ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন সেই কিশোরীর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৬ মে ২০১৭

বাউফলে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন সেই কিশোরীর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ৫ মে ॥ বাউফলে চৌদ্দ বছরের সেই কিশোরীর বিয়ের অনুষ্ঠান শুক্রবার নির্বিঘেœ মহাধুমধামে সম্পন্ন হয়েছে। বরযাত্রীরা এসেছেন। এসেছেন আমন্ত্রিত লোকজনও। বাড়ির সামনে সুদৃশ্য তোরণ, উঠানে প্যান্ডেল করে চেয়ার-টেবিল সাজিয়ে অতিথিদের খানাপিনা করানো হয়েছে। খাবার তালিকায় ছিল রুইমাছ, মুরগির রোস্ট, গরুর মাংস, ফিরনি, মাম পানি, সেভেনআপ। জুমার নামাজের পর শুরু হয় খানাপিনা। দুপুর আড়াইটার দিকে একটি সিলভার রঙের মাইক্রোবাস ও ১৫-২০ মোটর সাইকেলযোগে আসেন বরের লোকজন। স্থানীয় আমন্ত্রিত অতিথিদের মিলিয়ে তিন পর্বে চলে খানাপিনা। কিশোরীর বাল্যবিয়ের খবরটি উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের জানা থাকলেও বাধা দেয়া হয়নি বরং নির্বিঘেœ সম্পন্ন হয়েছে বরযাত্রী ও অতিথির খানাপিনা। একটি সূত্র জানায়, দৈনিক জনকণ্ঠে শুক্রবার প্রথম পাতায় ‘ইউএনও, ওসি আমন্ত্রিত। বাউফলে ধুমধাম করে বিয়ে হচ্ছে এক কিশোরীর’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে, বর ও কনের পক্ষের টনক নড়ে। শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ। বিয়ের দিন শুক্রবার (৫ মে) সকালে কনের ভাই ও এক ছাত্রলীগ নেতাসহ তিন ব্যক্তি দেখা করেন বাউফলের ইউএনও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের সঙ্গে। এর পর কনেপক্ষ কিছুটা কৌশল অবলম্বন করে সম্পন্ন করেন বিয়ের পর্ব। ওই কিশোরীকে বিয়ের সাজে সাজানো হয়নি। ঘরে এক রকম লুকিয়ে রাখা হয়েছে। অতি কাছের স্বজন ছাড়া তার মুখ অন্য কেউ দেখতে পারেননি। খানাপিনা পর্ব শুরু হওয়ার আগেই অতিথিদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে, কেউ যেন মোবাইল ফোন বা ক্যামেরায় ছবি না তোলেন। কনের পারিবারিক একটি সূত্র জানায়, একমাস আগে বর ও কনের আক্্দ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু বিয়ে রেজিস্ট্রি (কাবিন) করা হয়নি। কনের বয়স কম থাকায় বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়নি। শুক্রবার কনেকে বরের হাতে তুলে দেয়ার কথা ছিল। ওই কিশোরী এ বছর কমলাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে (পরীক্ষার রোল-২২২৫৮২)। জন্ম তারিখ অনুযায়ী বিয়ের দিন পর্যন্ত তার বয়স ছিল ১৪ বছর ৬ মাস ৪ দিন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত নয়টা) ধুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদকাঠী গ্রামে কনের বাবার বাড়িতে বর এসে পৌঁছেনি। শনিবার বরের বাড়ি কেশবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভড়িপাশা গ্রামে বৌভাত হওয়ার কথা রয়েছে। বর ভোলা সদর উপজেলায় গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী। এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, খবর পেয়ে আমি কনের বড় ভাইকে খবর দিয়ে এনেছিলাম। তাকে বলে দিয়েছি, যেহেতু বর সরকারী চাকরি করে তাই বাল্যবিয়ে করলে তার সমস্যা হবে। পরে খবর নিয়ে জেনেছি, বরকে বরিশালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এর পরও আমি ওসিকে বলেছি ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠাতে। তবে তারা আমাকে এখন পর্যন্ত কিছুই জানাননি। বাউফল থানার ওসি আযম খান ফারুকী বলেন, আমি কালিশুরী পুলিশ ক্যাম্পের এসআই সুরেশকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলাম। তিনি আমাকে জানিয়েছেন বিয়েবাড়িতে কোন অনুষ্ঠানাদি হয়নি।
×