ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাত কিমি রাস্তার জন্য দুর্ভোগ দেড় লাখ মানুষের

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ১৩ জুন ২০১৭

সাত কিমি রাস্তার জন্য দুর্ভোগ দেড় লাখ মানুষের

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া-সোনাহাটা গ্রামীণ সড়কের এতটাই বেহাল অবস্থা যে বর্ষা মৌসুমে ২০ গ্রামের অন্তত দেড় লাখ মানুষের যোগাযোগে যারপর নেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রায় দুই যুগ ধরে কোন সংস্কার হয়নি। পাকা রাস্তা দিনে দিনে আধোভাঙ্গা মাটির রাস্তার পরিণত হয়েছে। রাস্তার মধ্যে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি তো হয়েছেই কিছু অংশ ডোবায় পরিণত। কর্তৃপক্ষ বলছেন, এই রাস্তা সংস্কার বা পুনর্নির্মাণে কোন বরাদ্দ মেলেনি। বগুড়া-ঢাকা জাতীয় মহাসড়ক থেকে পূর্ব দিকে মাঝিরা বন্দর থেকে সোনাহাটা পর্যন্ত এই রাস্তার দৈর্ঘ সাত কিলোমিটারের বেশি। সড়কটি করতোয়া নদী পার হয়ে শাহনপুর বন্দরের ওপর দিয়ে ধুনট উপজেলার সোনাহাটায় গিয়ে ঠেকেছে। সোনাহাটা এই অঞ্চলের বড় ব্যবস্যা কেন্দ্র। পার্শ্ববর্তী তাঁত প্রধান জেলা সিরাজগঞ্জের তাঁত বস্ত্র এই হাটে পাইকারি বেচাকেনা হয়। এই সড়ক দিয়েই পূর্ব-উত্তর দিকের গাবতলী উপজেলার কয়েকটি এলাকার সংযোগ আছে। ধুনট ও গাবতলি উপজেলার সোনাহাটা বেড়েরেবাড়ি, কচুয়াদহ, নাবিল্লা, বড়পাথার, ফুলকোট, কামারপাড়া, বিরিকুল্লা, দারিকুল্লা, জৈন্তিবাড়ি, দক্ষিণপাড়া, বিলকেশপাথার, দহিকান্দি, শাহনগর, বিহিগ্রাম, দুরুলিয়া, চকগোপিনাথপুর, চোপিনগরের লাখো মানুষের এই রাস্তাটি সংযোগের প্রধান সড়ক। এলাকাবাসী জানায়, শাজাহানপুর উপজেলার ভেতরে সবচেয়ে বেশি ইটভাঁটি। ইটভাঁটিওয়ালারা এলাকার আবাদী জমির টপসয়েল (উপরিভাগের মাটি) কেটে নিয়ে যাচ্ছে। টপসয়েল না থাকায় অনেক জমির উর্বরা কমেছে। এই রাস্তার ওপর দিয়ে প্রতিদিন অতিরিক্ত মালামাল বিশেষ করে ইট ও টপসয়েল ও মাটি নিয়ে ট্রাক চলাচল করে। ট্রাকে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই থাকায় রাস্তাটির আয়ুস্কাল অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। যেটুকু ভাল ছিল তাও দিনে দিনে খানাখন্দক এবং কোন স্থানে ডোবার সৃষ্টি হয়ে শুকনো মৌসুমেই চলাচল করা যায় না। বর্ষা মৌসুমে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এলাকাবাসী জানায়, গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার বেহাল অবস্থায় শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজ যাতায়াত ব্যহত হচ্ছে। কৃষক উৎপাদিত পণ্য সহজে হাট-বাজারে নিয়ে যেতে পারছে না। কোনভাবে নিয়ে গেলেও ন্যায্য দাম পায় না। রাস্তা বেহাল হওয়ার সুযোগটি নেয় ফড়িয়া দালাল। শুকনো মৌসুমে ছোট যাহন যেমন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ব্যাটারি চালিত ইজি বাইক কোন রকমে চলাচল করলেও কিছুদিনের মধ্যে যানবাহন অকেজো হয়ে পড়ে। যে কারণে সহজে এই রাস্তার ওপর দিয়ে কোন যানবাহন চলতে চায় না। বেহাল রাস্তার কারণে সামাজিকতাতেও বিঘœ ঘটে। বিয়ে শাদীর বিষয়ে কেউ খোঁজ করতে গেলে প্রথমেই হোঁচট খায় রাস্তা নিয়ে।
×