ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটে ধান কাটা নিয়ে সংঘর্ষে জোড়া খুন

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

বাগেরহাটে ধান কাটা নিয়ে সংঘর্ষে জোড়া খুন

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মোরেলগঞ্জে বিবদমান এক বিঘা জমির ধান কাটাকে কেন্দ্র্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দু’জন নিহত ও মহিলাসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার বেলা ৯টার দিকে পুটিখালী ইউনিয়নের পূর্ব সোনাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, আমবাড়িয়া গ্রামের শাজাহান শেখের ছেলে পলাশ শেখ (৪৫) ও পাতাবাড়িয়া গ্রামের তোরাব আলী শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ (৫২)। এরা দু’জনই পেশায় মোটরশ্রমিক। এই জোড়া হত্যার ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত শহিদুল খানসহ ৬ জনকে পুলিশ আটক করেছে। জানা গেছে, শুক্রবার সকালে পূর্ব সোনাখালী গ্রামের আব্দুর রহিম খানের জমিতে তার বংশীয় শহিদুল খান ২০-২৫ জন লোক নিয়ে ধান কাটতে শুরু করে। এ সময় রহিম খানের লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদের পিটিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মোটরশ্রমিক পলাশ শেখ ও ইব্রাহিম শেখ। এ ঘটনায় গুরুতর আহত নিহত পলাশের স্ত্রী রিনা বেগম, আওয়ামী লীগ নেতা কবির শেখ, মজিবর হাওলাদার, হেমায়েত খান, মাসুমা বেগম ও জাহিদ শেখকে মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কবির ও মজিবরকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কামাল হোসেন মুফতি বলেন, ইব্রাহিম ও পলাশকে হাসপাতালে আনার আগেই তাদের মৃত্যু হয়। তাদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মোড়েলগঞ্জ থানার ওসি রাশেদুল আলম ঘটনাস্থল থেকে বলেন, নিহত দুই জনের লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেম করাতে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও এই জোড়া হত্যা ঘটনার মূল নায়ক পূর্ব সোনাখালী গ্রামের মৃত জবেদ আলী খানের ছেলে শহিদুল খানসহ ৬ জনকে পুলিশ আটক করেছে। পুঁটিখালি ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম খান জানান, শুক্রবার সকালে তার ইউনিয়নের সোনাখালি গ্রামে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। গ্রামের আব্দুর রহিম খানের সঙ্গে প্রতিবেশী শহীদুল খানের এক বিঘা জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। বিরোধপূর্ণ জমিতে রহিম খান আমন চাষ করেন। প্রতিপক্ষ শহীদুল খান দলবল নিয়ে ওই জমিতে ধান কাটতে যান। এ সময় রহিমের পাশের গ্রামের আত্মীয়-স্বজন এসে তাদের বাধা দেন। এ নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। এ বিষয়ে পুঁটিখালি ইউপি চেয়ারম্যান শাহজান মিয়া শামীম বলেন, দুই পক্ষকে নিয়ে মীমাংসার জন্য বসার কথা ছিল। এ অবস্থায় একটি পক্ষ বিরোধপূর্ণ জমিতে কেন ধান কাটতে গেল, তা বুঝতে পারছি না। কারও উস্কানি থাকতে পারে। বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। আমতলীতে আহত ২০ নিজস্ব সংবাদদাতা আমতলী, বরগুনা থেকে জানান, উপজেলার উত্তর ঘোপখালী গ্রামে শুক্রবার সকালে জমির ধান কাটাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের পটুয়াখালী জেনারেল ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার উত্তর ঘোপখালী গ্রামের জব্বার হাওলাদার তার পৈত্রিক জমিতে ধান কাটছিল। এ সময় ছত্তার শরীফ তার নিজের ক্রয় করা জমি দাবি করে ধান কাটতে জব্বার হাওলাদারকে বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মহিলাসহ ২০ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত জব্বার হাওলাদার, আয়শা বেগম, খাদিজা বেগম, সামসুন্নাহার, জহিরুল হাওলাদার, আবু ছালেহ, ছত্তার শরীফ, জাকির শরীফ ও জেসমিনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে এবং মজিবর শরীফ, মনির শরীফ, শহীদুল শরীফ ও রুশিয়াকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জব্বার হাওলাদার জানান, আমার পৈত্রিক জমিতে ধান কাটতে গেলে ছত্তার শরীফ এতে বাধা দেয়। ছত্তার শরীফের লোকজন আমাকে, আমার দুই মেয়ে, স্ত্রী, ভাই ও ভাইয়ের ছেলেকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেছে।ছত্তার শরীফ জানান, আমি জব্বার হাওলাদারের ফুফুতো ভাই রশিদের কাছ থেকে ৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছি। ওই জমি জব্বার দখল দেয়নি। ওই জমির ধান কাটতে গেল আমি বাধা দেই। এ সময় আমাকে ও আমার চার ছেলেকে কুপিয়ে আহত করেছে।
×