ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্লাস্টিক খাতে দক্ষ জনবল তৈরির উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ২১ আগস্ট ২০১৭

প্লাস্টিক খাতে দক্ষ জনবল তৈরির উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দক্ষমানব সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে সরকারী-বেসরকারী সহযোগিতায় প্লাস্টিক শিল্পের জন্য বিপেটের স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি হচ্ছে। প্লাস্টিক খাতের রফতানি আয় বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষমানব সম্পদ সৃষ্টিতে বিপেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ লক্ষ্যে ঢাকার নিকটবর্তী কেরানিগঞ্জে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লাস্টিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড টেকনোলজির (বিপেট) স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে। এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ১০ কোটি টাকার অনুদান দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্লাস্টিক শিল্প খাত উন্নয়নে রোডম্যাপ-২০৩০ ঘোষণা করেছে বিপিজিএমইএ। রবিবার বিপেটের ১১তম ব্যাচের মাসব্যাপী ট্রেনিং কোর্সের সমাপনী ও সার্টিফিকেট বিতরণী অনুষ্ঠান বিপিজিএমইএর পল্টন অফিসে অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিক ব্রিফ করেন বিপেটের চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন। প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (শুল্ক রফতানি বন্ড ও আইটি) এএফএম শাহরিয়ার মোল্লা। প্লাস্টিক সেক্টরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন। একই অনুষ্ঠানে গত এপ্রিল মাসে সমাপ্ত রফতানি বাজারজাতকরণ কোর্সের প্রশিক্ষণার্থীদেরও সনদপত্র দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিপেটের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিপিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সামিম আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি মোঃ গোলাম কিবরিয়া, বিপিজিএমইএ সাবেক সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহেদ, সাবেক সহ-সভাপতি কেএম ইকবাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিপিজিএমইএর সদ্য পুনঃনির্বাচিত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১০ কোটি টাকার অনুদানে কেরানীগঞ্জে আইন্তায় ১২৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ ক্রয়কৃত জমিতে বিপেটের স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে সিপেট প্রতিষ্ঠা এবং তার অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিপেটকে উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অন্যতম প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে পরিণত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। বিজিএমইএর ফ্যাশন ইনস্টিটিউটের মতো একপর্যায়ে বিপেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে রূপ নেবে এবং মার্চেন্টডাইজার ট্রেনিংসহ উচ্চতর ট্রেনিং দেয়া হবে। শুধু তাই নয়, জাতীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতি তথা একটি সুশিক্ষিত দক্ষ জনবল গঠনের মাধ্যমে প্লাস্টিক সেক্টরে প্রভূত উন্নতিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, বর্তমান প্লাস্টিক শিল্পের বাৎসরিক টার্নওভার হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। রফতানিমুখী এ শিল্প খাত থেকে সরকার প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পেয়ে থাকে। আর এ শিল্পে দক্ষ-অদক্ষ মিলিয়ে প্রায় ১০ মানুষ নিয়োজিত আছেন। এটি একটি উদীয়মান শিল্প। সরকার ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় বিসিকের মাধ্যমে ১৩৩.০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদি খান উপজেলার বড়বর্ত্তা মৌজায় ৫০ একর জমির ওপর প্লাস্টিক শিল্প নগরীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেক এ অনুমোদনক্রমে কাজ চলছে। এছাড়া ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন হচ্ছে। বেজা কর্তৃপক্ষ বিপিজিএমইএকে ১০৫ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে। তিনি বলেন, কমপ্ল্যায়েন্স ইস্যু বর্তমানে ব্যবসায়ের প্রধান ইস্যু। আর কমপ্ল্যায়েন্স ফ্যাক্টরির জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, প্লাস্টিক শিল্প নগরী স্থাপনকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অনেক দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন হবে। বিপেট সেক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিক সরবরাহের মাধ্যমে সেক্টরের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় অধিকাংশ দেশ যেখানে ৫০ থেকে ১০০ কেজির উপরে প্লাস্টিক ব্যবহার করে থাকে সেখানে বাংলাদেশ মাত্র ৫-৭ কেজির মতো প্লাস্টিক ব্যবহার করে। বাংলাদেশে প্লাস্টিক ব্যবহারের হার বাড়ছে ধারাবাহিকভাবে। প্লাস্টিক শিল্প খাত অদূর ভবিষ্যতে দেশের প্রধান দু-একটি শিল্প খাতের কাতারে চলে আসবে। এএফএম শাহরিয়ার মোল্লা বিপেট প্রতিষ্ঠায় প্রশংসা করে বলেন, প্লাস্টিক সেক্টরের আগামী দিনের চাহিদা পূরণে দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে এ প্রতিষ্ঠানটি ভূমিকা রাখছে। প্লাস্টিককে ব্যাপক সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্ভাবনাময় খাতকে প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে।
×