ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিপাকে কৃষক

এবার ভূমিদস্যুদের নজর পাকা ধানক্ষেত

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

এবার ভূমিদস্যুদের নজর পাকা ধানক্ষেত

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১ ডিসেম্বর ॥ কলাপাড়ায় ভূমিদস্যুদের লাল চোখ এখন কৃষকের ধানক্ষেতে। এ কারণে অসহায় কৃষক পাকার আগেই ক্ষেতের ধান রক্ষায় ঘুরছেন থানা পুলিশ গণমাধ্যম কর্মীসহ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে। এদের একজন নিখিল বরণ কু-ু। তিনি লিখিত অভিযোগে জানান, একজন সংখ্যালঘু শ্রেণীর লোক। প্রায় ৪৫ বছরের চাষাবাদকৃত চার একর ৯৭ শতক জমির ধান রক্ষার জন্য এ বছর তিনি দিশেহারা হয়ে দৌড়াচ্ছেন প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে। ইতোমধ্যে থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। পুলিশ প্রতিপক্ষ ফোরকান মৃধা গংদের ডেকে কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করেছেন। নিখিল কু-ু জানান, ছোট বালিয়াতলী মৌজার ৭০৬ খতিয়ানের এই জমি তিনি চাষাবাদ করছেন চার যুগ ধরে। বিএস দিয়ারা জরিপের সকল কাগজপত্র রয়েছে। নির্বিঘেœ চাষাবাদ করেছেন। এখন ছোট বালিয়াতলীর নাজমুল গাজী ও মেরাউপাড়ার ফোরকান মৃধা গং কলাপাড়ার এক চিহ্নিত প্রভাবশালীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ওই জমির ধান কাটাসহ দখলের অব্যাহত প্রচেষ্টা করে আসছে। একইভাবে ধান লুটের শঙ্কায় পড়েছেন রাখাইন অংনয়ের পরিবার। পক্ষিয়াপাড়ার এই পরিবার কলাপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। অংনয় লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তার কেনা এবং ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত সোনাপাড়া মৌজার জেএল ৩৮ নং এর ২১ নম্বর এসএ খতিয়ানের ৬২ ও ৪৬ নম্বর দাগের এক একর জমির ধান কাটার জন্য একই এলাকার ছালাম হাওলাদার, হাবিব হাওলাদার ও হিরণ হাওলাদার পাঁয়তার করছে। এমনকি ২৮ নবেম্বর বিকেলে জমিতে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মঙ্গলবার রাতে একটি জিডি করলে ফের বুধবার হুমকি দেয়া হয় বলে অংনয় অভিযোগ করেন। বর্তমানে অংনয় তার পরিবারের নিরাপত্তা এবং ফলানো ধান কাটার জন্য আইনী সহায়তা চেয়েছেন। এ বিষয়ে ওই এলাকার ভারপ্রাপ্ত মেম্বার হারুন তালুকদার জানান, ওই জমি চাষাবাদের সময়ও পুলিশের হস্তক্ষেপ ছিল। বর্তমানে হুমকি-ধমকির ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানেন না। অভিযুক্ত ছালাম হাওলাদারের ছেলে হাবিব হাওলাদার জানান, হুমকি-ধমকির ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। হাবিবের দাবি অংনয়দের জমি পাওয়ার কথাও মিথ্যা। তাদের জমি যা পাবে তার চেয়ে আরও বেশি বিক্রি করা হয়েছে। আরেক অসহায় ভূমিহীন মেলাপাড়া গ্রামের ছোবাহান মাতুব্বর। বছরের পর বছর ঘুরে মিঠাগঞ্জ মৌজার ৪৬৫৫ নম্বর দাগ থেকে এক একর খাস জমি বন্দোবস্ত পায়। এ জমির নামজারি পর্যন্ত করে ছোবাহানের নামে নতুন ৩০৫ নম্বর খতিয়ান খুলে দেয় ভূমি অফিস। ওই জমি মাপজোক করে পিলার পুঁতে দেয় সার্ভেয়ার আনছার উদ্দিন। এরপরে চাষাবাদ করে ধান ফলায় ছোবাহান। কিন্তু প্রভাবশালী ভূমির মালিক ফজু হাওলাদার গং ছোবাহানের জমির পিলার উপড়ে ফেলেছে। এখন ধান রক্ষায় অসহায়ের মতো ঘুরছেন ছোবাহান। এ ঘটনায় তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কলাপাড়া থানার ওসি জানান, জিডির প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষকে নোটিস করে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোন সুযোগ নেই।
×