ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদেও ভিসা ও ভর্তির নিয়ম আরও সহজ করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৯ জুলাই ২০১৭

বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদেও ভিসা ও ভর্তির নিয়ম আরও সহজ করা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকায় শুরু হয়েছে দুইদিনব্যাপী ভারতীয় শিক্ষা মেলা। শুক্রবার ডেইলি স্টার সেন্টার ভবনে মেলার উদ্বোধন করে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ভিসা ও ভর্তি নিয়ম আরও সহজ করা হচ্ছে। দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়াতে সন্ত্রাসী হামলার পর শিক্ষা মেলাসহ অনেক বড় আন্তর্জাতিক কর্মসূচী বাতিল করা হয়েছে, কিন্তু তার দেশ (ভারত) মেলাসহ সকল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে কারণ বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল। এ ধরনের যে কোন সন্ত্রাসী হামলাকে বাংলাদেশের মানুষ হতাশাজনক হিসেবে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। দুইদিনব্যাপী মেলা আজ শনিবারও চলবে। প্রথম দিনের মতো আজও সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে মেলা। ভারতের মোট ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় মেলায় অংশ নিয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশনের সহযোগিতায় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান এসএপিইর আয়োজনে এটি ‘চতুর্থ ভারতীয়’ শিক্ষা মেলা’। এসএপিইয়ের আগে বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, নেপাল, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় সাফল্যের সঙ্গে অনুরূপ শিক্ষা মেলার আয়োজন করেছে। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের দোরগোড়ায় শিক্ষাসংক্রান্ত সুযোগ পৌঁছে দেয়াই এ মেলার লক্ষ্য বলে জানিয়েছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান। ভারতের নামীদামী ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নেয়ায় শিক্ষার্থীরা সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক ছাদের নিচে পাচ্ছেন মেলায়। মেলায় অংশগ্রহণকারী ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুযোগ-সুবিধা ও শিক্ষাব্যয় সম্পর্কে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিস্তারিত তথ্য দেয়া হচ্ছে মেলায়। মেলায় আসলেই যে কেউ তাদের চাহিদা অনুযায়ী পছন্দমতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তুলনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পাবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এছাড়া শিক্ষা মেলায় প্রবেশ এবং পরামর্শ ছাড়াও শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে ক্যারিয়ার এপটিচুড টেস্টেরও (যথাযথ ক্যারিয়ার নির্বাচন পরীক্ষা) সুযোগ নিতে পারবে। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ছাড়াও ছিলেন আয়োজন প্রতিষ্ঠান এসএপিইর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় থাপা। ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের গভীরতা তুলে ধরে বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়াতে জুলাইতে সন্ত্রাসী হামলার পর শিক্ষা মেলাসহ অনেক বড় আন্তর্জাতিক কর্মসূচী বাতিল করা হয়েছে, কিন্তু তার দেশ মেলা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সকল কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছে কারণ আমরা জানি বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল। এ ধরনের যে কোন সন্ত্রাসী হামলাকে বাংলাদেশের মানুষ হতাশাজনক হিসেবে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। ভারতীয় হাইকমিশনার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম আদানপ্রদানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, এটি দুই প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে। শিক্ষা মেলার মাধ্যমে বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশের জনগণ প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতকে আরও ভালভাবে বুঝবেন। দ্বিপক্ষীয় সহায়তার মাধ্যমে শিক্ষিত জাতি গড়তে সঙ্গে কাজ করবেন। শিক্ষা গ্রহণের সময় দেশের মানুষ জ্ঞান ও তথ্য ভাগ করে ভাল যোগাযোগ গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। যোগাযোগ ভাল সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শ্রিংলা আরও বলেন, শিক্ষা মেলার মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ভারতের উন্নত মানের শিক্ষার সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে। ভারত ও বাংলাদেশের দুই প্রধানমন্ত্রীর সফরের মধ্য দিয়ে উভয় দেশে সোনালি অধ্যায় শুরু হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ভারতের হাইকমিশনার। শিক্ষাকে গুরুত্বপূর্ণ খাত উল্লেখ করে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, এ ধরনের শিক্ষা মেলা বন্ধুপ্রতিম দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে। এই মেলা শিক্ষার বিষয়ে একে অপরকে জানাতে দেশের নতুন প্রজন্মের মধ্যে একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি করবে। আমি আশা করি, বাংলাদেশের মানুষ মেলার মাধ্যমে ভারতকে আরও ভালভাবে জানতে পারবে। এসএপিইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় থাপা বলেন, ভারতের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেলায় অংশ নিয়েছে, যেখানে সম্ভাব্য শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দসই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য পাবেন। তৃতীয় ভারতীয় শিক্ষা মেলা বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের দোরগোড়ায় শিক্ষার সুযোগ পৌঁছে দেবে। এ মেলা ভারতে শিক্ষার সম্ভাব্যতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করবে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অন্যতম পছন্দ ভারত। প্রতিবছর বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রচুর শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতে যান।
×