ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এখনও রহস্যে ঘেরা আমতলীর ইদি আমিনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ৯ আগস্ট ২০১৭

এখনও রহস্যে ঘেরা আমতলীর ইদি  আমিনের মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ৮ আগস্ট ॥ বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ইদি আমিন মৃত্যুর ৭ মাস অতিবাহিত হলেও কোন তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। মামলার সাবেক তদন্তকারী পুলিশ অফিসার স্বীকার করেছেন মৃত্যুটি তার কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। বর্তমানে মামলাটি ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। তবে কবে নাগাদ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জানা গেছে, চলতি বছর ৭ জানুয়ারি ইদি আমিনের মৃত্যুর পর আমতলি থানায় দৈনিক জনকণ্ঠের পটুয়াখালীর নিজস্ব সংবাদদাতা মোকলেছুর রহমান, তার ভাই দৈনিক মানবকণ্ঠের চীফ রিপোর্টার মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, পটুয়াখালীতে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্লুগোল্ডে কর্মরত মোঃ আনিসুর রহমান, আমেরিকা প্রবাসী মিজানুর রহমান, ছোট ভাই বরিশালের একটি সরকারী কলেজে অনার্স পড়ুয়া হাসান ও বোনের ছেলে মাস্টার্স পড়ুয়া মোঃ মুসফিকুর রহমান ও তার আশিউর্ধ দৃষ্টি প্রতিবন্দী বাবা আঃ বারী হাওলাদারসহ ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার এজাহারে কোন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সাক্ষীও নেই। অথচ এই মামলাটি রজু হওয়ার ৮ ঘণ্টা আগে জনকণ্ঠের সাংবাদিক মোকলেছুর রহমানের মেঝ ভাই মোঃ আনিসুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন কারাভোগের পর বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। আসাদুর রহমান নামের অপর এক আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। এ ব্যাপারে ওই মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা মুহাঃ নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। কেন রহস্যজনক মনে হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি। ওই তদ্বন্তকারী কর্মকর্তা এ মামলাটি দীর্ঘ ৬ মাস পর্যন্ত তদন্ত করেন। এরপর গত জুন মাসে রহস্যজনক কারণে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। অবশ্য এ ঘটনাটি এলাকাবাসীর কাছেও রহস্যজনক রয়ে গেছে। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, মামলার সাবেক তদ্বন্তকারী কর্মকর্তাকে দিয়ে ওই সাংবাদিক পরিবারকে ফাঁসানোর সকল চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর পুলিশে চাকরি করেন ইদির এমন এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মাধ্যমে মামলাটি ডিবির এক ওসিকে দিয়ে তদন্ত করানো হচ্ছে এবং তাকে ম্যানেজ করে ওই সাংবাদিক পরিবারকে ফাঁসানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে ইদি আমিন মৃত্যুর রহস্য কি হতে পারে? এমন ঘটনার অনুসন্ধানে করতে গিয়ে দেখা গেছে, এ ঘটনায় এলাকার লোকজন এখনও ভীতসন্ত্রস্ত। তারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। বাদী পক্ষ তাদের সংবাদকর্মীসহ অপরিচিত কারও সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। কেউ বললে তাকেও আসামি করা হবে বলে ভয় দেখানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, প্রকৃত ঘটনা ওই বাড়ির মজিদ মৃধার পরিবারের সদস্যরা জানে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তার দাবি ইদির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আর এ কারণেই ঘটনাটি পুলিশের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, ইদি আমিন খুন হলে তার শরীরে ক্ষতচিহৃ থকতো। ধ্বস্তাধস্তির আলামত থাকত। কাদা মাটি গায়ে থাকত। কিন্তু তার কোন কিছুই ছিল না। গ্রামবাসীর বক্তব্য, পুলিশ এ মামলায় যে সব বিষয় নিয়ে কাজ করা দরকার সে সব বিষয় নিয়ে কাজ করলে এ রহস্য অনেক আগেই বেরিয়ে আসত। এ ব্যাপারে মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ইন্সপেক্টর আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাত্র কয়েক দিন হয় মামলাটি থানা থেকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
×