প্যারাডাইস পেপার কেলেঙ্কারিতে নিজের বিনিয়োগের বিষয়ে তথ্য ফাঁস হওয়ার পর রানীকে অবশ্যই তার সম্পদের পুরো হিসাব জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে বলে দাবি করেছেন ব্রিটেনের লেবার পার্টির ছায়া অর্থমন্ত্রী।
ব্রিটেনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকায় দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে ছায়া অর্থমন্ত্রী জন ম্যাকডোনেল বলেন, কর দিতে হয় না, কিংবা খুবই কম কর দিতে এমন দেশে (ট্যাক্স হ্যাভেন) অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে রানী কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন। সেই তথ্য এবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এতে প্রমাণিত হয় যে, কর ফাঁকি দেয়ার সংস্কৃতি সর্বত্র বিদ্যমান। এ সংস্কৃতির পরিবর্তন আনতে হবে। দেশটির সরকার আরেক দফা ব্রেক্সিট আলোচনার নিকটবর্তী। এখন শোনা যাচ্ছে, ব্রেক্সিট থেকে একতরফাভাবে পিছিয়ে আসতে পারে ব্রিটিশ সরকার। ম্যাকডোনেল এ বিষয়ে মন্ত্রীদের কাছে আইনগত নথি প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন।
ম্যাকডোনেল এমন এক সময়ে কথাগুলো বলেন, যখন বেসরকারী খাতে ছেড়ে দেয়া কোম্পানিগুলো থেকে সরকার কীভাবে তিন হাজার সাত শ’ পাউন্ড খুইয়েছে, তা নিয়ে বক্তৃতা দিতে তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যদি লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসে, তবে প্রথম পাঁচ বছরেই সেই কোম্পানিগুলোকে তিনি জাতীয়করণ করবেন বলে অঙ্গীকার করেন। প্যারাডাইস পেপার কেলেঙ্কারিতে এক কোটি ৩৭ লাখ নথি ফাঁস হয়েছে। এতে ব্রিটেনের রাজপরিবারের সদস্যসহ বড় রাঘববোয়ালদের কর ফাঁকি দেয়ার তথ্য ফাঁস হলে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা গেছে, রানীর মালিকানাধীন কোম্পানি ডাচি অফ ল্যানচেস্টার কেম্যান দ্বীপ ও বারমুডায় অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে তবে ২০০৪ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে করা ওই বিনিয়োগ অবৈধ নয়। নথিতে দেখা গেছে, রানী ব্রাইটহাউস নামের একটি খামারে ৩২০৮ পাউন্ডের মতো অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, এটি গরিব ক্রেতাদের ওপর উচ্চ হারে সুদ চাপিয়ে দিয়েছিল। তবে বাকিংহাম প্রাসাদ জানিয়েছে, রানীর সম্পদ নিরীক্ষা করা আছে এবং বৈধ। ডাচি থেকে তিনি অর্থ আয় করেন, স্বেচ্ছায় তার কর শোধ করেন। ব্রিটেনের ছায়ামন্ত্রী বলেন, কর ফাঁকি দেয়ার একটা সংস্কৃতি এখানে চালু আছে। রানী উপদেষ্টাদের মধ্যেই সেই প্রবণতা আছে। আমরা এখন সেই প্রতিকূলতার মুখোমুখি। কাজেই রানীর উচিত তার পুরো সম্পদের হিসাব বিবরণী মানুষের সমক্ষে প্রকাশ করা।