ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পায়রা বন্দরে ক্যাপিটাল ড্রেজিং

বেলজীয় কোম্পানির সঙ্গে যৌথ মূলধনী কোম্পানি চুক্তি সই

প্রকাশিত: ০৭:৫৩, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭

বেলজীয় কোম্পানির সঙ্গে যৌথ মূলধনী কোম্পানি চুক্তি সই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং এবং রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বেলজিয়াম ভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি নুলের সঙ্গে পায়রাবন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠনে চুক্তি করেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই কোম্পানি গঠন চূড়ান্ত করা হবে। পায়রায় বন্দর স্থাপন করতে হলে ৩৬.৫ নটিকেল মাইল বা ৫৫ কিলোমিটার ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রয়োজন। এতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৩২ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ইউরো। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে বন্দরের দুটি টার্মিনাল চালুর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে সরকার পায়রাবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। বন্দরের মূল অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সাড়ে ছয় হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। বন্দরের পাশাপাশি এখানে বিদ্যুত কেন্দ্র, তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল, তেল পরিশোধনাগার নির্মাণ এবং রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন করে আরও বড় বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। সম্প্রতি পেট্রোবাংলা পায়রায় একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আগ্রহপত্র চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে। তবে এসব প্রকল্প নির্মাণের জন্য বন্দরের চ্যানেল ড্রেজিং এবং রক্ষণাবেক্ষণ জরুরী বলে মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অবস্থানগত দিক দিয়ে পায়রাবন্দর ব্যবহার করে আমদানি-রফতানি সুবিধা ভোগ করতে পারবে প্রতিবেশী দেশগুলো। রাজধানীর এক হোটেলে যৌথ কোম্পানি গঠন চুক্তিতে পায়রাবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর জাহাঙ্গীর আলম এবং জান ডি নুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান পিটার ডি নুল স্ব স্ব পক্ষে সই করেন। চুক্তিপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। বন্দরের ৩৬ দশমিক পাঁচ নটিকেল মাইল চ্যানেলের প্রথম পর্যায়ে টার্নিং বেসিনে ৯ মিটার এবং টার্মিনাল এলাকায় ১১মিটার গভীরতায় ড্রেজিংয়ের জন্য প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩২ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ইউরো। সার্বিকভাবে চ্যানেলের টার্নিং বেসিন ১২৫ মিটার চওড়া হবে এবং টার্মিনাল এলাকায় ৪০০ মিটার। প্রথম পর্যায়ের ড্রেজিং শেষে ১১ মিটার গভীরতার জাহাজ মূল বন্দরে প্রবেশে সক্ষম হবে। ভবিষ্যত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২ মিটার এবং তৃতীয় পর্যায়ে ১৪ মিটার গভীরতার জাহাজ মূল বন্দরে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হবে। পায়রাবন্দর এবং জান ডি নুল যথাক্রমে ৫১ এবং ৪৯ শতাংশ শেয়ারে কোম্পানিটির মালিক হবে। প্রকল্পের অধিকাংশ শেয়ার পায়রাবন্দরের হাতে থাকায় পরিচালনা পর্ষদে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশীদের আধিক্য থাকবে। প্রকল্প ব্যয়ের ২০ ভাগ মূলধনী বিনিয়োগ থাকবে। এতে পায়রাবন্দর কর্তৃপক্ষ ৫৪ দশমিক ৩১ মিলিয়ন ইউরো, জান ডি নুল ৫২ দশমিক ১৮মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করবে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য মাহবুবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ আবদুস সামাদ, দিল্লীতে বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত জান লুইক্স।
×