ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৫০ হাজার টন চিনি আমদানি অনুমোদন

অবৈধ চাল মজুদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

অবৈধ চাল মজুদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দাম নিয়ন্ত্রণ ও ঘাটতি পূরণে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চিনি আমদানি করবে সরকার। আর চালের দাম বাড়ার পেছনে মিল মালিকদের কারসাজি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে খালেদা জিয়া নিখোঁজ রয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী প্রথম দিন থেকেই রোহিঙ্গাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। বুধবার সচিবালয়ে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে চিনি আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ওই বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, মিলমালিকদের মজুতের কারণে চালে মাকড়সা ধরেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গোডাউনে গেছে। যারা অবৈধভাবে চাল মজুত করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে চাল রফতানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এ বিষয়ে ভারতীয় কাস্টমস বাংলাদেশকে একটি চিঠি দিয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আমি এখনও পুরোটা জানি না। এমনটা হলেও আমাদের বাজারে কোন প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, আমি ভারতীয় হাইকমিশনারকে টেলিফোন করেছিলাম, তিনি কক্সবাজার আছেন, ঢাকায় ফিরলে বিস্তারিত জেনে কথা বলব। বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তিনি বললেন, অবশেষে বোধোদয় হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার গেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গা ইস্যুতে পদক্ষেপ সারাবিশ্বে প্রশংসা পেয়েছে। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে গিয়েছেন এবং প্রথমদিন থেকেই যারা আশ্রয় নিয়েছেন তাদের সাহায্যের জন্য ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেত্রী কোথায়? তার নেত্রী তো নিখোঁজ, হারিয়ে গেছেন। এত বড় দুর্যোগ; ৪ লাখ রোহিঙ্গা মানবেতর জীবনযাপন করছেন, সরকার সর্বাত্মক সাহায্য করছে। কিন্তু খালেদা জিয়া উধাও, তার কোন খবর নেই। বাণিজ্যমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, তিনি (ফখরুল) উদাহরণ দিয়েছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন; তাহলে তার নেত্রী কেন আসেননি, এটা জাতির কাছে বড় প্রশ্ন। এদিকে, ৪৭০ মার্কিন ডলারে প্রতি মেট্রিক টন হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিকটন চিনি সরবরাহ করবে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইডিএএফ ম্যান সুগার। ৫০ হাজার টন চিনি আমদানিতে সরকারের মোট খরচ হবে ২১১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাজারদর নিয়ন্ত্রণ ও ঘাটতি পূরণের কথা বলে সরকার এর আগে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনকে (বিএসএফআইসি) ১ লাখ টন চিনি আমদানির অনুমতি দেয়। ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য বিএসএফআইসি যে সারসংক্ষেপ পাঠায়, তাতে বলা হয় ৫০ হাজার টন চিনি আমদানির আন্তর্জাতিক দরপত্রে মোট চারটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে রিয়া ইন্টারন্যাশনাল, ইউনাইটেড সুগার মিলস, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ এবং গ্লোবোপিউ ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট লিমিটেড। বিএসএফআইসির দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির বিবেচনায় চার প্রতিষ্ঠানই যোগ্য বা রেসপনসিভ দরদাতা হয়। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা রিয়া ইন্টারন্যাশনাল। খরচ বাদে প্রতিষ্ঠানটি দর দিয়েছে প্রতি টন ৪৭০ মার্কিন ডলার।
×