নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ২০ মে ॥ শেরপুরে বাল্যবিয়ে-যৌতুককে লালকার্ড দেখিয়ে সদর উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে ও যৌতুকমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ওই ইউনিয়নের নিজাম উদ্দিন আহম্মদ মডেল কলেজ মাঠে ওই ইউনিয়নের ১৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষার্থী হাতে বাল্যবিয়ে-যৌতুককে ‘না’ লেখা লালকার্ড একসঙ্গে তুলে ধরে বাল্যবিয়ে-যৌতুকবিরোধী শপথ করেছেন। প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে সমস্বরে তারা বলে ওঠেন ‘১৮ বছরের আগে বিয়ে করব না, কাউকে করতে দেব না। যৌতুক দেব না, নেব না, মানব না। দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করব, নিজেকে গড়ব, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করব।’
লালকার্ডে বাল্যবিয়ে ও নারী-শিশু নির্যাতনবিরোধী হটলাইন নম্বর ‘১০৯’ এবং জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নম্বর দেয়া হয়। যাতে যে কোন বাল্যবিয়ের বন্ধের ক্ষেত্রে ওইসব নাম্বারে কল করে ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করতে পারে। নাগরিক সংগঠন ‘জনউদ্যোগ’ ও পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ যৌথভাবে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওয়ার্ল্ডভিশন শেরপুর এডিপি, আইইডি, রক্ত দিন জীবন বাঁচান, আসল কাজ, বাংলার মুখ এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকম-লী ওই কর্মসূচী বাস্তবায়নে সার্বিক সহায়তা করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার আলী তার ইউনিয়নকে আজ থেকে বাল্যবিয়ে ও যৌতুকমুক্ত ঘোষণা করেন। ওইসময় তিনি বলেন, এখন থেকে পাকুড়িয়া ইউনিয়নে কোন বাল্যবিয়ে, যৌতুকের কোন লেনদেন হবে না। এ সংক্রান্ত কোন সংবাদ পেলে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি কেউ বাল্যবিয়ের সংবাদ মোবাইলে বা সরাসরি তাকে জানালে ওই ব্যক্তিকে ৫শ’ টাকা পুরস্কার দেবেন বলে ঘোষণা করেন। সেইসঙ্গে কোন মেয়ে তার বাল্যবিয়ের সংবাদ জানালে ওই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ নিজে বহন করার ঘোষণাও দেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার রফিকুল হাসান গণি বলেন, ১৮ বছরের আগে তোমরা বিয়ের কথা চিন্তাও করবে না। লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী হও। বর্তমান সরকার মেয়েদের এগিয়ে নিতে নতুন নতুন অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
তোমরা লেখাপড়া করে নিজেদের যোগ্য করে তোলো। তিনি আরও বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ বাল্যবিয়ের জন্য চাপ দিলে আমাদের জানাবে, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। আহ্বায়ক নবারুণ পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় জেলা পরিষদ সদস্য মো. কফিল উদ্দিন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা শামীমা, অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম ঠান্ডু, সাংবাদিক মেরাজ উদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, কার্টুনিস্ট শাহীন বক্তব্য রাখেন।
মাগুরা
নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা থেকে জানান, শনিবার মাগুরায় বাল্যবিয়েকে লাল কার্ড দেখিয়েছে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৭ হাজার শিক্ষার্থী। তারা বাল্যবিয়ে না করার শপথ করেছে।
দুপুরে মাগুরা সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারী সংস্থা সেভ দা উইমেন এ্যান্ড চিলডেন (এসএমডব্লুসি) এই কর্মসূচীর আয়োজন করে। জানা গেছে, সদর উপজেলার তিনটি ইউপিতে বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। স্ব স্ব বিদ্যালয়ে মাঠে অনুষ্ঠিত শপথ গ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা বাল্যবিয়েকে লাল কার্ড প্রদর্শন করে। শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা বাল্যবিয়ে করবে না এবং অন্য কাউকে বাল্যবিয়ে করতে দেবে না।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: