ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য ‘তাসের দেশ’

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১৯ আগস্ট ২০১৭

বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য ‘তাসের দেশ’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক আয়োজনে উঠে এল বাঙালির মুক্তির কা-ারী ও মননের দিশারী দুই প্রাণপুরুষ। শোকের মাস আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করে মঞ্চস্থ হলো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত নৃত্যনাট্য তাসের দেশ। পরিবেশনাটি ছিল ভিন্নধর্মী। তাসের মুখোশ থেকে ভেসে এল ইংরেজী সংলাপ। সেই সংলাপ থামতেই বাংলায় মিলনায়তনে ভেসে বেড়ায় রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর। বাংলা ও ইংরেজীর মিশেলে নৃত্যনাট্য ‘তাসের দেশ’ নিয়ে সুদূর মার্কিন মুলুকের নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় এসেছে একটি নাচের দল। এই নৃত্যদলের সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পীরা। ইতোমধ্যেই দলটি এ পরিবেশনাটি তিনবার মঞ্চস্থ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এতে অংশ নিয়েছেন নিউইয়র্কে জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা একঝাঁক কিশোর-কিশোরী। চতুর্থবারের মতো শুক্রবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস (বিপা) নৃত্যনাট্যটি মঞ্চস্থ করছে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে। প্রযোজনাটির নির্দেশনা ও নৃত্য পরিচালনা করেছেন এ্যানি ফেরদৌস। পরিবেশনাটি প্রসঙ্গে পরিচালক এ্যানি ফেরদৌস বলেন, আমরা একটি ভিন্নধর্মীভাবে এ পরিবেশনাটি করছি। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকদের জন্য নৃত্যনাট্যটি ইংরেজীতে অনুবাদ করেছি। তবে মূল স্বাদটা ধরে রাখার জন্য আমরা গানগুলোকে বাংলায় পরিবেশন করছি। অল্পটুকু মণিপুরী নৃত্যের সঙ্গে মঞ্চের নৃত্যশৈলীর মিশ্রণে এ নৃত্যনাট্যটি সাজানো হয়েছে। এ্যানি ফেরদৌস জানান, তিনি ২৯ বছর আগে দেশ ছেড়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ২৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস (বিপা)। প্রতিষ্ঠানটির রজতজয়ন্তীর বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের শুরুটা হলো এ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। তাসের দেশ নৃত্যনাট্যের সূচনা দেখা মেলে যান্ত্রিক ও একঘেয়ে বিষাদময় এক জীবন। এই জীবনকে মেনে নিতে পারেন না মুক্তিপ্রিয় রাজপুত্র। তাই বন্ধু সওদাগরপুত্রকে নিয়ে রাজপুত্র বেরিয়ে পড়েন বৈচিত্র্যের সন্ধানে, অজানার উদ্দেশ্যে। সাগর পাড়ি দিয়ে তারা পৌঁছে যান তাসের দেশে। যেখানে সবকিছুই নিয়ম মতো চলে। একেবারে শৃঙ্খলিত। রাজা হ্যাঁ বললে হ্যাঁ, না বলে সবাই না। রাজ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত কিছু নেই। নেই এগিয়ে চলার গতি। রাজপুত্রের চঞ্চল চিত্ত ও বেড়ার নিয়ম ভাঙ্গার চিন্তাধারা সংক্রমিত করে তাসের দেশের নারী-পুরুষদের। প্রজার সঙ্গে রানিও যোগ দেন বিদ্রোহে। একপর্যায়ে রাজা জনমতকে মেনে নিতে বাধ্য হন। ফলে রাজ্যের নিয়ম-কানুনের অচলায়তন ভেঙ্গে মুক্তির সুরে চলে তাসের দেশ। নৃত্যনাট্যটির বিভিন্ন চরিত্র রূপায়ন করেছেন আপিয়া জাহান পম্পি, ইমন আহমেদ, ক্যামেরিয়া সোফিয়া আলম, লায়লা ইয়াসমিন লাবণ্য, ইমদাদুল হক মিলন, মামুন খান, মৈত্রী চৌধুরী, মুন হাই, মুনিরা আহমেদ, নাদিয়া ইসলাম, নাহ্রিন ইসলাম, নাইমুস ইনাম নাঈম প্রমুখ। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন চন্দন চৌধুরী, জারিন মাইশা, নিলুফার জাহান, লিমন চৌধুরী, সাদিয়া চৌধুরী, আহনাফ ত্বাসিন, নিশাত চৌধুরী ও সেলিনা আশরাফ। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন নাদিম আহমেদ। মুখোশ তৈরি করেছেন নিউ ইয়র্কের মুখোশশিল্পী জিল রাইনিয়ার। গণগ্রন্থাগারে আবৃত্তি সন্ধ্যা আমার পরিচয় শুক্রবার শরত সন্ধ্যায় শিল্পিত উচ্চারণে স্নিগ্ধ রূপ পেল রাজধানীর সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তন। কবিতার শব্দমালায় স্মরণ করা হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। পরিবেশিত হলো ‘আমার পরিচয়’ শীর্ষক আবৃত্তি প্রযোজনা। আবৃত্তিচর্চা কেন্দ্র সংবৃতা প্রযোজিত প্রযোজনাটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন লাবণ্য শিল্পী। কবিতাপ্রেমী শ্রোতাদের সরব উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই আবৃত্তিসন্ধ্যার প্রতিপাদ্য ছিল ‘জনক তুমি,’ ‘সাধারণ মানুষের প্রখর চৈতন্যে, রৌদ্রঝলসিত পথে মহামিছিলের পুরোভাগে...।’ জহির রায়হান চলচ্চিত্র উৎসব শুরু ‘প্রতিরোধে প্রস্তুত ক্যামেরা’ প্রতিপাদ্যে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে শুরু হলো দুই দিনব্যাপী জহির রায়হান চলচ্চিত্র উৎসব। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জহির রায়হানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এ উৎসব। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উৎসবে সব মিলিয়ে প্রদর্শিত হচ্ছে আটটি চলচ্চিত্র। শুক্রবার সকালে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমেদ এ উৎসবের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জহির রায়হানের ছেলে অনল রায়হান ও উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম। সভাপতিত্ব করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশ। সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। তাদের কণ্ঠে গীত হয় ‘দাও দাও দুনিয়ার যতো গরীবকে আজ জাগিয়ে দাও’, ভূপেন হাজারিকার ‘আজ জীবন খুঁজে পাবি ছুটে ছুটে আয়’সহ বেশ কিছু গান। ‘রাজা যায় রাজা আসে, রানীরাও আসে যায়’ গানটির সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশিত হয়। আর উৎসবের শুরুতেই উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া উৎসবস্থলের বাইরে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সহায়তার উদ্দেশ্যে উদীচীর উদ্যোগে বুথ খোলা হয়েছে। ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে টিএসসিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শহীদদের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) বারান্দায় আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শুক্রবার তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়া সম্প্রীতির শিল্পযাত্রা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে সম্প্রীতি নাট্যোৎসব পর্ষদের উদ্যোগে এবং শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় ‘ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়া সম্প্রীতির শিল্পযাত্রা’ শীর্ষক কর্মসূচীর সূচনা হয় শুক্রবার সকালে। শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু হওয়া এ সম্প্রীতির শিল্পযাত্রা উদ্বোধন করেন নাট্যজন মঞ্চসারথী আতাউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অভিনেত্রী তারানা হালিম। সূচনা বক্তব্য রাখেন পর্ষদের সদস্য সচিব কামাল বায়েজীদ। উদ্বোধনী পর্ব সঞ্চালন করেন অভিনেতা নির্দেশক তপন হাফিজ।
×