যাচ্ছে। বড়বাজারে প্রতিহালি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৬-২৮ টাকায়। পাড়া -মহল্লায় ৩০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। ডিমের সরবরাহ অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতা। ফকিরাপুল বাজারের ডিম বিক্রেতা ফরিদ বলেন, শীতকালে ডিমের সরবরাহ বেশি। এ কারণে দামও কম।
×