ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ২৪ হাজার ৪৮৯ কোটি

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২ জুন ২০১৭

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ২৪ হাজার ৪৮৯  কোটি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বিভিন্ন ভাতার হার বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে সুবিধাভোগীর সংখ্যাও। মুক্তিযোদ্ধারা বিদ্যমান মাথাপিছু সম্মানী ভাতার পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা হারে বছরে দুটি উৎসব ভাতা পাবেন। এছাড়া অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের উন্নত আবাসন সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে সারাদেশে ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে যে বাজেট পেশ করছেন তাতে এসব বলা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ২৪ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণে ২৪ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেটের ৬ শতাংশ। বর্তমান সরকারের শাসনামলে প্রতিটি বাজেটেই সামাজিক নিরাপত্তা খাত গুরুত্ব পেয়ে আসছে। চলতি অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৬-১৭ সালে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১৯ হাজার ২৯১ কোটি টাকা, যা উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেটের ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১৭ হাজার ৮০ কোটি টাকা। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১০ হাজার ফ্ল্যাট বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সরকার, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সরকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য ও স্মৃতি সংরক্ষণ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেয়া এবং মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মের কল্যাণে আমাদের চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখব। পাশাপাশি অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের উন্নত আবাসন সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে সারাদেশে ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনাও আমরা গ্রহণ করেছি। মুহিত বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে গণহত্যা-নির্যাতন, বধ্যভূমি, গণকবর চিহ্নিতকরণ, এ সংক্রান্ত তথ্যভান্ডার তৈরি, প্রদর্শনী এবং প্রকাশনার লক্ষ্যে গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগও আমরা গ্রহণ করব। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সরকারের নানামুখী কার্যক্রম রয়েছে। এসব কার্যক্রমের বিপরীতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট ১ হাজার ১৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি, যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩১ শতাংশ বেশি। প্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি হওয়া তথ্যভান্ডার ব্যবহার করে সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে। নতুন করে প্রতিটা বিভাগীয় শহরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য একটি করে ‘রিসোর্স কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা এবং সম্ভব সকল ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষণের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। বাড়ছে অন্যান্য ভাতার হার ও উপকারভোগীর সংখ্যা প্রস্তাবিত বাজেটে ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে বয়স্ক ভাতাপ্রাপ্তরা জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা করে পাবেন। একই সঙ্গে উপকারভোগীর সংখ্যা বর্তমানের ৩১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৩৫ লাখে উন্নীত করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী জানান, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের ভাতা ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছর থেকে তারা এ হারে ভাতা পাবেন। আর উপকারভোগীর সংখ্যা ১১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১০ ভাগ বাড়িয়ে ১২ লাখ ৬৫ হাজার করা হচ্ছে। হাওড় এলাকার জন্য বিশেষ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী অর্থমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক বন্যা ও দুর্যোগে হাওড় এলাকার মানুষ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় এ এলাকার প্রকৃত দুস্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত ৩ লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল প্রদানের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাসিকভিত্তিতে নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য মোট ৫৭ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দও ইতোমধ্যে প্রদান করা হয়েছে।
×