ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্যোগপরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসন

দুই হাজার কোটি টাকার ঋণ প্রস্তাব বিশ্বব্যাংকের

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৬ আগস্ট ২০১৭

দুই হাজার কোটি টাকার ঋণ প্রস্তাব বিশ্বব্যাংকের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রাকৃতিক দুর্যোগপরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য সহজ শর্তে ২৫ কোটি ডলার ঋণের প্রস্তাব দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসেবে)। বাজেট সহায়তা হিসেবে দেয়া এ ঋণ প্রস্তাবের শর্ত হচ্ছে- ঋণের অর্থ বন্যা, পাহাড়ধস, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগপরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসনে ব্যবহার করতে হবে। বিশ্বব্যাংকের এই বাজেট সহায়তার প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, গত ২৩ জুলাই বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের তরফে ওই ঋণ প্রস্তাব নিয়ে ইআরডি কর্মকর্তাদের সামনে একটি উপস্থাপনা দেয়া হয়। এই ঋণের জন্য প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিকম্প ও খরাপ্রবণ দেশ। ২০১৭ সালের বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি সূচক অনুযায়ী, জলবায়ু ঝুঁকিপ্রবণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সারাবিশ্বে ষষ্ঠ। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩২০ কোটি ডলার বা ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দুই দশমিক দুই শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে এই স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া যাবে। আইডিএ থেকে নিয়মিত যে ঋণ বাংলাদেশ পায়, এর বাইরে এই অতিরিক্ত অর্থ পাওয়া যাবে। অন্য নমনীয় বা সহজ শর্তের ঋণের মতো এই ঋণেও শর্ত শিথিল থাকবে। ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি তিন বছরের জন্য আইডিএ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সহজ শর্তের ঋণ পায় বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত আইডিএতে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৩০ কোটি ডলার। আগামী তিন বছরেও একই পরিমাণ বরাদ্দ থাকবে বলে জানা গেছে। তবে এই ঋণ নির্দিষ্ট প্রকল্পের বিপরীতে পায় বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি আরও ২৫ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা হিসেবে দিতে চায় বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশ এ ঋণ নিতে অনাপত্তি জানালে আগামী তিন বছর দেশে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তাৎক্ষণিকভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ওই তহবিল থেকে অর্থ পাওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে অর্থছাড়ে কোন জটিলতা তৈরি হবে না। পরবর্তীতে পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্যও অর্থ পাওয়া যাবে। এই ধরনের তহবিল পেতে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারকে আগে থেকেই বিশ্বব্যাংককে জানাতে হয়। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেমন- বন্যা, ভূমিকম্প, পাহাড়ধস, ঘূর্ণিঝড় এবং খরায় এই সহায়তা চাওয়া হয়। বিশ্বব্যাংকের কাছে এই নতুন প্রস্তাব পাওয়ার পরপরই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগকে মতামত দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছে ইআরডি। কোন কোন দুর্যোগে বিশ্বব্যাংকের এই তহবিল পাবেÑ তা ঠিক করতে শীঘ্রই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকবে ইআরডি।
×