ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

মৃত আসামিকে পলাতক দেখানোয় মহেশখালীর এক এসআইকে তলব

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৩১ অক্টোবর ২০১৭

মৃত আসামিকে পলাতক দেখানোয় মহেশখালীর এক এসআইকে তলব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত আসামি আব্দুল মজিদকে পলাতক দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন জমা দেয়ায় মহেশখালী থানার এসআই জহিরুল হককে তলব করেছে ট্রাইব্যুনাল। আগামী ২৬ নবেম্বর তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে, কর্তব্য কাজে অবহেলার জন্য কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবং মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তাকে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলেছে আদালত। অন্যদিকে শেরপুরের নকলার এসএম আমিনুজ্জামানসহ তিনজন, কুমিল্লার দাউদকান্দির ক্যাপ্টেন (অব) শহিদুলের বিরুদ্দে ফরমাল চার্জ দাখিল করেছে প্রসিকউশন পক্ষ। এ বিষয়ে আদেশ প্রদানের জন্য আজ মঙ্গলবার দিন নির্ধারণ করেছে ট্রাইব্যুনাল। অপরদিকে নকলার এসডি মোকলেস রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সোমবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছে। ট্রাইব্যুনালে এ সময় শুনানি করেন প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত, রেজিয়া সুলতানা চমন ও ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান তরফদার ও আব্দুস সালাম পাঠান। মৃতকে পলাতক দেখিয়ে প্রতিবেদন দেয়ায় ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন সংস্থা। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৩ জুলাই তৎকালীন ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল দুই মাস পর আদেশ দেয়া হবে বলে বিষয়টি রেখে দেয়। একই সঙ্গে এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের শুনানি দুই মাস পিছিয়ে দেয়া হয়। সোমবার দুই মাস ১৭ দিন পর ফের বিষয়টি নিয়ে আদেশ দিল ট্রাইব্যুনাল। সোমবার সংশ্লিষ্ট মামলার প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত বলেন, এসব দায়সারা কাজের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্টের ১১(৪) ধারা মোতাবেক কর্তব্য কাজে অবহেলার জন্য এক বছরের শান্তির বিধান রয়েছে বলেও জানান তিনি। গত ১৩ জুলাই ওই আবেদনের শুনানিতে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত। অন্যদিকে উপস্থিত ছিলেন এ বিষয়টিকে আদালতের নজরে আনা আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। আবেদনের পর প্রসিকিউটর বলেছিলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ১৮ জনের বিরুদ্ধে আমরা প্রসিকিউশন থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করি। এরপর ওই মামলায় গত ২৫ মে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য হয়। ধার্যকৃত দিনে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হলে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান জানান, আসামি মৌলবি আব্দুল মজিদ মারা গেছেন। তখন ট্রাইব্যুনাল জানতে চায় এ বিষয়ে আপনার কাছে কোন নথি আছে কি-না। ওই সময় আইনজীবী সাত্তার বলেন, আমাকে অনুমতি দিলে খোঁজ নিতে পারি। পরে আইনজীবী অনুসন্ধানে জানতে পারেন আসামি আব্দুল মজিদ মাস্টার ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর মারা গেছেন। মৃত্যুর পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফনও করা হয়েছে।
×