ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোট খেলাপীর ৫৪ শতাংশ সোনালী ব্যাংকের ৫ শাখায়

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ৮ জুন ২০১৭

মোট খেলাপীর ৫৪ শতাংশ সোনালী ব্যাংকের ৫ শাখায়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ছোট অঙ্কের ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে মামলার মাধ্যমে ঋণ আদায়ে ব্যাংক সফল হলেও বড় অঙ্কের ঋণগ্রহীতাদের কাছে ব্যাংক অসহায় বলে মন্তব্য করেছেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। তিনি বলেন, খেলাপী ঋণ ব্যাংকের একক সমস্যা নয়; এটি জাতীয় সমস্যা। খেলাপী ঋণ কমাতে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা প্রয়োজন। এ জন্য স্বতন্ত্র আদালত গঠন করা দরকার। ব্যাংকটির ১ হাজার ২১০টি শাখার মধ্যে সারাদেশের ৬০০ শাখায় খেলাপী ঋণ ১০ শতাংশেরও কম। কিন্তু ২০টি শাখায় ৮৪ শতাংশ এবং ৫টি শাখায় মোট খেলাপীর ৫৪ শতাংশ রয়েছে। বুধবার মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ব্যাংকের ক্রান্তিলগ্নে গত বছরে আগস্টে আমি যোগদান করেছি। এখানে ১ লাখ কোটি টাকা আমানত রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৩৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ সম্ভব হয়েছে। এই ঋণের ৫০ শতাংশ খেলাপী। অবলোপনের ৭ হাজার কোটি ও পুনঃতফসিল এবং মামলায় আটক ২ হাজার কোটি টাকাসহ ব্যাংকের মোট খেলাপী ঋণ ১৯ হাজার কোটি টাকা। তিনি বলেন, এই খেলাপী ঋণ কমাতে হবে। হলমার্ক কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে এমডি বলেন, গত ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সাল ব্যাংকের জন্য খারাপ সময় গেছে। ওই সময়ে হলমার্ক ও বেসিক ব্যাংকে কেলেঙ্কারি ঘটেছে। হলমার্ক গ্রুপের ক্ষেত্রে ঋণের নামে টাকা লুণ্ঠন হয়েছে। হলমার্কের টাকা আদায়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, হলমার্কের যে পরিমাণ ঋণ আছে সেই পরিমাণে সম্পদ নেই। তার কাছ থেকে পাওনা আদায়ে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে শর্তসাপেক্ষে হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডিকে জামিন দিয়ে কারখানা চালুর সুযোগ দেয়া যেতে পারে। এটি করতে হলে আদালত ও দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুমতি লাগবে। দ্বিতীয়, ওই কোম্পানিতে প্রশাসক বসিয়ে কারখানা চালু করা যেতে পারে। তৃতীয়ত, বর্তমানে যে অবস্থায় আছে এই অবস্থায় রাখা যেতে পারে। বড় ঋণ খেলাপীদের ছাড়ের বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের এমডি বলেন, মাত্র ২টি বড় গ্রুপের খেলাপী ঋণে ছাড় দেয়া হয়েছে। এর আদায় কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। তবে আগের অনিয়মের যেসব খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে সেগুলো খেলাপী হয়ে যাচ্ছে। ২০১২ সালের পর খেলাপী ঋণ বাড়েনি। সেই সময়ের খেলাপী ঋণগুলো এখন হিসেবে আসছে। যার ফলে মার্চে খেলাপী ঋণ বেড়েছে। আরও ৩০০ কোটি টাকা বাড়বে। মতবিনিময়ে অন্যদের মধ্যে ব্যাংকের ডিএমডি তারিকুল ইসলাম চৌধুরী, জিএম সাজেদুর রহমান খান, পরিতোষ কুমার, আতাউর রহমান ও আবুল হাসেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×