ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজ সুদ সমন্বয় কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আপাতত কমছে না

প্রকাশিত: ০৫:২১, ৯ আগস্ট ২০১৭

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আপাতত কমছে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হবে বলে অর্থমন্ত্রী বার বার আশ্বাস দিলেও আপাতত তা বাস্তবায়নে যাচ্ছে না সরকার। তবে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সীমা বেঁধে দেয়ার পাশাপাশি বিনিয়োগ করতে হলে সরকারকে অর্থের উৎস জানাতে হবে। এছাড়া বিনিয়োগে দুই স্তরবিশিষ্ট সুদ চালুর পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার না কমানোসহ এ খাতে বিনিয়োগের ব্যাপারে একটি গাইডলাইন চূড়ান্ত করতে আজ বুধবার বৈঠকে বসছে সঞ্চয়পত্র সুদ সমন্বয় কমিটি। সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের বাজেট বড় ধরনের ঘাটতির মুখে পড়বে। বিশেষ করে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি দেখা দেবে। এই ঘাটতি মেটাতেও সঞ্চয়পত্র বড় ভূমিকা রাখছে। এসব দিক বিবেচনা করে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার না কমানোর পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে শুধু অর্থ সঙ্কটের বিষয়টি সরকার ভাবছে না। সরকারের ভাবনায় রয়েছে আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব। কারণ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার এ মুহূর্তে কমানো হলে অনেক মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত ও পেনশনভোগীরা অসন্তুষ্ট হতে পারে। তাই আপাতত সঞ্চয়পত্রের সুদের হারে হাত দিতে চায় না সরকার। এদিকে, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হবে কিনা এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুস সাকিবকে দিয়ে সরকার একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ইতোমধ্যে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলোর অন্যতম হচ্ছে, সঞ্চয়পত্রের নীতিমালায় পরিবর্তন আনা। কারণ বর্তমানে নিম্ন-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও পেনশনভোগী ছাড়াও অন্যান্য অনেক প্রতিষ্ঠান সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছে। এমনকি, কোন কোন সরকারী-বেসরকারী ব্যাংক বিপুল অংকের সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছে। এ অবস্থায় সবার জন্য সুদের হার কমানো ঠিক হবে কিনা সে বিষয়টি ছেড়ে দেয়া হয়েছে অর্থমন্ত্রীর হাতে। বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ও নীতিমালা সম্পর্কিত বৈঠকে কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জানান, আপাতত সঞ্চয়পত্রের ওপর কোন ধরনের হাত না দেয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। তবে অর্থমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত। বুধবার বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জানা গেছে, আজকের বৈঠকে আলাদাভাবে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ব্যাপারে একটি গাইডলাইন দেয়া হতে পারে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগে পৃথক সুদের হার নির্ধারণের সুপারিশ থাকছে। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রে কালো টাকার বিনিয়োগ প্রতিরোধ করতে আয়ের উৎস জানার বিধান থাকতে পারে। তবে যারা ইতোমধ্যে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছেন, তাদের বিষয়ে নতুন করে আর কোন নীতিমালা আরোপ না করার বিষয়টি গুরুত্ব পেতে পারে। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী, প্রতিবন্ধী, নারী ও বয়স্কদের টাকা সঞ্চয়পত্র খাতে বিনিয়োগের বিষয়টি ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে।
×