ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজাকার লিয়াকত ও রজব আলীর বিরুদ্ধে পরবর্তী সাক্ষ্য ৯ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৮ ডিসেম্বর ২০১৭

রাজাকার লিয়াকত ও রজব আলীর বিরুদ্ধে পরবর্তী সাক্ষ্য ৯ জানুয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে হবিগঞ্জের দুই রাজাকার লাখাই থানা রাজাকার কমান্ডার মোঃ লিয়াকত আলী ও আলবদর কমান্ডার আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলীর বিরুদ্ধে নবম সাক্ষী মোঃ জুম্মন মিয়া জবানবন্দী প্রদান করেছেন। জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, আসামি লিয়াকত আলী আমার বাবা রঙ্গু মিয়াকে ধরে হাত পা ও চোখ বেঁধে নৌকায় দাঁড় করিয়ে তার হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এরপর বাবার লাশ পানিতে ফেলে দেয়। জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ৯ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম মোঃ জুম্মন মিয়া। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬৩ বছর। আমার ঠিকানা, গ্রাম-ফান্দাউক, থানা-নাসিরনগর, জেলা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া। আমি প্রথম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। আমি গৃহস্থের কাজ করি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ফান্দাউক বাজারের পোস্ট অফিসের বারান্দায় থাকা আমার বাবার পান বিড়ির সিগারেটের দোকানে তাকে সাহায্য করতাম। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে আমার বাবা ও বাচ্চু মিয়াসহ এলাকার অনেকে আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে স্বাধীনতার পক্ষের লোক ছিল। ১৯৭১ সালের ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহের যে কোন দিন আমার বাবা পান সিগারেটের দোকানে থাকা অবস্থায় আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে আসামি লিয়াকত আলী ও আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলী ১০/১২ জন রাজাকার নিয়ে প্রথমে আমাদের দোকানের সামনে থাকা বাচ্চু মিয়াকে এবং পরে আমার বাবাকে দোকান থেকে ধরে ফান্দাউক বাজারে কমিউনিটি সেন্টারে স্থাপিত রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ঘটনার পরের দিন সকাল সাড়ে নয় টার দিকে আমি, আমার ভাই হুমাউন কবির, আমার মা ও আতœীয় খেলু ভাই ৫ হাজার টাকা নিয়ে আমার বাবাকে ছাড়িয়ে আনার জন্য রাজাকার ক্যাম্পের দিকে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি দুটি আলাদা নৌকায় একটিতে আসামি লিয়াকত আলী ও রজব আলী ২/৩ জন রাজাকার নিয়ে আমার বাবাকে এবং আরেকটি নৌকায় বাচ্চু মিয়াকে অন্য সহযোগী রাজাকাররা তুলেছে। তখন আমার বাবা ও বাচ্চু মিয়ার চোখ ও হাত বাঁধা ছিল। দুটি নৌকা বলভদ্র নদী দিয়ে পশ্চিম দিকে নাসিরনগরের দিকে রওনা করে। তখন আামার মা ও ভাইকে বাড়িতে পাঠিয়ে আমি ও খেলু ভাই পায়ে হেঁটে নাসিরনগরের দিকে রওনা করি। নাসিরনগরে খোঁজাখুঁজির করার এক পর্যায়ে দেখি নাসিরনগর ডাকবাংলোর কাছে দত্তবাড়ির খালে আসামিরা চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় বাবাকে নৌকার উপর দাঁড় করিয়ে আসামি লিয়াকত আলী তার হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে আমার বাবাকে গুলি করে হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে দেয়। তখন খালে প্রচন্ড- স্রোত ছিল। আমরা খালের পানিতে আমার বাবার লাশটি খোঁজখুঁজি করেও পাই নাই।
×