ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে দুই নেতার দ্বন্দ্বের জের

মাছ বাজার স্থানান্তর নিয়ে মুখোমুখি দুই পক্ষ

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

মাছ বাজার স্থানান্তর নিয়ে মুখোমুখি দুই পক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ নগরীর প্রধান পাইকারি মাছের আড়ত ঐতিহ্যবাহী ফিশারিঘাটের পুরনো বাজার থেকে নতুন বাজারে সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে। জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি থেকে আড়ত বরাদ্দ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যারা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন তারা পড়েছেন ঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে। নতুন করে প্রতিষ্ঠিত বাজারে অনেকেরই প্রবেশাধিকার একপ্রকার নিষিদ্ধ নানা প্রতিবন্ধকতায়। ফলে ফিশারিঘাট এলাকায় সড়কের ওপর বসছে মাছ বাজার। মাছ ব্যবসায়ীরা পুলিশী নির্যাতনসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নতুন বাজারে আড়ত বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রেও অনেক অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। এদিকে, বিষয়টিকে সাধারণ নাগরিকরা দেখছেন ক্ষমতাসীন দলের দুই শীর্ষ নেতার দ্বন্দ্বের জের হিসেবে। কেননা, পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বর্তমান ও সাবেক মেয়র। সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য সমবায় লিমিটেডের আহ্বায়ক জানে আলম জানান, বছর তিনেক আগে থেকে সুবিধাবাদী একটি চক্র দলের কিছু প্রভাবশালী দলের মদদে খাস জমিকে বন্দরের জমি দেখিয়ে এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে অবৈধভাবে ফিশারিঘাটে ‘নতুন বাজার’ নির্মাণ করে। একটি সিন্ডিকেট এক বছর আগে পুরাতন ফিশারিঘাটের মৎস্যজীবীদের নতুন তথ্য দিয়ে নতুন বাজারে নিয়ে যায়। এ বাজারে দোকান করা হয়েছে ১৮৮টি। সেখানে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৭৪ মৎস্যজীবীকে। এরমধ্যে ৫১ জনের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে ২ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার টাকা। বাকি দোকানপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দের নামে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বিরাট অঙ্কের অর্থ। মৎস্যজীবীরা পুরনো বাজার থেকে নতুন বাজারে গিয়ে প্রতিনিয়ত পড়ছে সন্ত্রাসীদের হামলা, অস্ত্রের মহড়া এবং চাঁদাবাজির মুখে। ভুক্তভোগী মৎস্যজীবীরা চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সহযোগিতায় পুনরায় আগের মৎস্য আড়তে ফিরে আসে। সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য সমবায় লিমিটেডের নেতৃবৃন্দ নানামুখী হয়রানির অভিযোগ এনে বলেন, নতুন বাজারে দোকান বরাদ্দের জন্য গ্রহণ করা ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা আদায়ের জন্য কয়েকজনকে আসামি করে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। সে মামলা এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। এরমধ্যেই সিন্ডিকেটটি মৎস্যজীবীদের ফের নতুন বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। মৎস্যজীবীদের এক ধরনের জিম্মি করে একটি গোষ্ঠী নিজস্ব স্বার্থ আদায়ের চেষ্টায় মেতেছে বলে অভিযোগ তাদের। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এদিকে, চাক্তাই এবং রাজাখালির মাঝামাঝি স্থানে ফিশারিঘাটের যেখানে নতুন বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে তাও বিতর্কিত। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, ওটা খাস জমি। জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে কর্ণফুলীর তীরে গড়ে ওঠা এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের আদেশ রয়েছে আদালত থেকে। উচ্চ আদালতের আদেশে দুই সহ¯্রাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের যে নির্দেশনা রয়েছে তারমধ্যে নতুন বাজারের স্থাপনাগুলোও রয়েছে বলে দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।
×