ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দোকলাম ইস্যু নেপালের কাছে উত্থাপন করল চীন

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ৭ আগস্ট ২০১৭

দোকলাম ইস্যু নেপালের কাছে উত্থাপন করল চীন

চীন দোকলাম ইস্যুটি নেপালের কাছে উত্থাপন করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। হিমালয়ের প্রত্যন্ত মালভূমি এলাকায় অবস্থিত দোকলামে ভারত ও চীনের সৈন্যরা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। এ নিয়ে চীন ভারত সম্পর্কে কিছুটা দ্বন্দ্ব চলছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জাপানকে এ সঙ্কটের বিষয়ে অবহিত করেছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া। ভারতের সিকিম সীমান্তে ভুটানের কাছে দোকলাম মালভূমির অবস্থান। চীন ও ভারতের মধ্যকার সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার সীমান্তের বিভিন্ন অংশ নিয়ে বিরোধ রয়েছে। চীনের অভিযোগ জুন মাসে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সীমানা অতিক্রম করে চীনের দোংলাং অঞ্চলে প্রবেশ করে এবং দোকলাম মালভূমি এলাকায় একটি সড়ক নির্মাণকাজে বাধা দেয়। এরপর থেকে দুপক্ষের সেনারা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। ভুটানের কাছাকাছি ওই উপত্যকাটি চীন ও ভারতের মধ্যে সীমা নির্দেশ করছে। ভারত বলেছে নিরাপত্তাজনিত কারণে রাস্তা নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে চীনকে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিল। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী এখনও চীনা ভূ-খ-ে অবস্থান করছে এবং চীন এ ক্ষেত্রে অনেক সংযম দেখিয়ে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলেছে। এখন চীন যে এ সমস্যার কথা নেপালকে জানাল সেটি বিভিন্ন দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত ভারত, নেপাল ও চীনÑ এ তিনটি দেশের মধ্যে অভিন্ন সীমান্ত রয়েছে। দ্বিতীয়ত প্রতিবেশী দেশ হিসেব ভারত নেপালের নিজের একটি প্রভাব বলয়ের চেষ্টা করছে বলে নেপাল অনেক সময় অভিযোগ করে থাকে। ভারত বারবার বলছে, যে কোন অর্থবহ সংলাপ শুরুর পূর্বশর্ত দোকলাম থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার। বিষয়টি চীন ও নেপালের কূটনীতিকরা এখন বেইজিং ও কাঠমু-ুতে আলাপ করছেন। অন্যদিকে ভারত বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি আলাপ করছে না। দেশের বাইরে ভারতীয় কূটনৈতিক মিশনগুলোও এ নিয়ে নয়াদিল্লীর অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে না। সপ্তাহখানেক আগে ভারত বিষয়টি নিয়ে মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করেছিল। কাঠমু-ু যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুূলেনি কিন্তু ভারত ও চীনের মধ্যে এত লম্বা সময় ধরে চলা অচলাবস্থা তাদেরও ভাবিয়ে তুলেছে। চীন ও ভারতের মধ্যে নেপালের দুটি ত্রিদেশীয় জংশন রয়েছে। একটি দেশের পশ্চিম প্রান্তে লিপুলেখে অপরটি পূর্বপ্রান্তে জিনসাং চুলি এলাকায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালে চীন সফরের সময় চীনের সঙ্গে তার দেশে বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। লিপুলেখ পাস দিয়েই ভারতের পণ্য চীনের পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এনিয়ে নেপালের পার্লামেন্টে অনেক বিতর্ক হয়। ভারত ও চীন উভয় দেশকে চুক্তি থেকে লিপুলেখ পাসের কথা বাদ দেয়ার আহ্বান জানায় নেপালের রাজনৈতিক দলগুলো। নেপালের পার্লামেন্টে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় যে ওই চুক্তি নেপালের সার্বভৌমত্ব ও ভূ-খ-গত ঐক্য নষ্ট করবে।
×