ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৮ জুলাই ২০১৭

১৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহ, শেরপুর, যশোর ও নড়াইলের ১৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, জোরপূর্বক শ্রম আদায়, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার ধানম-ির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সদস্য এম সানাউল হক। শীঘ্রই এসব আসামির বিষয়ে প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয়া হবে বলে এ সময় জানান তিনি। এটি হলো তদন্ত সংস্থার ৫১ এবং ৫২তম তদন্ত প্রতিবেদন। ময়মনসিংহ, শেরপুরের আসামিদের ৫১ এবং যশোর ও নড়াইলের আসামিদের ৫২তম তদন্ত প্রতিবেদন করা হয়েছে। তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আরও বলেন, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুকের বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। এটা নতুন কোন বিষয় না। এটা আগেই জানা যে ড. ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে মামলা আছে সে হিসেবে তদন্ত চলছে। মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি তার অপরাধের অনুসন্ধান চলছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যশোর অঞ্চলের আসামিদের মধ্যে আব্দুল ওহাব মোল্লা (৮০), ওমর আলী শেখ (৬৪), বদরুদ্দোজা ওরফে বদিউজ্জামান (৭৫), মোঃ দাউদ শেখ (৬৭) ও গুলজার হোসেন খনিকে (৭৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর সাত আসামি পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২১ মার্চ থেকে তদন্ত শুরু করে চার অভিযোগে ২৭ জুলাই শেষ করা হয়। মামলায় ৪৩৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেন তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ মামলায় ৭৬ জন সাক্ষী, একজন তদন্ত কর্মকর্তা ও ১২ জন জব্দ তালিকার সাক্ষী রয়েছে। অন্যদিকে শেরপুর অঞ্চলের আসামিদের মধ্যে এএসএম আনিসুজ্জামান ফারুক (৫৮), একেএম খান আকরাম হোসেন (৬২) ও এমদাদুল হক ওরফে খাজা ডাক্তারকে (৭৪) গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর এক আসামি পলাতক রয়েছেন। শেরপুরের মামলায় ২০১৫ সালের ১৯ নবেম্বর থেকে তদন্ত শুরু করে ২৬ জুলাই শেষ করে ৫৪ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদন। মামলার মোট ৬০ জন সাক্ষী রয়েছেন। এছাড়া ঘটনার সাক্ষী ৩১ জন, জব্দ তালিকার ২ জন এবং আইও একজন। তদন্তে অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যা এবং গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। সানাউল হক বলেন, বৃহস্পতিবার ৫১ ও ৫২তম তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। মামলায় ৫১ নম্বর তদন্ত প্রতিবেদনে শেরপুরের চার আসামির বিষয়ে তদন্ত করেছেন মামলার আইও মনোয়ারা বেগম। প্রতিবেদনে মোঃ এমদাদুল হক, একে এম আকরাম হোসেন এবং এস এম আমিনুজ্জামান ফারুক বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ৫২ নম্বর তদন্ত প্রতিবেদনের (যশোর) আইও ছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন। প্রতিবেদনে যশোরের মোঃ খন্দকার শওকত আলী বাবুলের রাজনৈতিক পরিচয় হিসেবে বিএনপি, নড়াইলের মোঃ গুলজার হোসেন খানের রাজনৈতিক পরিচয় আওয়ামী লীগ এবং মোঃ দাউদ শেখের রাজনৈতিক পরিচয় জামায়াতে ইসলামী উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মোঃ বদরুদ্দোজা জামায়াতে ইসলামী, মোঃ ওমর আলী শেখ ও আব্দুল ওহাব মোল্লার রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে তৎকালীন মুসলীম লীগ সমর্থক হিসেবে।
×